Just In
এই শীতে নিয়মিত হালদি দুধ খাওয়া উচিত কেন জানেন?
ঠান্ডা মানেই শরীর খারাপের বিশাল ফর্দ! আর এমন মরসুমে সুস্থ থাকতে হাতে একটা ব্রহ্মাস্ত্র না থাকলে চলে বলুন! তাই তো এই প্রবন্ধে এমন একটি ঘরোয়া চিকিৎসার সম্পর্কে আলোচনা করা হল
ঠান্ডা মানেই শরীর খারাপের বিশাল ফর্দ! আর এমন মরসুমে সুস্থ থাকতে হাতে একটা ব্রহ্মাস্ত্র না থাকলে চলে বলুন! তাই তো এই প্রবন্ধে এমন একটি ঘরোয়া চিকিৎসার সম্পর্কে আলোচনা করা হল, যা নিয়মিত গ্রহণ করলে এই ঠান্ডায় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারবে না।
কী এমন ঘরোয়া ওষুধের কথা বলছেন বলুন তো, যার এত ক্ষমতা! ওষুধটি বানাতে প্রয়োজন পরবে হলুদ এবং দুধের। শুধু এই দুটি উপাদানকে মিশিয়ে দিন। তাহলেই কেল্লাফতে! আসলে হলুদে উপস্থিত কার্কিউমিন নামক একটি উপাদান শরীরের অন্দরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে একাধিক রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে সুস্থজীবনের স্বপ্ন পূরণ হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ে। অন্যদিকে দুধে উপস্থিত ক্যালসিয়াম, প্রোটিন এবং আরও সব উপকারি উপাদান শরীরের গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই শীতের মরসুমে যদি সুস্থ থাকতে চান, তাহলে একদিনও হলদি দুধ খেতে ভুলবেন না যেন!
প্রসঙ্গত, নিয়মিত হলদ আর দুধ একসঙ্গে খেলে যে যে উপকার পাওয়া যায়, সেগুলি হল...
১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়ে ওঠে:
শীতকালে অমরা এত অসুস্থ হয়ে পরি কেন জানেন? কারণ নানা কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পরে। তাই তো নানা রোগ ঘারে চেপে বসে। এই কারণেই তো এই সময় নিয়মিত হলদি দুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। আসলে এই পানীয়টিতে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান, ইমিউনিটিকে মারাত্মক বাড়িয়ে দেয়। ফলে কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।
২. হাঁচি-কাশি হওয়ার আশঙ্কা কমে:
হলুদে উপস্থিত অ্যান্টি-ভাইরাল এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজ একদিকে যেমন নানাবিধ সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমায়, তেমনি এর মধ্যে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রপাটিজ রেসপিরেটারি ট্রাক্ট ইনফেকশন এবং সর্দি-কাশির প্রকোপ কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এই কারণেই তো বছরের এই একটা সময় বাচ্চাদের নিয়মিত হলুদ মেশানো দুধ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে, বিশেষত রাতে ঘুমতে যাওয়ার আগে।
৩. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়:
একাধিক স্টাডিতে দেখা গেছে নিয়মিত হলুদ মেশানে দুধ খাওয়া শুরু করলে হজমে সহায়ক পাচক রসের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে বদ-হজমের আশঙ্কা যেমন কমে। সেই সঙ্গে গ্যাস-অম্বল এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্সের মতো সমস্যা কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ইনফেকশন কমাতেও এই পানীয় বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৪. লিভার টনিক হিসেবে কাজ করে:
লিভারকে চাঙ্গা এবং কর্মক্ষম রাখতে হালদি দুধের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। কারণ হলুদের মধ্যে থাকা কার্কিউমিন নামক উপাদানটি লিভারের কর্মক্ষমতা এতটা বাড়িয়ে দেয় যে কোনও ধরনের লিভারের রোগই ধারে কাছে আসতে পারে না। এমনকি ফ্য়াটি লিভারের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে। শুধু তাই নয়, হলুদে উপস্থিত বেশ কিছু উপকারি উপাদান লিভারে জমে থাকা বর্জ্য পদার্থ বের করে দিতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। ফলে লিভারের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।
৫. রক্তকে বিষ মুক্ত করে:
শরীরকে ডিটক্সিফাই করতে হলুদ বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে এই প্রকৃতিক উপাদানটির মধ্যে থাকা কার্কিউমিন, রক্তে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানদের বের করে দেয়। ফলে ব্লাড ভেসেলের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা তো কমেই, সেই সঙ্গে নানাবিধ রোগভোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও হ্রাস পায়। এবার বুঝেছেন তো শীতকালে এই পানীয়টি খেতে কেন বলে থাকেন চিকিৎসকেরা।
৬. ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়:
নিয়মিত হলুদ মেশানো দুধ খেলে ত্বকের অন্দরে থাকা টক্সিক উপাদান বেরিয়ে যায়। সেই সঙ্গে কোলাজেনের উৎপাদন বেড়ে যায়। ফলে ত্বক এত মাত্রায় উজ্জ্বল এবং প্রাণচ্ছ্বল হয়ে ওঠে যে বলি রেখা কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে ব্রণ, অ্যাকনে এবং কালো ছোপের মতো সমস্যাও কমতে শুরু করে। এক কথায় শীতকালেও যদি ত্বকের সৌন্দর্য ধরে রাখতে চান, তাহলে আজ থেকেই হলুদ দুধ খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে অ্যাকজিমার মতো ত্বকের রোগের চিকিৎসাতেও হলদি দুধ বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৭. নিমেষে মাথা যন্ত্রণা কমায়:
এবার থেকে মাথা যন্ত্রণা হলেই এক কাপ হলুদ মেশানো দুধ খেয়ে নেবেন। দেখবেন কষ্ট কমতে একেবারে সময়ই লাগবে না। কারণ হলুদের অন্দরে থাকা কার্কিউমিন এবং অ্যান্টি ইনফ্লেমেটারি উপাদান শরীরের অন্দরে প্রদাহ কমায়। ফলে মাথা যন্ত্রণা কমতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, শুধু মাথা যন্ত্রণা নয়, যে কোনও ধরনের ব্যথা কমাতেই এই পানীয়টি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর যেমনটা আপনাদের সবারই জানা আছে যে শীতকালে চোট-আঘাত লাগার আশঙ্কা বাড়ে। তাই এই সময় হলুদ-দুধের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা মাস্ট!