Just In
হার্টকে বাঁচাতে রক্তের বিভাগ জানা জরুরি কেন জানেন?
সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে হার্ট কতটা সুস্থ থাকবে, তা অনেকাংশেই রক্তের বিভাগের উপর নির্ভর করে থাকে।
স্রোতের মতো শরীরের প্রতিটি কোণায় পৌঁছে যাচ্ছে লাল তরলটা। আর একে একে প্রাণ ফিরে পাচ্ছে দেহের প্রতিটি ভাইটাল অর্গান। কিন্তু হার্ট, সে কি ভাল আছে? রক্তের সঙ্গে কি সে বন্ধুত্ব করতে পরেছে, নাকি...?
সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে হার্ট কতটা সুস্থ থাকবে, তা অনেকাংশেই রক্তের বিভাগের উপর নির্ভর করে থাকে। যেমন ধরুন এ, বি এবং এবি বিভাগের রক্ত যাদের শরীরে রয়েছে, তাদরে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বেশি থাকে। কিন্তু "ও" বিভাগের রক্তের অভিকারিদের হার্টের স্বাস্থ্য বেশ ভাল হয়। এখানেই শেষ নয়, এই গবেষণায় আরও বলা হয়েছে যে যখন বায়ু দূষণের মাত্রা বাড়তে শুরু করে, তখন "ও" বিভাগ ছাড়া বাকি সব বিভাগের রক্তের অধিকারিদের হার্টের অবস্থা ধীরে ধীরে খারাপ হতে শুরু করে।
রক্তের বিভাগের সঙ্গে হার্টের ভাল-মন্দের সম্পর্কটা কোথায়? একাধিক জেনেটিক স্টাডি করে দেখা গেছে "ও" বিভাগকে বাদ দিলে বাকি প্রায় সব বিভাগের রক্তের অধিকারিদের জিনের গঠন এমন হয় যে বায়ু দূষণের কারমে এদের হার্টের ক্ষতি বেশি মাত্রায় হয়ে থাকে। তাই তো এ, বি এবং এবি বিভাগের রক্ত যাদের শরীরে বইছে, তাদের এই প্রবন্ধে আলোচিত খাবারগুলির বেশি মাত্রায় খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। কারণ একাধিক স্টাডিতে দেখা গেছে এই খাবারগুলি খেলে হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে সার্বিকভাবে শরীরের অনেক উপকার হয়। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে যে যে খাবারগুলি বিশেষ ভূমিকা নেয়, সেগুলি হল...
১. মাছ:
হার্টকে সুস্থ রাখতে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আর এই উপাদানটি প্রচুর মাত্রায় মজুত থাকে মাছে। তাই তো রোজের ডেয়েটে মাছকে রাখার পক্ষে এতটা সাওয়াল করে থাকেন চিকিৎসকেরা। প্রসঙ্গত, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড শুধু হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ায় না, সেই সঙ্গে অ্যারিথমিয়া এবং অ্যাথেরোস্কেলেরোসিসের মতো রোগের থেকে বাঁচাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
২. ওটস মিল:
এতে থাকা ফাইবার শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা একেবারে কমিয়ে ফেলে। সেই সঙ্গে হার্টের উপর হওয়া পরিবেশ দূষণের খারাপ প্রভাবকে কমাতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। ফলে সবদিক থেকে হার্ট এতটাই সুরক্ষিত হয়ে যায় যে কোনও ধরনের হার্ট ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। তাই আপনাদের মধ্যে যাদের শরীরে "ও" বিভাগের রক্ত নেই, তাদের নিয়মিত ওটস খেতে হবে কিন্তু!
৩. জাম:
একদিকে পরিবেশ দূষণ, অন্যদিকে অনিয়ন্ত্রিত জীবন, এই সব নানা কারণে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের হার্টের স্বাস্থ্যের অবস্থা ধীরে ধীরে খারাপ হতে শুরু করে। তাই তো সময় থাকতে থাকতে হার্টের খেয়াল রাখার দিকে নজর দিতে হবে। আর এই কাজটি করতে গেলে আপনাকে রোজ এক বাটি করে জাম খেতেই হবে। কারণ এই ফলটি নিয়মিত খেলে শরীরে ফ্লেবনয়েড নামক এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা এতটা বেড়ে যায় যে কোনও ধরনের হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৩২ শতাংশ কমে যায়।
৪. ডার্ক চকোলেট:
২০১২ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে ডার্ক চকলেটের অন্দরে থাকা একাধিক উপাকারি উপাদান ব্লাড প্রেসার কমানোর পাশাপাশি হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই হাজারো প্রতিবন্ধকতার মাঝেও হার্টকে যদি সুস্থ রাখতে চান, তাহলে এই বিশেষ ধরনের চকোলেট খেতে ভুলবেন না যেন!
৫. সাইট্রাস ফল:
বেশ কিছু গবেষণায় পর একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে পাতি লেবু, কমলা লেবু এবং মৌসাম্বি লেবুর মতো সাইট্রাস ফলের অন্দরে থাকে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হার্টকে চাঙ্গা রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি হওয়া একটি গবেষণায় দেখা গেছে মহিলারা যদি নিয়মিত একটা করে সাইট্রাস ফল খেতে পারেন, তাহলে তাদের কোনও ধরনের হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ২০ শতাংশ কমে যায়।
৬. আলু:
"যত আলু খাবেন তত মোটা হয়ে যাবেন।" "আলু খাওয়া মানেই শরীরের অপকার হওয়া।" এই ধরনের নানা অপবাদ সহ্য করেও কিন্তু নিজের কাজটা ঠিক চুপিসারে করে চলেছে এই সবজিটি। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে হার্টকে সুস্থ রাখতে আলু বাস্তবিকই বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে আলুর অন্দরে থাকা পটাশিয়াম, হার্টকে সুস্থ রাখতে দারুনভাবে সাহায্য় করে থাকে।
৭. টমাটো:
এই সবজির শরীরে মজুত পটাশিয়াম এবং লাইকোপেন নামক এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে এই দুটি উপাদান শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর পাশাপাশি রক্তনালীর কর্মক্ষমতা বাড়াতও বিশেষ ভূমিকা নেয়। ফলে হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।