Just In
ভারতের বিভিন্ন ধর্মে মাসিকের ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা
মাসিকের ওপর ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা একটি সামাজিক নিষেধাজ্ঞা যা মহিলাদের রজঃস্রাব জনিত বিষয়। ভারতে রজস্রাবকে মহিলাদের কলঙ্ক ও সামাজিক বাধা হিসেবে গণ্য করা হয়। অধিকাংশ সমাজ ও ধর্মে, সাধারণত একটি ঋতুমতী নারীকে অশুচি বলে মানা হয়ে থাকে।
বিভিন্ন ধর্ম ও সংস্কৃতির বিভিন্ন মত এই ঋতুস্রাবকে ঘিরে, কিন্তু এখনও এটি ভারতীয় সমাজের অন্যতম কুসংস্কার। এখানে, আমরা ভারতের বিভিন্ন ধর্মে মাসিকের নিষেধাজ্ঞা সম্বন্ধে উল্লেখ করব।
হিন্দুধর্ম - হিন্দুধর্মের মতে, একটি ঋতুমতী নারীকে অপবিত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং কিছু নিয়ম দেওয়া হয় অনুসরণ করার জন্য। একজন হিন্দু ঋতুমতী নারীকে রান্নাঘর, পুজোর ঘর এবং মন্দিরে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয় না। তার জোরে জোরে কথা বলা, ফুল দিয়ে সেজে ওঠা ও কোনও ব্যক্তিকে স্পর্শ করা নিষেধ। হ্যাঁ, এই ধর্মীয় আচার এখনও অনুসরণ করা হয়! ঋতুমতী নারী সমাজে নিষিদ্ধ বলে মনে করা হয়, এমনকি তার মাসিক শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে পরিবারে ফিরে আসতে অনুমতি দেওয়া হয় না!
ইসলাম - ঋতুমতী নারীকে এই সময়কালে কোন অনুষ্ঠান বা ধর্মীয় কার্যক্রম সম্পাদন থেকে দূরে রাখা হয়। এই সময়ে যেকোনও ধরনের শারীরিক সম্পর্ক ইসলাম ধর্মে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ আছে। ঋতুমতী নারীকে উৎসবের সময় উপস্থিত হতে দেওয়া হয়; তবে সে নামাজ থেকে দূরে থাকে।
খ্রীষ্টধর্ম - অশুচিতার মতবাদে, খ্রীষ্টধর্মেও ঋতুমতী নারীকে অশুচি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অনেকে মনে করেন যে, এই আইন বাতিল করা উচিত।
শিখ - শিখদের মতে, একজন ঋতুমতী নারী একজন পুরুষের মতই শুদ্ধ। গুরু নানক, শিখদের প্রতিষ্ঠাতা, নারীদের ঋতুস্রাবের সময় অপবিত্র মানার ঐতিহ্যকে তিরস্কার করেছিলেন। একজন ঋতুমতী নারীকে অপবিত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয় না, বরং তাকে প্রার্থনার পাশাপাশি সেবা করারও অনুমুতি দেওয়া হয়ে থাকে। শিখ ধর্মে এই বার্তা দেওয়া হয় যে, ঋতুমতী নারী পবিত্র এবং এই মাসিক চক্র ঈশ্বর কর্তৃক একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া।
ইহুদী ধর্ম - ইহুদী ধর্ম মতে, যারা ঋতুমতী নারীকে স্পর্শ করবে তাদের অশুচি মানা হবে যতক্ষণ না তারা স্নান করে শুদ্ধ হবেন। এই সময়ে শারীরিক মিলন ইহুদী ধর্মে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ, এবং যে এর বিরুদ্ধে যাবে তার কঠোর শাস্তি হতে পারে।
কাশ্মীরের বিশেষ আইন - কাশ্মীরের নিজস্ব কিছু নিষেধাজ্ঞা ও বিশ্বাস আছে এই রজঃস্রাব নিয়ে। রাজ্যের আইন অনুযায়ী, একজন ঋতুমতী নারীকে অস্পৃশ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয় না, বরং তাকে তার পরিবার ওই সময়ে যত্নে রাখে। কাশ্মীরিদের মতে, একজন ঋতুমতী নারীর সেবা করলে তারা ভগবানের আশীর্বাদ পেতে পারেন।