Just In
- 56 min ago প্রচণ্ড গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে খান সুপারফুড চিয়া সিড!
- 3 hrs ago কাঠফাটা গরমে শরীরে জলের ঘাটতি পূরণ করবে এই ফলগুলি!
- 4 hrs ago নতুন কাজে সাফল্য বৃষ ও কর্কটের, ৫ রাশির জন্য শুভ আজকের দিন, জানতে দেখুন রাশিফল
- 21 hrs ago অতিরিক্ত দই, বিস্কুট খাচ্ছেন? আপনার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, সতর্ক থাকুন
চলে গেলেন ‘কেদার’, ৬১ তেই থমকে গেল জীবন
"জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে", এই কথাটি কিন্তু চিরকালের সত্য। জীবনটা সত্যিই খুবই ক্ষণস্থায়ী। জীবনের প্রতিটি ধাপ বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাত, আনন্দের মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত হলেও, শেষটা যে কখন থমকে যায় তা কিন্তু কেউ অনুভব করতে পারে না। হ্যাঁ তিনিও পারেননি। বসন্তের দোলের রঙে নিজেদের রাঙিয়ে তুলতে গোটা শহর প্রস্তুত হলেও, 'দাদার কীর্তি'-এর কেদারের জীবনে মাখা হল না রং, জীবনের ইতি টেনে দিল এই বসন্তই। বাড়ি ফেরা হলনা আর তাঁর।
রাত তখন ৩ টে ৩৫ মিনিট। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মুম্বইয়ের এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় বর্ষীয়ান অভিনেতা ও প্রাক্তন সাংসদ তাপস পালের। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা শিল্পী মহল।
আরও পড়ুন : চলে গেলেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, শোকস্তব্ধ দেশবাসী
১৯৫৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর, হুগলির চন্দননগরে জন্ম হয় তাপস পালের। ছোট থেকেই অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ। তরুণ মজুমদারের হাত ধরেই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে এগিয়ে আসেন বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে। মাত্র ২২ বছর বয়সে মুক্তি পায় তাঁর প্রথম ছবি 'দাদার কীর্তি'। সেই থেকেই শুরু, এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়েছেন দর্শকদের।
তিনি ছিলেন বাংলা সিনে জগতের পাশের বাড়ির ছেলে। তাঁর অভিনয়ের দক্ষতা তাঁকে জায়গা করে দিয়েছিল বাঙালির ঘরে ঘরে। তাই, আজও হয়ত বাঙালি দর্শক বারবার সেই 'দাদার কীর্তি'-র তাপসকে মনে করেন। তথাকথিত 'হিরোইজম'-কে ভেঙে চরিত্রের মধ্যে স্বাভাবিক ও সারল্যতাই ছিল তাপস পালের ইউ.এস.পি। যে কারণে, তৎকালীন বাংলায় তাঁর একের পর এক ছবি সাফল্যের শিখরে পৌঁছে গিয়েছিল। 'দাদার কীর্তি', 'সাহেব', 'উত্তরা', 'মন্দ মেয়ের উপাখ্যান' 'অনুরাগের ছোঁয়া', 'পারাবত প্রিয়া', 'ভালোবাসা ভালোবাসা', 'গুরুদক্ষিণা' ইত্যাদি ছবিতে তাঁর অসামান্য অভিনয় দর্শকের মন কেড়ে নিয়েছিল। তিনি হয়ে উঠেছিলেন অভিনেতা থেকে স্টার। 'সাহেব' ছবিতে অভিনয়ের জন্য পান ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কারও।
তাঁর সহজ অভিনয় তাঁকে নিয়ে নিয়ে যায় মুম্বই। মাধুরী দীক্ষিত-এর সঙ্গে ১৯৮৪ সালে হীরেন নাগের ছবিতে কাজ করেন তিনি। পাশাপাশি রাখি গুলজারের সঙ্গেও অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। পরবর্তীকালে তরুণ মজুমদারের ডাকে মুম্বই থেকে পাড়ি দেন কলকাতা। হয়তো বাংলার টানেই তাঁকে ফিরতে হয়েছিল সেই বাংলায়। উত্থান হয় দেবশ্রী-তাপস জুটি। আশি থেকে নব্বই দশকের বাংলা চলচ্চিত্রের অভিমান, অনুরাগ, লড়াই ও প্রেমের মিশেলই তেরি করেছিল স্টার তাপস পাল-কে।
আরও পড়ুন : হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন ভারতের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ
শতাব্দী, ইন্দ্রাণী হালদার ও রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অভিনেত্রীদের সঙ্গেও পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছেন তিনি। তাঁর শেষ অভিনয় দেবাদিত্যের 'আটটা আটের বনগাঁ লোকাল' ছবিতে।
জীবনের শেষ অধ্যায়ে বহু আঘাত পেয়েছেন তিনি। রুপোলি পর্দার নায়ক থেকে সংসদের গণ্ডিতে পা রাখেন তাপস পাল। এরপর নানান বিতর্কিত মন্তব্যে জড়িয়ে পড়েন, নাম জড়ায় চিটফান্ড কাণ্ডে। গ্রেপ্তারও হন তিনি। ২০১৮ সালে জামিন পাওয়ার পর অভিনয়ের চেনা জগতে ফিরতে চাইলেও অসুস্থতা তাঁকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যায় সবার থেকে। ইচ্ছা থাকলেও আর ফেরা হল না সিনেমায়। জীবনের ইতি হল ৬১ বছর বয়সেই। ভালো থেকো 'কেদার'।