Just In
Don't Miss
সপ্তাহে কম করে দুদিন শরীরচর্চা করা জরুরি কেন জানেন?
গতকাল আমেরিকান একাডেমি অব নিউরোলজির প্রকাশ করা একটা রিপোর্টে এমনটা দাবি করা হয়েছে যে সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে এবং ব্রেন পাওয়ার বাড়াতে সপ্তাহে কম করে দুদিন শরীরচর্চা করা মাস্ট! কিন্তু ব্রেন পাওয়ার বাড়া-কমার সঙ্গে শরীরচর্চার কী সম্পর্ক?
আসলে এক্সারসাইজ করার সময় ব্রেনে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই নিউরনদের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। আর এমনটা দিনের পর দিন হতে থাকলে ধীরে ধীরে কগনিটিভ পাওয়ার বেড়ে যায়। ফলে স্মৃতিশক্তি তো বাড়েই, সেই সঙ্গে বুদ্ধি এবং মনযোগেরও উন্নতি ঘটে। তবে ভাববেন না শরীরচর্চা করলে কেবল ব্রেন পাওয়ারই বাড়ে। একাদিক গবেষণায় দেখা গেছে সপ্তাহে কম করে ৬০ মিনিট এক্সারসাইজ করলে মেলে আরও অনেক শারীরিক উপকারিতা। যেমন...

১. স্ট্রেস কমায়:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে স্ট্রেসের মাত্রা যখন খুব বেড়ে যায়, তখন যদি কিছু সময় হালকা শরীরচর্চা করা যায় বা একটু হাঁটাহাঁটি করে নেওয়া যায়, তাহলে দারুন উপকার মেলে। আসলে এক্সারসাইজ করার সময় প্রচন্ড ঘাম হতে থাকে। ফলে শরীরে উপস্থিত টক্সিক উপাদানেরা বেড়িয়ে যায়। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের অন্দরে ফিল গুড হরমোনের ক্ষরণ হতে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই স্ট্রেস লেভেল কমতে সময় লাগে না।

২. মন আনন্দে ভরে যায়:
আজকের দিনে খুশি থাকাটা যেখানে লড়াইয়ের সমান হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেখানে শরীরচর্চাকে গুরুত্ব না দিলে ভুল হবে। কারণ প্যান স্টেট ইউনিভার্সিটির করা এক গবেষণা বলছে নিয়মিত অল্প-বিস্তর হোক কী পুরো মাত্রায় জিম ট্রেনিং, এক্সারসাইজ করলে খুশি থাকার সম্ভাবনা যায় বেড়ে। কিভাবে এমনটা হয় জানেন? আসলে শরীরচর্চা করার সময় মস্তিষ্কের অন্দরে "ফিল গুড" হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে মন খারাপ দূর দেশে পালিয়ে যেতে কিছুটা বাধ্য়ই হয়।

৩. ইনসমনিয়ার প্রকোপ কমে:
আজকের দিনে সবার জীবনেই প্রতিযোগীতা এমন বাড়ছে যে স্ট্রেস এবং অ্যাংজাইটি রোজের সঙ্গী হয়ে উঠেছে। ফলে শরীরের উপর তো খারাপ প্রভাব পরছেই, সেই সঙ্গে রাতের ঘুমও যাচ্ছে পালিয়ে। এমন অবস্থায় একমাত্র শরীরচর্চাই পারে সুস্থ জীবনের পথ দেখাতে। কারণ সকাল সকাল উঠে এক্সারসাইজ করার কারণে এমনিতেই রাতে ঘুম আসতে কোনও অসুবিধা হয় না। উপরন্তু এক্সারসাইজ করলে শরীরে বিশেষ কিছু হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যাওয়ার কারণে ঘুম না আসার সমস্যা কমতে সময়ই লাগে না।

৪. স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটে:
২০১৪ সালে হওয়া একটি গবেষণা অনুসারে নিয়মিত এক্সারসাইজ করলে আমাদের মস্তিষ্কের হিপোকম্পাস নামক অংশটির ক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই স্মৃতিশক্তি যেমন বৃদ্ধি পায়, তেমনি কোনও কিছু শেখার ক্ষমতাও বাড়তে থাকে।

৫. সাফল্য চলে আসে হাতের মুঠোয়:
একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে যে প্রতিদিন শরীরচর্চা করলে মস্কিষ্কের ক্ষমতা চোখে পরার মতো বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে বুদ্ধি, মনোযোগ এবং লক্ষ পূরণের ইচ্ছা জন্মায়। ফলে সাফল্য আর বেশি দিন দূরে থাকতে পারে না।

৬. এনার্জির ঘাটতি দূর হয়:
অনেকেই মনে করেন এক্সারসাইজ করলে শরীর ক্লান্ত হয়ে পরে। এই ধরণা কিন্তু একেবারে ঠিক নয়, বরং একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে শরীরচর্চা করলে এনার্জি লেভেল তো কমেই না, উল্টে প্রায় ২০-২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ক্লান্তির নাম গন্ধও খুঁজে পাওয়া যায় না।

৭. হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে:
পরিসংখ্যান অনুসারে প্রতি বছর আমাদের দেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে হার্ট অ্যাটাকের সংখ্যা, বিশেষত কম বয়সিদের মধ্যে। এমন পরিস্থিতিতে শরীরচর্চার প্রয়োজনীয়তা যেন আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ একাধিক কেস স্টাডিতে একতা প্রমাণিত হয়েছে যে নিয়ম করে এক্সারসাইজ করলে সারা শরীরে রক্তের প্রবাহ এতটা বেড়ে যায় যে হার্টর পাশাপাশি শরীরের প্রতিটি অঙ্গের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে কোলেস্টেরল এবং রক্তচাপের মতো রোগের প্রকোপও হ্রাস পায়। ফলে স্বাভাবিকভাবাই হার্টের রোগ বা হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যায় কমে।

৮. শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়ে:
জিমে গিয়ে ওয়েট তুলুন বা যোগাসন, যে কোনও ধরনের শরীরচর্চা করলেই দেহের ফ্লেক্সিবিলিটি বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে পেশীর পাশাপাশি শরীরের প্রতিটি অঙ্গের ক্ষমতা বাড়ার কারণে রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও যায় কমে।