Just In
- 50 min ago প্রচণ্ড গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে খান সুপারফুড চিয়া সিড!
- 2 hrs ago কাঠফাটা গরমে শরীরে জলের ঘাটতি পূরণ করবে এই ফলগুলি!
- 4 hrs ago নতুন কাজে সাফল্য বৃষ ও কর্কটের, ৫ রাশির জন্য শুভ আজকের দিন, জানতে দেখুন রাশিফল
- 21 hrs ago অতিরিক্ত দই, বিস্কুট খাচ্ছেন? আপনার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, সতর্ক থাকুন
যুধিষ্ঠির কেন কুকুরকে ছাড়া স্বর্গে যেতে চাননি? রইল তার আসল কারণ
মহাভারত, একটি ধর্মীয় পাঠ্য বা মহাকাব্য এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জীবনে এর তাৎপর্য বিশাল। এই মহাকাব্যতে পঞ্চ পাণ্ডব বা পাঁচ ভাই বেশ বিখ্যাত এবং তাঁরা নম্র ও সম্ভ্রান্ত। পাণ্ডবদের মধ্যে যুধিষ্ঠির হলেন বড় ভাই এবং তিনি ছিলেন মহৎ চিন্তাধারার ব্যক্তি। ঋষি ব্যাস এবং ভগবান কৃষ্ণের মতে যুধিষ্ঠির ছিলেন, একজন শক্তিশালী রাজা, কিন্তু তাঁর নম্রতা ছিল সাধারণ মানুষের মতো।
পাণ্ডবরা কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে জয়ের পরে বহুবছর ইন্দ্রপ্রস্থ ও হস্তিনাপুর শাসন করেছিলেন। একদিন ঋষি বেদব্যাস পাঁচ ভাইকে বলেন, একমাত্র উত্তরাধিকার পরীক্ষিতের হাতে রাজ্য হস্তান্তর করে তাঁদের প্রস্থান করতে। দ্রৌপদী ও পাণ্ডবগণ এতে সম্মত হন এবং সেইমতো, পরীক্ষিতের রাজ্যাভিষেকের পরে পাণ্ডবগণ ও দ্রৌপদী পার্থিব ইচ্ছা ও প্রলোভন থেকে দূরে সরে মহাপ্রস্থানের জন্য যাত্রা করেন।
বলা হয় যে, যাত্রাপথে যুধিষ্ঠিরই সকলকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তাঁর পরে ছিলেন অন্য চার ভাই, ভীম, অর্জুন, নকুল ও সহদেব এবং একদম শেষে ছিলেন দ্রৌপদি। বিশ্বাস করা হয় যে, তাঁদের যাত্রাপথে একটি কুকুর তাঁদের পিছু নিয়েছিল।
পথিমধ্যে একে একে চার ভাই ও দ্রৌপদীর পতন ঘটতে থাকে। দ্রৌপদী যখন মৃত্যুবরণ করেন, তখন ভীম তাঁকে হারানোর শোকে যুধিষ্ঠিরকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, দ্রৌপদী কেন মারা গেলেন? এতে যুধিষ্ঠির জবাব দিয়েছিলেন, "অর্জুনের সঙ্গে তাঁর অত্যধিক অনুষঙ্গ ছিল এবং এটিই দ্রৌপদীর ব্যর্থতা ছিল।"
আরও পড়ুন : রামচন্দ্র কেন সীতাকে অগ্নিপরীক্ষা দিতে বলেছিলেন? পুরাণ মতে জানুন এর আসল কারণ
