Just In
- 3 hrs ago কোন ডাবে বেশি জল, বাইরে থেকে দেখে বুঝবেন কী ভাবে?
- 6 hrs ago গাধার দুধের আশ্চর্যজনক স্বাস্থ্য উপকারিতা, জানলে চমকে উঠবেন আপনিও
- 8 hrs ago রুক্ষ-শুষ্ক চুল নিয়ে চিন্তা? জেনে নিন চুলের যত্নে গ্লিসারিনের অবিশ্বাস্য় ভূমিকা
- 10 hrs ago মেষ রাশিতে অস্ত যাবে বুধ, কাজে বাধা-অসাফল্য়, কোন কোন রাশির জন্য বিপদ?
রামচন্দ্র কেন সীতাকে অগ্নিপরীক্ষা দিতে বলেছিলেন? জানুন এর আসল কারণ
হিন্দুধর্মের সবথেকে প্রাচীন পবিত্র গ্রন্থ বা মহাকাব্য হিসেবে পরিচিত 'রামায়ণ'। রামায়ণ ৭টি কাণ্ড ও ৫০০টি অধ্যায়ে বিভক্ত এবং চব্বিশ হাজার শ্লোকের সমষ্টি। এই কাব্যের মূল বিষয় হল ভগবান বিষ্ণুর অবতার রাম ও সীতার জীবনকাহিনী। বিষয়গতভাবে, রামায়ণ-উপাখ্যানে বর্ণিত হয়েছে মানব অস্তিত্বের নানান দিক এবং প্রাচীন ভারতের ধর্মচেতনা। বাল্মিকি দ্বারা রচিত 'রামায়ণ' প্রথমে সংস্কৃত ভাষায় এবং পরে জনসাধারণের জন্য অন্যান্য ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছিল।
রামায়ণ কেবল অযোধ্যার রাজপুত্র নিয়ে নয় বরং একজন আদর্শ রাজা, আদর্শ পুত্র, আদর্শ কন্যা, আদর্শ ভাই-কে নিয়ে গঠিত। এই সমস্ত আদর্শ সম্পর্কের মধ্যে আদর্শ স্ত্রী সীতার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সীতার ভূমিকা তখনই আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, যখন তিনি তাঁর স্বামীর সঙ্গে নির্বাসনে যেতে চেয়েছিলেন, যখন তিনি তাঁর পবিত্রতার প্রমাণ দেওয়ার জন্য আগুনের মধ্য দিয়ে হেঁটেছিলেন। এই বিখ্যাত পর্বটিই 'অগ্নিপরীক্ষা' নামে পরিচিত।
তবে এখনও পর্যন্ত অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে, সীতা ছিলেন পৃথিবীর সবচেয়ে ধার্মিক মহিলা, একথা জানার পরেও কেন ভগবান রাম সীতাকে অগ্নিপরীক্ষা দিতে বলেছিলেন? স্বামীর প্রতি তাঁর অটুট ভক্তির পরেও কেন একজন মহিলাকে সতীত্বের পরীক্ষা দিতে হবে? আজ আমরা এই বিষয়গুলি নিয়েই বলব।
সীতা ছিলেন দেবী লক্ষ্মীর অবতার। বিশ্বাস করা হয় যে, সীতা আগে থেকেই জানতেন যে, লঙ্কার রাজা রাবণ তাঁকে অপহরণ করবে। তিনি আরও জানতেন যে, তাঁর স্বামী ভগবান রাম এবং তাঁর ভাই লক্ষ্মণ সময়মতো পৌঁছাতে এবং তাঁকে বাঁচাতে সক্ষম হবেন না।
তাই, সীতা নিজেকে রক্ষা করার জন্য বনবাসের আগেই অগ্নিদেবের কাছে প্রার্থনা করেছিলেন। অগ্নিশ্বর তাঁর ভক্তিতে অনুপ্রাণিত হয়ে মায়া সীতা নির্মাণ করেন এবং আসল সীতাকে তাঁর শিখার মধ্যে নিরাপদে রেখেছিলেন। আর, এই মায়া সীতাকেই রাবণ জোরপূর্বক হরণ করেছিলেন। যাঁকে লঙ্কায় অশোক ভাটিকায় রাখা হয়েছিল, তিনি আসল সীতা নন, মায়া সীতা ছিলেন।
আরও পড়ুন : কুম্ভকর্ণ সম্পর্কে এই তথ্যগুলি কি আপনি জানেন?
ত্রেতা যুগে বিশ্বাস করা হত, ধার্মিক ব্যক্তির সঙ্গে কোনও খারাপ কিছু হয় না এবং বিশ্বাস করা হয়েছিল যে, রাবণ যদি সীতাকে স্পর্শ করেন তবে তিনি তাঁর সতীত্ব হারাবেন। ভগবান রাম এসব কিছু জানতেন, কিন্তু যেহেতু তিনি মানুষ হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, তাই তিনি কর্ম দ্বারা আবদ্ধ ছিলেন। স্ত্রীকে বাঁচানোর জন্য তাঁর যা করা উচিত ছিল তিনি তা সবই করেছিলেন। সর্বোপরি, লড়াইটি ছিল ধার্মিকতার জন্য, অহঙ্কারকে হত্যা করার জন্য এবং বিশ্বে বৃহত্তর ধর্ম প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে।
ভগবান রাম লঙ্কার রাজা রাবণের সঙ্গে যুদ্ধ করে রাবণকে পরাজিত করেন এবং তাঁর স্ত্রী সীতাকে রক্ষা করেন, যা প্রকৃতপক্ষে সীতার রূপের এক মায়া ছিল। কিন্তু, যখন প্রজাদের মধ্যে সীতার সতীত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, তখন রাম সীতাকে অগ্নিপরীক্ষার মাধ্যমে নিজের পবিত্রতার প্রমাণ দিতে বলেন।
ভগবান রাম এবং দেবী সীতা দুজনেই সত্য জানতেন। লঙ্কা থেকে ফিরে রামচন্দ্র যে সীতাকে অগ্নিপরীক্ষার নির্দেশ দেন, তিনি ছিলেন অগ্নির দ্বারা সৃষ্ট মায়া সীতা। ফলে, অগ্নিতে তাঁর কোনও ক্ষতি হতে পারে না। তাই, অগ্নিপরীক্ষার সময় মায়া সীতা অগ্নিতেই মিশে যান এবং আসল সীতাকে ফেরত পাঠানো হয়।