Just In
খুব ক্লান্ত লাগছে নাকি? তাহলে এক কাপ কফি হয়ে যাক!
ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির গবেষকদের করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়াতে কফির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে!
ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির গবেষকদের করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়াতে কফির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চল! আসলে এই পানীয়টির অন্দরে থাকা একাধিক উপকারি উপাদান একদিকে যেমন শরীরের প্রতিটি অঙ্গের ক্ষমতা বাড়ানোর মধ্যে দিয়ে সার্বিকভাবে শরীরে সচলতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, তেমনি হার্টের রোগ এবং ক্যান্সারের মতো মারণ ব্যাধিকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভাবে সাহায্য করে।
এখানেই শেষ নয়, সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে ক্যাফিন সমৃদ্ধ এই পানীয়টি ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরের অন্দরে এমন কিছু বিক্রিয়া করে যে মধুমেহ রোগ সেভাবে ক্ষতি করার সুযোগই পায় না। ফলে আয়ু বৃদ্ধি পায় চোখে পরার মতো। প্রসঙ্গত, পর্তুগালের পর্তো ইউনিভার্সিটির গবেষকরা প্রায় ৩০০০ জন পুরুষ এবং মহিলা ডায়াবেটিক রোগীর উপর টানা ১১ বছর গবেষণা চালিয়ে দেখেছিলেন তাদের শরীরে ক্যাফিন প্রবেশ করার পর এমন কিছু ঘটে, যার প্রভাবে মৃত্যুহার প্রায় ৫১-৫৭ শতাংশ হ্রাস পায়। তবে ভাববেন না শুধু ডায়াবেটিস রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেই কফি বিশেষ ভূমিকা নেয়। আরও একাধিক মারণ রোগের প্রকোপ কমাতেও এই পানীয়টির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। যেমন ধরুন...
১. ব্যথা কমায়:
একেবারে ঠিক শুনেছেন! বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে নিয়মিত ২ কাপ করে কফি খাওয়া শুরু করলে পেশীর ক্ষমতা এততটাই বৃদ্ধি পায় যে, যে কোনও ধরনের ব্যথা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৪৮ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। তবে এক্ষেত্রে একটি বিষয় মাথায় রাখবেন, তা হল ভুলেও দৈনিক ২-৩ কাপের বেশি কফি খাবেন না যেন। কারণ শরীরে বেশি মাত্রায় ক্যাফিন প্রবেশ করলে কিন্তু বিপদ!
২. ডায়াবেটিসের মতো রোগের প্রকোপ কমে:
যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে, ডায়াবেটিস রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখার মধ্যে দিয়ে সার্বিকভাবে শরীরের উন্নতিতে কফির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। শুধু তাই নয়, গবেষণা বলছে যারা নিয়মিত কফি পান করেন, তাদের টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ৫০-৬৭ শতাংশ কমে যায়।
৩. এনার্জির ঘাটতি দূর হয়:
কফির অন্দরে থাকা ক্যাফিন শরীরে প্রবেশ করার পর তা অ্যাডেনোসাইন নামে একটি নিউরোট্রান্সমিটারের কাজ করার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে ডোপামাইন নামক ফিলগুড হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে শরীর চনমনে হয়ে উঠতে শুরু করে। সেই সঙ্গে এনার্জির ঘাটতিও দূর হয়। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে ডোপামাইন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে গেলে ব্রেন ফাংশনেরও উন্নতি ঘটে। তাই দিনে ১-২ কাপ কফি খাওয়া শুরু করতে পারেন। এমনটা করলে দেখবেন উপকার মিলবে।
৪. লিভারের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কমে:
প্রতিদিন নিয়ম করে ২-৩ কাপ কফি পান করলে নানাবিধ লিভার ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় শূন্যে এসে দাঁড়ায়। সেই সঙ্গে লিভারের কর্মক্ষমতা এতটা বৃদ্ধি পায় যে সার্বিকভাবে শরীরের উন্নতি ঘটে।
৫. ওজন কমতে শুরু করে:
গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে কফিতে উপস্থিত ক্যাফিন শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বি গলিয়ে ফেলতে বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। আসলে ক্যাফিন আমাদের হজম ক্ষমতা বা মেটাবলিক রেট প্রায় ৩-১১ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। ফলে মেদ ঝরার হার প্রায় ১০-২৯ শতাংশ বেড়ে যায়।
৬. পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়:
ঘুম ঘুম ভাব কাটানোর পাশাপাশি কফি আমাদের শরীরে একাধিক পুষ্টিকর উপাদানের ঘাটতি দূর করতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। একাধিক কেস স্টাডি করার সময় দেখা গেছে কফি পান করলে শরীরে ভিটামিন বি২, ভিটামিন বি৫, পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি দূর হয়। তবে তাই বলে মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে কফি খাবেন না যেন। এমনটা করলে উপকারের থেকে ক্ষতি হবে বেশি।
৭. ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায়:
গত কয়েক বছর ধরে সারা বিশ্বজুড়ে হওয়া বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত কফি পান করলে ব্রেন টিস্যুর কর্মক্ষমতা এতটা বৃদ্ধি পায় যে বুড়ো বয়সে গিয়ে অ্যালঝাইমারস বা ডিমেনশিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা চোখে পরার মতো কমে যায়। প্রসঙ্গত, সারা বিশ্বে বয়স্ক মানুষদের মধ্যে ডিমেনশিয়া রোগের প্রকোপ যে হারে বাড়ছে, তাতে কফি পানের প্রয়োজনীয়তা যে বেড়েছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
৮. শরীরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়:
ক্যাফিন রক্তে মেশার পর অ্যাড্রিনালিন হরমোনের ক্ষরণ মারাত্মক বেড়ে যায়। ফলে শরীরের পরিশ্রম করার ক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে অ্যাড্রিনালিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ক্যাফিন নার্ভ সেলের মাধ্যমে ফ্যাট সেলকে বিশেষ কিছু সিগনাল পাঠাতে শুরু করে, যে কারণেও চর্বি গলতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরের সার্বিক কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে।