Just In
- 41 min ago কোন ডাবে বেশি জল, বাইরে থেকে দেখে বুঝবেন কী ভাবে?
- 3 hrs ago গাধার দুধের আশ্চর্যজনক স্বাস্থ্য উপকারিতা, জানলে চমকে উঠবেন আপনিও
- 5 hrs ago রুক্ষ-শুষ্ক চুল নিয়ে চিন্তা? জেনে নিন চুলের যত্নে গ্লিসারিনের অবিশ্বাস্য় ভূমিকা
- 7 hrs ago মেষ রাশিতে অস্ত যাবে বুধ, কাজে বাধা-অসাফল্য়, কোন কোন রাশির জন্য বিপদ?
প্রয়াত হলেন ভারতের প্রথম বাঙালী রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, দেখুন তাঁর জীবনের কিছু অজানা তথ্য
নিজের শারীরিক অবস্থার কথা নিজেই ট্যুইট করে জানিয়েছিলেন, উল্লেখ করেছিলেন করোনা সংক্রমণের কথাও। ৯-৩১ অগাষ্ট টানা এতদিনের রুদ্ধশ্বাস লড়াই অবশেষে থমকে গেল। আজ, ৩১ অগাষ্ট সোমবার বিকেলে প্রয়াত হলেন দেশের প্রাক্তন বাঙালী রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এল গোটা ভারতজুড়ে।
সোমবার বিকেলে ছেলে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় টুইট করে তাঁর মৃত্যুর খবর প্রকাশ করেন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ৯ অগাষ্ট বাড়ির বাথরুমে পড়ে মাথায় চোট পান প্রণব মুখোপাধ্যায়। ভর্তি হন হাসপাতালে। করোনার পরীক্ষা হলে রিপোর্ট পজিটিভ আসে, অন্যদিকে এম.আর.আই স্ক্যানে দেখা যায় তাঁর মাথায় রক্তজমাট বেঁধে রয়েছে। করা হয় অস্ত্রোপচার। কিন্তু এরপরেও অবস্থায় উন্নতি হয়নি তাঁর। গভীর কোমায় চলে গিয়েছিলেন তিনি। দেওয়া হয় ভেন্টিলেটর সাপোর্ট। এছাড়াও, দীর্ঘদিন ধরেই তিনি ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। এতকিছুর ধাক্কা সামলাতে পারলেন না তিনি। অবশেষে ২৩ দিনের মাথায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন রাইসিনা হিলে ওঠা একমাত্র বাঙালী প্রণব মুখোপাধ্যায়। দেখে নিন তাঁর জীবনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
১) ১৯৩৫ সালের ১১ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলায় প্রণব মুখার্জী-র জন্ম। তাঁর পিতার নাম কামদাকিঙ্কর মুখার্জী ও মাতার নাম রাজলক্ষ্মী দেবী। তাঁর পিতা ছিলেন বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী।
২) তিনি বীরভূমের সিউড়ির বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র ছিলেন। পরে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও ইতিহাস এবং এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন।
৩) খুব কম লোকই জানেন যে, তিনি কলকাতায় ডেপুটি অ্যাকাউন্ট্যান্ট-জেনারেলের অফিসে উচ্চ-বিভাগের ক্লার্ক হিসেবে কাজ করেছিলেন।
৪) ১৯৬৩ সালে তিনি কলকাতার বিদ্যানগর কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের লেকচারার ছিলেন। এছাড়াও, রাজনীতিতে নামার আগে তিনি কিছু সময় সাংবাদিক হিসেবেও কাজ করেছেন।
৫) ১৯৬৯ সালে প্রণব মুখোপাধ্যায় রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। ১৯৬৯ সালে মেদিনীপুর বাই ইলেকশনে প্রচারের জোরে প্রণব মুখোপাধ্যায় একা হাতে জিতিয়ে দিয়েছিলেন ভি কে কৃষ্ণ মেননকে। তারপরই ইন্দিরা গান্ধীর নজরে আসেন প্রণব মুখোপাধ্যায়।
৬) ইন্দিরা গান্ধী তাঁর প্রতিভা দেখে মুগ্ধ হন। কার্যত ইন্দিরা গান্ধীর হাত ধরেই জাতীয় কংগ্রেসে প্রবেশ তাঁর।
৭) ১৯৬৯ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়।
৮) তাঁর রাজনৈতিক জীবনের প্রথম দিকে, তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন এবং ১৯৭৩ সালে ইন্দিরা গান্ধি ক্যাবিনেটের কেন্দ্রীয় ডেপুটি শিল্প উন্নয়ন মন্ত্রী ছিলেন।
৯) ১৯৭৯ সালে রাজ্যসভায় ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের ডেপুটি নেতা হন প্রণব মুখোপাধ্যায়। ১৯৮০ সালে জাতীয় কংগ্রেসের রাজ্যসভার প্রধান নেতা হন।
১০) তবে ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পরে, দলের সদস্যরা প্রণব মুখার্জিকে সরিয়ে দেন। কোণঠাসা হয়ে পড়েন তিনি। তিনি রাজীব গান্ধীর থেকে অনেক অভিজ্ঞ হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি, দায়িত্ব নিয়েছিলেন ইন্দিরা পুত্র।
আরও পড়ুন : হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন ভারতের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ
১১) রাজীব গান্ধীর আমলে ক্যাবিনেট থেকে বাদ পড়েন তিনি, তাঁকে পাঠানো হয় পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সামলাতে।
১২) ১৯৮৬ সালে প্রণব মুখোপাধ্যায় রাষ্ট্রীয় সমাজবাদী কংগ্রেস নামে একটি দল প্রতিষ্ঠা করেন। এটি পশ্চিমবঙ্গেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু তিন বছর পরেই রাজীব গান্ধীর মধ্যস্থতায় ফের একত্রিত হয়ে যায় এই দুই কংগ্রেস।
১৩) ১৯৯১ সালে রাজীব গান্ধীর মৃত্যুর পর তাঁর রাজনৈতিক জীবনে ফের বদল আসে। পি.ভি. নরসীমা রাও তাঁকে ক্যাবিনেট মন্ত্রী হিসাবে ইন্ডিয়ান প্ল্যানিং কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ করেছিলেন।
১৫) প্রধানমন্ত্রী নরসীমা রাওয়ের সময়ে ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি বিদেশমন্ত্রকের দায়িত্বভার সামলেছেন।
১৬) এরপর সোনিয়া গান্ধী কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট থাকার সময় ১৯৯৮-১৯৯৯ সারা ভারত জাতীয় কংগ্রেসের জেনারেল সেক্রেটারি ছিলেন প্রণব মুখার্জী। ২০০০ সালে পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট হন তিনি।
১৭) ২০১২ সালে সক্রিয় রাজনীতি ছেড়ে ভারতের রাষ্ট্রপতি হন প্রণব মুখোপাধ্যায়। ২০১৭ সালে মেয়াদ শেষ হয় তাঁর।