Just In
আজ স্বপ্নের বিষয় কি মশাই!
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ঘুমনোর সময় আমাদের মস্তিষ্ক কীভাবে প্রভাবিত হয়, তার উপর নির্ভর করে আমাদের স্বপ্নের বিষয়।
বাড়ির বাইরে থাকতে থাকতে আপনি যে বদ্ধ পাগল হয়ে গেছেন তা আপনার কথা শুনেই মনে হচ্ছে। মানে! কেন? না হলে কেউ বলে স্বপ্নের বিষয় কী। স্বপ্ন তো মশাই এমনি এমনিই আসে, তার বিষয় আমরা চুজ করতে পারি নাকি? কে বললো পারেন না। আরে মশাই সেই কারণেই তো এই প্রবন্ধ লেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া!
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ঘুমনোর সময় আমাদের মস্তিষ্ক কীভাবে প্রভাবিত হয়, তার উপর নির্ভর করে আমাদের স্বপ্নের বিষয়। শুধু তাই নয়, সারা দিন ধরে ঠিক মতো না হাওয়া অসমাপ্ত হাজারো কাজের বিষয়ে আমরা ভুলে গেলেও আমাদের মস্তিষ্ক কিন্তু সে বিষয়ে ঠিক খেয়াল রেখে চলে, যা মাঝে মাঝে প্রভাবিত করে থাকে আমাদের স্বপ্নকে। যেমন ধরুন, যে যে দিন আপনার বস আপনাকে আখের মতো পিষতে থাকে, সেদিন একটু খেয়াল করে দেখবেন বসকে নিয়েই কোনও না কোন স্বপ্ন আপনি ঠিক দেখবেনই দেখবেন! তবে শুধু মাত্র যে দৈনিক নানা ঘটনাই আপনার স্বপ্নকে বা মস্তিষ্ককে প্রভাবিত করে, তা কিন্তু নয়। এমন আরও ছটি বিষয় আছে, যা এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। যেমন...
১. গায়ের গন্ধ:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ঘুমতে যাওয়ার আগে নাকে কোনও সুন্দর গন্ধ গেলে তা আমাদের স্বপ্নকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করে থাকে। এক্ষেত্রে স্লিপ সার্কেলের কোনও এক সময় বেশ সুন্দর সুন্দর স্বপ্ন আসতে থাকে। কারণ সুন্দর গন্ধের সঙ্গে মন মাতানো স্বপ্নের যে একটা যোগ রয়েছে, সে বিষয়ে আর কোনও সন্দেহ নেই। অন্যদিকে কোনও খারাপ গন্ধ যদি ঘুম আসার আগে নাকের অন্দরে চলে যায়, তাহলেই কেলো! কারণ সেক্ষেত্রে খারাপ বা ভুতুরে স্বপ্ন দেখার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
২. ঝাল খাবার:
রাত্রের মেনুতে যদি মারাত্মক ঝাল-মশলা দেওয়া খাবার থাকে, তাহলে কিন্তু চিন্তার বিষয়। কারণ এমন ধরনের খাবার শরীরে প্রবেশ করার পর সহজে হজম হতে চায় না। ফলে গ্যাস-অম্বলের চোটে আমাদের মস্তিষ্কের উপরও প্রভাব পরে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই খারাপ স্বপ্ন আসার আশঙ্কা বাড়ে। সেই কারণেই তো বিশেষজ্ঞরা ঘুমতে যাওয়ার কম করে ২ ঘন্টা আগে রাতের খাবার খেতে বলেন, যাতে ঘুমনোর আগে খাবরটা ঠিক মতো হজম হয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়। এক্ষেত্রে আরেকটি জিনিস মাথায় রাখতে হবে। তা হল, ডিনারের মেনু হতে হবে হালকা, যা সহজে হজম হয়ে যায়। আর ভুলেও ডিনারের পর কফি খাওয়ার ভুল কাজটা করবেন না। কারণ এই ধরনের পানীয়ও ঠিক মতো ঘুম হতে দেয় না। ফলে শারীরিক ক্লান্তি তো বারেই, সেই সঙ্গে বারে বারে খারাপ স্বপ্নও আসতে শুরু করে।