কিছুক্ষণ পর সহদেব মারা যান এবং দু: খিত ভীম যুধিষ্ঠিরকে তাঁর ভাইয়ের মৃত্যুর কারণ জিজ্ঞাসা করেন, উত্তরে যুধিষ্ঠির বলেন, "তাঁর বুদ্ধিমত্তার অহংকার তাঁর ব্যর্থতা ছিল।" এরপর নকুল মারা যাওয়ায় ভীম এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে, যুধিষ্ঠির বলেন, "নকুল নিজের সুন্দর চেহারার প্রশংসা করতেন। এটিই ছিল তাঁর ব্যর্থতা।"
এরপরেই মৃত্যুবরণ করেন অর্জুন। শোকার্ত ভীম অর্জুনের মৃত্যুর কারণ জিজ্ঞাসা করলে যুধিষ্ঠির বলেন, "তিনি ছিলেন উজ্জ্বল, কিন্তু গর্বিত এবং অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী। এটি ছিল অর্জুনের ব্যর্থতা।"
এবার এল ভীমের পালা। তিনি ছিলেন অত্যন্ত ক্লান্ত। মৃত্যুর আগে ভীম যুধিষ্ঠিরকে জিজ্ঞাসা করলেন, "আমার ব্যর্থতা কী ছিল?" এর উত্তরে যুধিষ্ঠির বলেন, "তুমি নিজের শক্তি নিয়ে গর্বিত ছিলে এবং ক্ষুধার্ত লোকেদের নিয়ে উদ্বিগ্ন না হয়ে অতিরিক্ত পরিমাণে খেয়েছিলে। এটিই ছিল তোমার ব্যর্থতা।"
যুধিষ্ঠির তাঁর কাছের এবং প্রিয়জনদের হারিয়েও যাত্রা চালিয়ে যান। এইসময় দেবরাজ ইন্দ্র তাঁর রথে চেপে স্বর্গ থেকে নেমে আসেন এবং যুধিষ্ঠিরকে তাঁর সঙ্গে যেতে বলেন। কিন্তু, যুধিষ্ঠির বলেছিলেন, "দ্রৌপদী এবং আমার ভাইদের ছাড়া আমি কীভাবে স্বর্গে যেতে পারি?" এ সম্পর্কে ইন্দ্র বলেন, "তাঁরা মৃত্যুর পর সকলেই ইতিমধ্যে স্বর্গে চলে গেছেন। এখন সময় এসেছে আপনার স্বর্গে ওঠার।"
আরও পড়ুন : ভারতে কোন গাছগুলিকে পবিত্র বলে মনে করা হয়? রইল গাছের তালিকা ও তাৎপর্য
এরপর, যুধিষ্ঠির স্বর্গে যেতে রাজি হন এবং তাঁর সঙ্গে কুকুরটিকেও নিয়ে যেতে চান। কিন্তু, ইন্দ্র যুধিষ্ঠিরকে বলেন যে, তিনি কুকুরসহ স্বর্গে প্রবেশ করতে পারবেন না। কিন্তু, যুধিষ্ঠির ছিলেন ধর্মের মানুষ এবং তাই তিনি ইন্দ্রকে বলেন যে, ভক্তকে ছাড়া স্বর্গে প্রবেশ করলে, তা পাপ হবে। তাই, তিনি ভক্তকে ত্যাগ করবেন না। এইশুনে ধর্মদেবতা কুকুরের রূপ পরিত্যাগ করে নিজ রুপ ধরে যুধিষ্ঠিরকে বলেন যে, 'যুধিষ্ঠির তোমার সমান স্বর্গে কেউ নেই।'
এরপর, যুধিষ্ঠির স্বর্গে প্রবেশ করে তাঁর ভাইদের দেখতে চাইলে দেবদূতরা তাঁকে নরকে নিয়ে যান। সেখানে ভাইদের দেখতে পেয়ে যুধিষ্ঠির স্বর্গে ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। এইসময়, ইন্দ্র তাঁকে বলেন যে, যুধিষ্ঠির অশ্বত্থামার মৃত্যু সংবাদ দিয়ে দ্রোণাচার্যের সঙ্গে প্রতারণা করেছিলেন বলে, তাঁকে কৌশলে নরক দর্শন করানো হয়েছে। এরপর যুধিষ্ঠির পাণ্ডবদের নিয়ে স্বর্গে প্রবেশ করেন।