Just In
খাওয়ার পর মৌরি খান না তো?
মুখের অন্দরকে তরতাজা করে তোলার পাশাপাশি শরীরকে নানাবিধ জটিল রোগের হাত থেকে বাঁচাতেও এই প্রকৃতিক উপাদানটি যে বিশেষ ভূমিকা নেয়, সে বিষযে জানা আছে কি?
প্রতিদিন খাওয়া হয় না ঠিকই। তবে সুযোগ পেলেই বাকি অনেকের মতো কয়েকটা দানা মুখে ফেলে দি বৈকি! তা বেশ! কিন্তু কী কারণে মৌরি খান বলতে পারেন?
কী কারণে আবার, খাওয়ার পর মুখটা একটু তরতাজা করতে মৌরির কোনও বিকল্প আছে নাকি! ঠিক বলেছেন। তবে মুখের অন্দরকে তরতাজা করে তোলার পাশাপাশি শরীরকে নানাবিধ জটিল রোগের হাত থেকে বাঁচাতেও এই প্রকৃতিক উপাদানটি যে বিশেষ ভূমিকা নেয়, সে বিষযে জানা আছে কি? বলেন কী! মৌরি শরীরের উপকারে লাগে? তাহলে আর বলছি কী মশাই! একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত সকাল-বিকাল অল্প করে মৌরি খাওয়ার অভ্যাস করলে শরীরের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হয় যে নানাবিধ উপকার মিলতে শুরু করে। যেমন...
১. রক্তচাপকে স্বাভাবিক রাখে:
জার্নাল অব ফুড সায়েন্সে প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্র অনুসারে মৌরি খাওয়া মাত্র আমাদের স্যালাইভা নাইট্রাইটের পরিমাণ বাড়তে শুরু করে, যে কারণে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার সুযোগই পায় না। আসলে নাইট্রাইট, ব্লাড প্রসোরকে স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, অরেকভাবে মৌরি রক্তচাপকে লাগাম পরিয়ে থাকে। কীভাবে? এই প্রকৃতিক উপাদানটির অন্দরে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় পটাশিয়াম, যা রক্তে মেশার পর দেহের অন্দরে সোডিয়ামের পরিমাণ কমাতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রক্তচাপ কমতে শুরু করে।
২. শরীরে জল জমার আশঙ্কা কমে:
নিয়মিত মৌরি দিয়ে বানানো চা খেলে একদিকে যেমন দেহের অন্দরে অতিরিক্ত জল জমার সম্ভাবনা কমে, তেমনি রক্তে মিশে থাকা টক্সিক উপাদানেরা শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রোগভোগের আশঙ্কা অনেক কমে যায়। এবার নিশ্চয় বুঝেছেন তো সুস্থভাবে বাঁচতে মৌরি খাওয়ার প্রয়োজন কতটা।
৩. বদ-হজম দূর করে:
হজম ক্ষমতা এতটা কমে গেছে যে হালকা খাবার খেলেও বদ-হজম হচ্ছে? তাহলে তো বন্ধু আজ থেকেই মৌরি ভেজানো জল বা সরাসরি মৌরি খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে। কারণ মৌরির মধ্যে থাকা এস্ট্রাগল, ফেঙ্কন এবং অ্যানথল নামক উপাদান, পেটের অন্দরে প্রদাহ তো কমায়ই, সেই সঙ্গে পাচক রসের ক্ষরণ এতটা বাড়িয়ে দেয় যে গ্যাস-অম্বল এবং বদ-হজমের মতো সমস্যা একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতারও উন্নতি ঘটে।
৪. কনস্টিপেশন রোগের নিরাময় ঘটায়:
প্রতিদিন সকালটা যদি প্রচন্ড যন্ত্রণা দিয়ে শুরু হয়, তাহলে আজ থেকেই মৌরি খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন অস্বস্তি কমতে সময় লাগবে না। আসলে এর মধ্যে থাকা বিশেষ এক ধরনের তেল বর্জ্যের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয় ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য মতো সমস্যা কমতে সময় লাগে না।
৫. অ্যাস্থেমার প্রকোপ কমায়:
মৌরির অন্দরে থাকা ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস ফুসফুসের কর্মক্ষমতা তো বাড়ায়ই, সেই সঙ্গে শ্বাস প্রশ্বাসের প্রক্রিয়া যাতে ঠিক মতো হয়, সেদিকে খেয়াল রাখে। ফলে শ্বাস কষ্ট এবং ব্রঙ্কাইটিসের মতো রোগের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, কফ এবং সর্দি-কাশির প্রকোপ কমাতেও এই প্রকৃতিক উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৬. রক্তকে পরিশুদ্ধ করে:
শ্বাস-প্রশ্বাস, খাবার এবং আরও নানাভাবে সারা দিন ধরে নানা ধরনের ক্ষতিকর টক্সিক উপাদান আমাদের শরীরে প্রবেশ করে থাকে। এই টক্সিক উপাদানগুলি বেশি সময় আমাদের শরীরের এদিক-সেদিক ঘুরে বেরালে নানা ধরনের ক্ষতি হয়ে যায়। তাই তো টক্সিক উপাদানদের শরীর থেকে যত দ্রুত সম্ভব বের করে দেওয়াই শ্রেয়। আর এই কাজটি করতে আপনাকে সাহায্য করতে পারে মৌরি। এই প্রকৃতিক উপাদানটি নিয়মিত খাওয়া শুরু করলে শরীরে ফাইবার এবং এসেনশিয়াল অয়েলের মাত্রা বাড়তে শুরু করে, যা শরীর থেকে টক্সিক উপাদানদের বের করে দিতে বিশেষ ভূমিকা নেয়।
৭. দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটায়:
মৌরিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন এ, যা দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি নানাবিধ চোখের সমস্যাকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে গ্লকোমা সম্পর্কিত নানা লক্ষণ কমাতেও সাহায্য করে।