Just In
স্তন্যদায়ী মায়েরা ভুলেও এই ফলগুলি খাবেন না, হতে পারে মারাত্মক বিপদ!
মাতৃদুগ্ধ খুবই পুষ্টিকর এবং শিশুর জন্মের প্রথম ছয় মাসে শক্তি ও পুষ্টির সর্বোত্তম উৎস এটি। তাই জন্মের পর সমস্ত শিশুদেরই কমপক্ষে ছয় মাস পর্যন্ত মাতৃদুগ্ধ পান করানো উচিত। তবে এই সময় স্তন্যদায়ী মায়েদেরও কঠোর ডায়েট মেনে চলতে হয়। কারণ মা যা খাবার খান, তার উপরই নবজাতকের স্বাস্থ্য খারাপ-ভাল থাকা নির্ভর করে।
আমরা সকলেই জানি যে, বিভিন্ন ফল আমাদের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকারি। তবে কিছু ফল আছে, যা স্তন্যদানকারী মা ও শিশুর জন্য খুবই উপকারি। আবার এমন কিছু ফল আছে, যা মা এবং নবজাতকের শরীরে ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলতে পারে। তাহলে দেখে নেওয়া যাক, স্তন্যদানের সময়কালে খাদ্যতালিকায় কোন কোন ফল অন্তর্ভুক্ত করবেন এবং কোন কোন ফল খাওয়া এড়িয়ে যাবেন।
স্তন্যদানকারী মায়েদের কোন কোন ফল খাওয়া উচিত
১) সবুজ পেঁপে
সবুজ পেঁপে, স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য অত্যন্ত উপকারি। সবুজ পেঁপে স্তন্যদুগ্ধের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারে। তাছাড়া, সবুজ পেঁপে শরীরকে হাইড্রেটেড থাকতেও সহায়তা করে, যা স্তন্যদানের সময় অত্যন্ত আবশ্যক। সবুজ পেঁপে নন-অ্যাসিডিক ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এবং এটি প্রাকৃতিক রেচক হিসেবেও কাজ করে। যার ফলে হজম ক্ষমতা শক্তিশালী হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও দূর হয়।
২) কলা
কলা হজমে সাহায্য করে এবং এটি প্রাকৃতিক রেচক হিসেবে কাজ করে। কলা ফাইবারের দুর্দান্ত উৎস, যা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা প্রতিরোধ করতে অত্যন্ত সহায়ক। তাছাড়া, কলা পটাশিয়াম সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি স্তন্যদায়ী মায়েদের ক্ষেত্রে একটি আদর্শ ফল। গর্ভাবস্থা এবং প্রসবের পরে পটাশিয়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
৩) অ্যাভোকাডো
অ্যাভোকাডো মা এবং শিশু, উভয়ের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেই অত্যন্ত উপকারি। কলার মতো, অ্যাভোকাডোও পটাসিয়াম সমৃদ্ধ ফল। অ্যাভোকাডো স্তন্যদানকারী মায়েরা খেলে, শিশুর দৃষ্টিশক্তি, চুলের মান, হার্টের স্বাস্থ্য এবং হজমের বিকাশে সহায়তা করে।
৪) ফুটি
ফুটি ভিটামিন-কে, ভিটামিন-বি, ফাইবার, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, নিয়াসিন, থিয়ামিন এবং ফোলেট সমৃদ্ধ। এই ফলটি শরীরকে হাইড্রেট রাখতে সহায়তা করে। ফুটিতে জলের মাত্রা বেশি থাকায়, এটি স্তন্যদানের সময় শরীরে তরলের ভারসাম্যতা বজায় রাখতেও সহায়তা করে।
৫) সবেদা
সবেদা উচ্চ ক্যালোরি যুক্ত। এই ফলটিও স্তন্যদানকারী মায়েদের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকারি। স্তন্যদানের কারণে যতটা ক্যালেরির খরচ হয়, তা সবেদার সেবন পূরণ করতে পারে। তাছাড়া সবেদা ফাইবার, ভিটামিন এবং বিভিন্ন খনিজের উৎস। সবেদাতে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যও বর্তমান।
৬) ডুমুর
ডুমুর ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং পটাসিয়ামের মতো অনেক খনিজের দুর্দান্ত উৎস। তাছাড়া ডুমুর ফাইবার, ভিটামিন-কে এবং ভিটামিন-বি৬ সমৃদ্ধ হওয়ায়, এটি স্তন্যদানকারী মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকারি।
স্তন্যদানকারী মায়েদের এই ফলগুলো খাওয়া উচিত নয়
১) সাইট্রাস ফল
সাইট্রাস ফল, অনেক সময় বুকের দুধে একটি তীব্র স্বাদ এনে দেয়। এই স্বাদের কারণে অনেক সময়ই শিশুরা স্তন্যপান করতে অস্বীকার করে। তাছাড়া, শিশুর শরীরে অস্বস্তি হতে পারে বা বমি করার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। সাইট্রাস ফলে থাকা অম্লীয় যৌগ, শিশুদের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্ট-এও (GI) জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে। তাই স্তন্যদায়ী মায়েদের সাইট্রাস ফল, যেমন - লেবু, কিউই, স্ট্রবেরি, আনারস, কমলালেবু এবং আঙুরের মতো ফল খাওয়া এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
২) চেরি
সাইট্রাস ফল ছাড়াও চেরি, প্রুনস এবং বেরি জাতীয় ফল স্তন্যদায়ী মা এবং শিশুর স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক। চেরির কারণে কখনও কখনও নবজাতকের পেটে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে। কারণ শিশুদের সদ্য বিকশিত পাচনতন্ত্র, তুলনামূলকভাবে অনেকটাই দুর্বল প্রকৃতির হয়। যার ফলে খুব সহজেই বদহজম, গ্যাস, অম্বলের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।