Just In
জল খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানা আছে?
তেষ্টা মেটাতে জলের কোনও বিকল্প নেই...! এই কথাটা সেই ছোট বেলা থেকে শুনে আসছি এবং সেই মতো যখনই গলা শোকায়, তখনই পরিমাণ মতো জল শরীরের অন্দরে প্রবেশ ঘটিয়ে শুকিয়ে যাওয়া দেহকে আবার তরতাজা করে তুলি।
তেষ্টা মেটাতে জলের কোনও বিকল্প নেই...! এই কথাটা সেই ছোট বেলা থেকে শুনে আসছি এবং সেই মতো যখনই গলা শোকায়, তখনই পরিমাণ মতো জল শরীরের অন্দরে প্রবেশ ঘটিয়ে শুকিয়ে যাওয়া দেহকে আবার তরতাজা করে তুলি। কিন্তু জল তেষ্টা যখন পায়, তখন কি আমরা ঠিক পদ্ধতি মেনে জলপান করি?
একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে বেশিরভাগই জানেন না যে ঠিক পদ্ধতিতে জলপান না করলে শরীরের কোনও উপকারই হয় না। তাই তো তেষ্টা মিটলেও শরীরের অন্দরে প্রবেশ করা জল আদৌ আমাদের দেহের কোনও কাজে লাগে কিনা, সে বিষয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
বলেন কী মশাই! জল খাওয়ারও নিয়ম আছে? একেবারেই! একথা ভুলে গেলে চলবে না যে মানব শরীরের ৬০-৭০ শতাংশই জল দিয়ে তৈরি। তাই শরীরের প্রতি মুহূর্তে জলের প্রয়োজন পরে। আর জলের এই চাহিদা যদি পূরণ করা না যায়, তাহলে কিন্তু বিপদ! তাই শরীরকে দীর্ঘদিন কর্মক্ষম এবং সচল রাখতে ঠিক ঠিক নিয়ম মেনে দিনে কম করে ৩-৪ লিটার জল পান করতেই হবে।
প্রসঙ্গত, জল পানের সময় সাধারণত যে যে বিষয়গুলি মাথায় রাখতে হবে, সেগুলি হল...
১. একেবারে অনেক পরিমাণে জল পান চলবে না:
অনেকই আছে যারা জল পানের সময় একেবারে অনেক মাত্রায় জল পান করে থাকেন এবং এমনটা করতে গিয়ে জল পায় গিলে গিলে খান। এমনটা করা কিন্তু একেবারেই উচিত নয়। কারণ এইভাবে জল খেলে শরীরের অন্দরে হঠাৎ করে চাপ খুব বেড়ে যায়, ফলে নানাবিধ অঙ্গের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই সব সময় অল্প অল্প করে জল পান করতে হবে। ঠিক যেমনভাবে আমরা খাবার খেয়ে থাকি। খাওয়ার সময় কি আমরা একবারে অনেকটা করে খাই, না তো! ঠিক একই নিয়ম জল পানের সময়ও মনে রাখতে হবে।
২. কখন তেষ্টা পাচ্ছে তা বুঝতে হবে:
শরীরে জলের পরিমাণ কমতে থাকলে নানাবিধ লক্ষণের প্রকাশ ঘটে থাকে। যেমন ধরুন প্রস্রাব হলুদ হতে থাকে, সেই সঙ্গে ঠোঁট এবং গলা শুকিয়ে যায়। এই ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পেলে সঙ্গে সঙ্গে জল পান করাটা জরুরি। প্রসঙ্গত, অনেক বাচ্চাই এই সম্পর্কে জানেন না। তাদেরও এইসব লক্ষণের বিষয়ে জানাতে হবে। কারণ এই বিষয়ে যত সচেতনতা বাড়বে, তত রোগের প্রকোপ কমতে থাকবে। কারণ শরীরকে চাঙ্গা রাখতে জল বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৩. ভুলেও দাঁড়িয়ে জল খাবেন না:
শরীরের কথা ভেবে এই বিষয়টা সর্বক্ষণ মনে রাখতে হবে যে ভুলেও দাঁড়িয়ে জল পান করা চলবে না। কারণ এমনটা করলে দেহের অন্দরে জলের ভারসাম্য ঠিক থাকে না। ফলে জয়েন্টে জল জমে গিয়ে আর্থ্রাইটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাই যতই ব্যস্ততা থাকুক না কেন, বসে জল খেতে হবে। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে বসে জল পান করলে নার্ভাস সিস্টেম এবং পেশীর কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতারও উন্নতি ঘটে।
৪. হলকা গরম জল পান করা শুরু করুন:
গরমের দেশে থাকার কারণে আমাদের গলা দিয়ে ঠান্ডা জল ব্যতীত আর কিছুই নামতে চায় না। কিন্তু বিজ্ঞান বলছে ঠান্ডা জলের পরিবর্তে যদি হলকা গরম জল পান করা শুরু করতে পারেন, তাহলে শরীরের নানা উপকার হয়। আসলে এমনটা করলে একদিকে যেমন হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে, তেমনি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে শুরু করে এবং মেটাবলিজেম উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যাও কমতে শুরু করে। এক কথায় হলকা গরম জল শুধু তেষ্টা মেটায় না, সেই সঙ্গে শরীরের দেখভালেও বিশেষ ভূমিকা নেয়।
৫. সকালে ঘুম থেকে উঠেই জল পান জরুরি:
এমনটা করলে শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানেরা বেরিয়ে যায়। ফলে রোগভোগের আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। এই কারণেই তো ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে কম করে ২ কাপ জল খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে সক্কাল সক্কাল জল পানের অভ্যাস করলে কিডনি এবং ইনটেস্টাইনের কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।
৬. খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জল খাবেন না যেন:
চিকিৎসকেদের মতে খাবার খাওয়ার কম করে ১-২ ঘন্টা পর জল খাওয়া উচিত। এমনটা না করলে হজমে সহায়ক পাচক রসের কর্মক্ষমতা কমতে শুরু করে। ফলে হজম ঠিক মতো না হাওয়ার কারণে বদ-হজম এবং গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাই ভুলেও খাওয়ার সঙ্গে জল পান করবেন না যেন!