Just In
Durga Puja : জানেন কি মা দুর্গার দশ হাতের দশটি অস্ত্রের তাৎপর্য?
"দুর্গে দুর্গে দুর্গতিনাশিনী,মহিষাসুরমর্দিনী জয় মা দুর্গে।।"- দুর্গা, অর্থাৎ, 'যিনি দুর্গতি বা সংকট থেকে রক্ষা করেন'। যিনি মহিষাসুরকে বধ করে জগৎকে রক্ষা করেছিলেন, হয়েছিলেন 'মহিষাসুরমর্দিনী'। হিন্দু মতে, তিনি মহাশক্তির একটি উগ্র রূপ। বাংলায় প্রবাদ আছে, 'যে রাঁধে, সে চুলও বাঁধে'। কথায় আছে, মা দুর্গাও সাধারণ ঘরের মেয়ের মতো তাঁর পুরো পরিবার সামলানোর সঙ্গে গোটা জগৎ-ও সামলান।
চণ্ডিকা, যোগমায়া, অম্বিকা, বৈষ্ণবী, মহিষাসুরসংহারিণী নারায়নী, মহামায়া, কাত্যায়নী ইত্যাদি বিভিন্ন নামে পরিচিত তিনি। তাঁর অষ্টাদশভূজা, ষোড়শভূজা, দশভূজা, অষ্টভূজা ও চতুর্ভূজা মূর্তি দেখা যায়। তবে দশভূজা রূপটিই বেশি জনপ্রিয়। মা দুর্গার বাহন সিংহ । মহিষাসুরমর্দিনী-মূর্তিতে তাঁকে মহিষাসুর নামক এক অসুরকে বধরতা অবস্থায় দেখা যায়।
আরও পড়ুন : দুর্গাপূজা : দেবীর আগমন ও গমন কীসে, পঞ্জিকা ছাড়াই বলতে পারবেন আপনি!
মা দুর্গার দশভুজা রুপে দশটি হাত থাকে। দশ হাতে থাকে দশটি অস্ত্র। কথিত আছে, এই সবকটি অস্ত্রের সাহায্যেই নাকি সমগ্র অসুরকূলকে নিধন করেছিলেন মা দুর্গা। শুধু তাই নয়, মায়ের দশ হাতের দশটি অস্ত্রই আলাদা আলাদা অর্থ বহন করে। কোন অস্ত্র কি অর্থ বহন করে? কেন এই অস্ত্রগুলি থাকে মায়ের হাতে? আসুন মা দুর্গার দশটি অস্ত্র সম্পর্কে জেনে নিই-
ক) শঙ্খ
শঙ্খ হল সৃষ্টির প্রতীক। পৌরাণিক মতে, শঙ্খের শব্দেই প্রাণের সৃষ্টি হয়েছে জীবজগতে। বিশ্বাস করা হয়, মা দুর্গাই হলেন সমস্ত পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা। তাই মা দুর্গার হাতে থাকে শঙ্খ। মহামায়ার হাতে এটি তুলে দিয়েছিলেন বরুণ দেব।
খ) চক্র
দেবী দুর্গার হাতে চক্র থাকার অর্থ হল, সমস্ত সৃষ্টির কেন্দ্রে রয়েছেন তিনি। আর, তাঁকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়ে চলেছে সমস্ত বিশ্ব। চক্র দিয়েছিলেন ভগবান বিষ্ণু৷
গ) দণ্ড বা গদা
মা দুর্গাকে গদা দিয়েছিলেন যমরাজ। গদা হল আনুগত্য, ভালোবাসা, এবং ভক্তির প্রতীক।
ঘ) পদ্ম
পাঁকে জন্মানো সত্ত্বেও পদ্মের রূপ মুগ্ধ করে সকলকে। তাই মায়ের হাতে পদ্ম থাকার অর্থ হল, তিনি অন্ধকারের মধ্যেই আলোর আবির্ভাব ঘটান। দেবী দুর্গার হাতে ভগবান ব্রহ্মা পদ্ম তুলে দেন ৷
ঙ) খড়্গ বা তলোয়ার
খড়্গ বা তলোয়ারের ধার হল মগজাস্ত্রের বুদ্ধির ধার। আর এই ধার দিয়েই যেন সমাজের সমস্ত বৈষম্য ও অশুভকে জয় করতে পারে মানুষ। ভগবান কালা মা দুর্গা-কে এই অস্ত্র দিয়েছিলেন।
চ) তীর-ধনুক
তীর-ধনুক একে অপরের পরিপূরক। ধনুর টঙ্কারে প্রকাশিত শক্তির ভারকে বহন করে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হানে তীর। অর্থাৎ, উভয়ই ইতিবাচক শক্তির প্রতিক ৷ মানবদেহে সেই শক্তির সঞ্চার করতেই মা দুর্গা নিজের হাতে তীর-ধনুক বহন করেন। মায়ের হাতে ধনুক ও তির দিয়েছিলেন বায়ু ৷
ছ) ত্রিশূল
ত্রিশূলের তিনটি তীক্ষ্ণ ফলার আলাদা আলাদা অর্থ রয়েছে। মানুষ তিনটি গুণের সমন্বয়ে তৈরি। যেগুলি হল- তমঃ, রজঃ, এবং সত্ত্ব। মহামায়ার হাতে ত্রিশূল তুলে দিয়েছিলেন মহাদেব৷
জ) বজ্র বা অশনি
মা দুর্গার হাতের অশনি, দৃঢ়তা এবং সংহতির প্রতীক। এই দুই গুণের মাধ্যমেই জীবনে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছতে সক্ষম হন মানুষ। দেবরাজ ইন্দ্র দিয়েছিলেন বজ্র৷
ঝ) সাপ
চেতনার নিম্নস্তর থেকে উচ্চস্তরে প্রবেশ এবং বিশুদ্ধ চেতনার চিহ্ন এই সাপ। শেষ নাগ দিয়েছিলেন নাগহার৷
ঞ) অগ্নি
অগ্নি জ্ঞান এবং বিদ্যার প্রতীক। অগ্নিদেব দিয়েছিলেন এই অস্ত্র৷