৩. শরীরে ভিটামিন বি৬-এর মাত্রা বেড়ে যাওয়া:
গত কয়েকদিন ধরে বেজায় খারাপ স্বপ্ন আসছে নাকি? আচ্ছা একটা প্রশ্নর উত্তর দিন তো। আপনি কি প্রতিদিন ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট নিয়ে থাকেন? ওহহ...তাহলে একবার চিকিৎসকের পরামর্শ করে নিন তো। কারণ বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে শরীরে ভিটামিনের মাত্রা বাড়তে থাকলে, বিশেষত ভিটামিন বি ৬-এর পরিমাণ যদি বেড়ে যায়, তাহলে কিন্তু বেজায় বিপদ! কারণ সেক্ষেত্রে খারাপ স্বপ্ন দেখার সম্ভাবনা বাড়ে। আসলে শরীরে বি ৬-এর মাত্রা বাড়তে থাকলে বিশেষ এক ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিডের উৎপাদনও বেড়ে যায়, যা আমাদের মস্তিষ্কের অন্দরে থাকা বিশেষ কিছু নিউরোট্রান্সমিটারকে এতটা মাত্রায় প্রভাবিত করে যে খারাপ স্বপ্ন আসতে শুরু করে।
৪. ধূমপান:
ধোঁয়ার রাজ্য থেকে বেরতে চাইলে কিন্তু কয়েকদিন স্বপ্নের রাজ্য একটু কষ্ট পাওয়াতে হবে। কারণ ধূমপান ছাড়ার সময় মস্তিষ্কের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে খারাপ স্বপ্ন আসতে শুরু করে। তবে বিষয়টা এখানেই শেষ হয়ে যায় না। সিগারেট ছাড়ার পর শরীরে থেকে ধীরে ধীরে নিকোটিন বেরিয়ে যেতে শুরু করে। আর এমনটা যত হতে থাকে, তত ব্রেন অ্যাকটিভিটি বাড়তে থাকে। ফলে আরও বেশি বেশি করে স্বপ্ন দেখার সম্ভাবনা বাড়ে। তবে এমন পরিস্থিতিতে স্বপ্নের কাছে হেরে যাবেন না যেন! একবার যখন সিগারেট ছেড়েছেন, তখন যতই খারাপ স্বপ্ন আসুক না কেন, আবার ধূমপান যেন শুরু করবেন না।
৫. খালি পেটে ভুলেও ঘুমতে যাবেন না:
এমন অনকেই আছেন যারা ওজন কমানোর চক্করে রাতে ঠিক মতো খাবার খান না। ফলে কিছুটা ক্ষিদে নিয়েই শুতে যান। এমনটা করা মানে কিন্তু খারাপ স্বপ্নকে আমন্ত্রন জানানো। কারণ খালি পেটে শুলে হঠাৎ করে ব্লাড সুগার লেভেল কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। আর এমনটা ঘুমের মধ্যে হলে খারাপ স্বপ্ন গুটি গুটি পায়ে মস্তিষ্ককে ঘিরে ধরতে শুরু করে। তাই একেবারে খালি পেটে কখনও শুতে যাবেন না, বরং একটা কলা বা এক গ্লাস দুধ খাওয়ার চেষ্টা করবেন। এমনটা করলে পেটও ভরবে এবং ওজন বাড়ার আশঙ্কাও থাকবে না। সেই সঙ্গে ঘুমনোর সময় খারাপ স্বপ্নরাও আর জ্বালাতন করবে না।
৬. প্রেগন্যান্সির প্রভাবে:
এই সময় ভাবী মায়ের শরীরে এত মাত্রায় হরমোনাল চেঞ্জ হতে থাকে যে মস্তিষ্কের অন্দরের পরিবেশেও ব্যাপকভাবে বদলে যায়। ফলে স্বপ্নের চরিত্রও ধীরে ধীরে বদলাতে থাকে। তাই এমনটা হওয়ার সময় মায়ের পক্ষে কিছু করাই সম্ভব হয় না। কিন্তু তাই বলে মন খারাপ করবেন না। কারণ জানবেন গর্ভাবস্থায় খারাপ স্বপ্ন আসার অর্থ হল আপনার শরীরের অন্দরে যে ক্রমাগত বদল আসছে, তার সঙ্গে তাল মেলাতে মস্তিষ্কও প্রাণপন চেষ্টা চালাচ্ছে। তাই প্রেগন্যান্সির সময়কার খারাপ স্বপ্ন আদতে খারাপ খবরের বাহক নয়, বরং সুখের বার্তা নিয়ে আসে।