Just In
সাবধান: ঘুম কমতে থাকলে কিন্তু মরতে থাকবে মস্তিষ্ক!
দৈনিক ৭ ঘন্টা না ঘুমলে আমাদের স্মৃতিশক্তি কমে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে নতুন স্মৃতি তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়াও বন্ধ হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, ব্রেন এবং শরীরের আরও নানা ধরনের ক্ষতি হতে শুরু করে। তাই সাবধান!
দৈনিক ৭ ঘন্টা না ঘুমলে আমাদের স্মৃতিশক্তি কমে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে নতুন স্মৃতি তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়াও বন্ধ হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, ব্রেন এবং শরীরের আরও নানা ধরনের ক্ষতি হতে শুরু করে। তাই সাবধান!
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ঠিক মতো ঘুম না হলে মস্তিষ্কের অন্দরে বিটা-অ্যানিলয়েড নামে একটি টক্সিক প্রোটিনের উৎপাদন বাড়তে শুরু করে। ফলে অ্যালঝাইমারসের মতো ব্রেন ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। প্রসঙ্গত, আমরা যখন গভীর ঘুমে থাকি তখন ব্রেনের অন্দরে একটি বিশেষ প্রক্রিয়া শুরু হয়, যে কারণে এই টক্সিক উপাদানটি শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে থাকে। তাই তো ঠিক মতো ঘুম না হলে মস্তিষ্ক নিজের কাজ ঠিক মতো করতে পারে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই টক্সিকের মাত্রা বাড়তে শুরু করে।
ঠিক মতো ঘুম না হলে শরীরের উপর কী ধরনের প্রভাব পরে? গবেষণায় দেখা গেছে দিনের পর দিন ঠিক মতো ঘুম না হতে থাকলে শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের পরিমাণ বাড়তে শুরু করে। যার প্রভাব অকালে শরীরের বয়স বেড়ে যেতে থাকে। সেই সঙ্গে ওজন বৃদ্ধি, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল এবং নানাবিধ হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু কেস স্টাডিতে এও দেখা গেছে ঠিক মতো না ঘুমলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে শুরু করে, সেই সঙ্গে অ্যান্টি-ক্যান্সার ইমিউন সেলেরাও দুর্বল হয়ে পরে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই নানাবিধ মারণ রোগে ঘারে চেপে বসার সম্ভাবনা বাড়ে। তাই ভুলেও ঘুমের কোটা কমাবেন না যেন!
এখন প্রশ্ন হল যাদের নানা কারণে ঠিক মতো ঘুম হয় না, তারা কী করবেন? এই প্রশ্নেরই উত্তর দেওয়া হয়েছে এই প্রবন্ধে। এই লেখায় এমন কিছু খাবারের বিষয়ে আলোচনা করা হল, যা নিয়মিত যদি খেলে অনিদ্রার সমস্যা কমতে একেবারেই সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে যে যে খাবারগুলি ইনসমনিয়ার মতো রোগকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে, সেগুলি হল...
১. কিউই:
বেশ কিছু গবেষমায় দেখা গেছে এই ফলটির অন্দরে উপস্থিত ভিটামিন সি, ই, সেরোটনিন এবং ফলেট দেহের অন্দরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখাতে শুরু করে যে ঘুম আসতে সময় লাগে না। তাই বেশ কিছু দিন ধরে যদি ঠিক মতো ঘুম না হয়ে থাকে তাহলে শুতে য়াওয়ার কিছু সময় আগে একটা কিউই খেতে ভুলবেন না! প্রসঙ্গত, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ সাইট্রিস ফল, যেমন- পাতি লেবু, কমলা লেবু এবং মৌসম্বি লেবু খেলেও এক্ষেত্রে সমান উপকার পাওয়া যায়।
২. ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার:
যে যে খাবারে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার রয়েছে, যেমন- ব্রকলি, ব্রাউন রাইস, হোল গ্রেন, পালং শাক, ফুলকোপি, আলু, পেঁপে প্রভৃতি খাওয়া শুরু করলে মস্তিষ্কের অন্দরে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ কমতে শুরু করে। এই ধরনের হরমোনের মাত্রা যত কমে, তত ঘুমের ব্যাঘাত হওয়ার আশঙ্কা কমে। তাই তো অনিদ্রায় সমস্যায় ভুগলে তাহলে রোজের ডেয়েটে এই খাবারগুলি রাখতে ভুলবেন না যেন!
৩. মাছ:
সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণায় এমনটা দাবি করা হয়েছে যে নিয়মিত মাছ খাওয়া শুরু করলে একদিকে যেমন বুদ্ধির ধার বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে ইনসমনিয়ার মতো রোগের প্রকোপও কমে। আসলে মাছের মধ্যে থাকা ভিটামিন বি৬ দেহের অন্দরে প্রবেশ করার পর মেলাটোনিন নামক একটি হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। এই হরমোনিটির মাত্রা শরীরে যত বাড়তে থাকে, তত সুন্দরভাবে ঘুম হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
৪. চেরির জুস:
অনিদ্রাকে দূরে রাখতে এই পানীয়টির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে চেরির অন্দরে থাকা একাধিক উপকারি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর মেলাটোনিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে ঘুম আসতে দেরি লাগে না। প্রসঙ্গত, আয়ুর্বেদ চিকিৎসকেদের মতে ক্রনিক ইনসমনিয়ায় যারা ভুগছেন, তারা যদি দিনে ২ গ্লাস চেরির রস খেতে পারেন, তাহলে সমস্যা কমতে একেবারেই সময় লাগে না।
৫. দই:
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দিলে ঘুমের পরিমাণ কমতে শুরু করে। তাই দেহে যাতে এই খনিজটির কোনও ঘাটতি দেখা না দেখা দেয়, সেদিকে খেয়াল রাখাটা একান্ত প্রয়োজন। আর এই কাজটি করবেন কিভাবে? খুব সহজ! প্রতিদিন এক বাটি দই নয়তো এক গ্লাস করে দুধ খেতে শুরু করুন। এমনটা করলে দেখবেন কোনও দিন শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হবে না। ফলে ইনসমনিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমবে।
৬. কলা:
এই ফলটির শরীরে প্রচুর পরিমাণে মজুত রয়েছে পটাশিয়াম এবং ভিটামিন বি৬। এই দুটি উপাদান মেলাটোনিন হরমোনের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। ফলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটার সম্ভাবনা কমে। তাই বেশ কয়েকদিন ধরে যদি দেখেন ঠিক মতো ঘুম হচ্ছে না, তাহলে শুতে যাওয়ার কিছু সময় আগে একটা কলা খেয়ে নেবেন। তাহলেই দেখবেন ঘুম আসতে সময় লাগবে না।