Just In
- 3 hrs ago প্রচণ্ড গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে খান সুপারফুড চিয়া সিড!
- 5 hrs ago কাঠফাটা গরমে শরীরে জলের ঘাটতি পূরণ করবে এই ফলগুলি!
- 7 hrs ago নতুন কাজে সাফল্য বৃষ ও কর্কটের, ৫ রাশির জন্য শুভ আজকের দিন, জানতে দেখুন রাশিফল
- 23 hrs ago অতিরিক্ত দই, বিস্কুট খাচ্ছেন? আপনার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, সতর্ক থাকুন
চিকিৎসকেরা নিয়মিত ১৫ মিনিট করে হাঁটার পরামর্শ কেন দিচ্ছেন জানেন?
চিকিৎসকদের মতে নিয়মিত ১৫-২০ মিনিট করে হাঁটলে শুধু ওজন কমে না। সেই সঙ্গে ওবেসিটির সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি মারণ রোগই দূরে পালায়। ফলে অসময়ে হঠাৎ মৃত্যুর আশঙ্কা কমে চোখে পরার মতো।
ওজন বাড়লে বাড়ে হার্ট অ্যাটাক, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ এবং স্ট্রোকের মতো মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা। আর গত কয়েক দশকে আমাদের দেশে যে হারে ওবেসিটির সমস্যা বেড়েছে, তাতে আম আদমির কপালে ভাঁজ পরতে বাধ্য। পরিসংখ্যানের দিকে নজর ফেরালে জানতে পারবেন মোটা মানুষের সংখ্যার বিচারে আমাদের দেশের স্থান পাঁচ নম্বরে। এমন পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় সাবধানতা না নিলে কিন্তু বেজায় বিপদ!
এখন প্রশ্ন হল অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলার সবথেকে সহজ উপায় কী? এক্ষেত্রে হাঁটার কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে। কারণ চিকিৎসকদের মতে নিয়মিত ১৫-২০ মিনিট করে হাঁটলে শুধু ওজন কমে না। সেই সঙ্গে ওবেসিটির সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি মারণ রোগই দূরে পালায়। ফলে অসময়ে হঠাৎ মৃত্যুর আশঙ্কা কমে চোখে পরার মতো।
প্রসঙ্গত, নিয়মিত অল্প-বিস্তর হাঁটাহাঁটি শুরু করলে যে যে উপকারগুলি পাওয়া যায়, সেগুলি হল...
১. হাড়ের ক্ষমতা বাড়ে:
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাড়ের ক্ষমতা কমে যাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু আপনি যদি চান, এমনটা আপনার সঙ্গে নাও হতে পারে। কীভাবে? নিয়মিত হাঁটাহাঁটি শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবেই মিলবে। কারণ হাঁটার সময় বোন ডেনসিটি কমে যাওয়ার আশঙ্কা কমে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হাড় দুর্বল হয়ে পরার আশঙ্কা কমে। সেই সঙ্গে কমে অস্টিওপোরোসিস মতো হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও।
২. ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ দূরে থাকে:
গত ১০ বছরে আমাদের দেশের প্রতিটি কোণায় যে হারে ক্যান্সার রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে, তাতে হাঁটার প্রয়োজনীয়তা বেড়েছে কয়েক গুণ। কারণ ২০১২ সালে হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটির ওমেনস হেল্থ স্টাডিতে দেখা গেছে সপ্তাহে ১-৩ ঘন্টা হাঁটার অভ্যাস করলে ব্রেস্ট এবং ইউটেরাইন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা চোখে পরার মতো কমে। তাই এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে যদি সুস্থভাবে বাঁচতে চান, তাহলে নিয়মিত কয়েক মিনিট হাঁটার অভ্যাস করুন। দেখবেন উপকার পাবেন।
৩. হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা কমে:
হাওয়ার্ড মেডিকেল স্কুলের করা এক গবেষণা অনুসারে সপ্তাহে মাত্র আড়াই ঘন্টা হাঁটলে হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৩০ শতাংশ কমে যায়। কমে স্ট্রোকেরও সম্ভাবনাও। আসলে হাঁটার সময় সারা শরীরে রক্তের প্রবাহের এতটাই উন্নতি ঘটে যে স্বাভাবিকবাবেই হার্ট চাঙ্গা হয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কেও রক্তের সরবরাহে উন্নতি ঘটে। ফলে স্ট্রোকের আশঙ্কাও কমে।
৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়ে ওঠে:
সুস্থ ভাবে দীর্ঘদিন বাঁচতে চান কি? উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, তাহলে নিয়মিত ৩০-৪০ মিনিট হাঁটা শুরু করুন। দেখবেন হাতেনাতে উপকার মিলবে। কারণ প্রতিদিন হাঁটলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমটা বাড়তে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে নানাবিধ সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও প্রায় ৪৫ শতাংশ হ্রাস পায়।
৫. ওজন হ্রাস পায়:
২০১৪ সালে হওয়া একটি গবেষণা অনুসারে মেয়েরা যদি প্রতিদিন ব্রিস্ক ওয়াকিং বা হলকা চালে হাঁটাহাঁটি করেন, তাহলে ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কা প্রায় ৫ শাতংশ কমে যায়। আর যেমনটা আপনাদের সকলেরই জানা আছে যে ওজন বৃদ্ধির সঙ্গে একাধিক মারণ রোগের সরাসরি যোগ রয়েছে। তাই ওজন একবার যদি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে, তাহলে আয়ু যে স্বাভাবিক ভাবেই বৃদ্ধি পায়, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
৬. ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায়:
২০১১ সালে ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সে প্রকাশিত এক গবেষণা পত্র অনুসারে সপ্তাহে ৩-৪ দিন ৩০-৪০ মিনিট হাঁটলে ব্রেনের হিপোকম্পাস অংশটির ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। মস্তিষ্কের এই অংশটি আমাদের স্মৃতিশক্তির ভান্ডার। তাই তো হিপোকম্পাসের কর্মক্ষমতা বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই মেমরি পাওয়ার বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে বুদ্ধির ধারও বাড়তে শুরু করে।
৭. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসে:
পরিবারে কি ব্লাড প্রেসার রোগের লম্বা ইতিহাস রয়েছে? তাহলে যে বন্ধু প্রতিদিন কম করে ১০-২০ মিনিট হাঁটতেই হবে। কারণ একাধিক গবেষণা বলছে হাঁটাহাটির অভ্যাস করলে রক্তের প্রবাহে উন্নতি ঘটে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ধমনীর দেওয়ালে চাপ কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে কমে ব্লাড প্রেসারও।
৮. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে:
নিয়মিত হাঁটলে হজমে সহায়ক পাচক রসের ক্ষরণ বাড়তে শুরু করে। ফলে বদহজম এবং গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি ব্লটিং, কনস্টিপেশন, ডায়ারিয়া এবং কোলন ক্যান্সারের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও হ্রাস পায়।
৯. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে:
আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন প্রকাশ করা রিপোর্ট অনুসারে নিয়মিত ১০-৩০ মিনিট পর্যন্ত হাঁটার অভ্যাস করলে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়ে। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত ২৪০০ স্টেপস থেকে শুরু করে যদি ৬৪০০ স্টেপস নিতে পারেন, তাহলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস ধারে কাছে আসার কোনও সম্ভাবনাই থাকে না।
১০. সারা শরীরে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের প্রভাব বেড়ে যায়:
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত হাঁটলে মস্তিষ্কের পাশাপাশি সারা শরীরে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের প্রভাব বেড়ে যায়। ফলে দেহের প্রতিটি অঙ্গের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। আর এমনটা হওয়ার কারণে স্বাভাবিকভাবেই ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।