Just In
- 10 hrs ago ঠাকুরকে নিত্যভোগ দেওয়ার সময় ঘণ্টা বাজে কেন? জানেন কি এর পিছনের রহস্য
- 11 hrs ago প্রখর রোদ থেকে স্বস্তি পেতে বাড়িতেই বানিয়ে নিন এই শরবতগুলি, ঠান্ডা রাখবে শরীরও
- 14 hrs ago গরমে এই পানীয়গুলি খেলে আপনিও থাকবেন হাইড্রেটেড ও সতেজ
- 16 hrs ago কাঠফাটা রোদ থেকে বাঁচতে কী করবেন? এড়িয়ে চলুন চা-কফি
প্রতিদিন গরম ভাতের সঙ্গে দু টুকরো কুমড়ো ভাজা খাওয়া উচিত কেন জানা আছে?
মাত্র ১০০ গ্রাম কুমড়ো খেলেই শরীরের অন্দরে ভিটামিনের চাহিদা তো মিটে যায়ই, সেই সঙ্গে ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম, এমনকি পটাশিয়ামের মতো খনিজের ঘাটতিও মেটে।
বাঙালিদের পাতে জায়গা করে নেয় ঠিকই, তবে এই সবজিটির অবস্থা অনেকটা "সাইড অ্যাকটার"দের মতো, মানে থাকলে ভাল, না থাকলেও মন্দো নয়! কিন্তু যদি শারীরিক উপাকারিতার দিক থেকে বলেন, তাহলে কুমড়োকে "গাব্বার" বলা যেতেই পারে! কারণ গবেষণা বলছে মাত্র ১০০ গ্রাম কুমড়ো খেলেই শরীরের অন্দরে ভিটামিনের চাহিদা তো মিটে যায়ই, সেই সঙ্গে ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম, এমনকি পটাশিয়ামের মতো খনিজের ঘাটতিও মেটে, যা হার্টকে চাঙ্গা রাখার পাশাপাশি ক্যান্সারের মতো মারণ রোগকে দূরে রাখতে এবং আরও নানাবিধ ছোট-বড় রোগের বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো আজকাল চিকিৎসকেরা প্রতিদিন মোটা মোটা দু টোকরো কুমড়ো ভাজা খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। আর যদি সেই ভাজা কুমড়ো, গরম গরম ভাত আর ঘিয়ের সঙ্গে পরিবেশন করা হয়, তাহলে তো কথাই নেই!
প্রসঙ্গত, বাঙালি খাদ্যরসিকদের মাঝে "নট সো পপুলার" এই সবজিটি সাধারণত শরীরের যে যে উপকারগুলি করে থাকে, সেগুলি হল...
১. ডায়াবেটিসের মতো রোগ ধারে কাছে আসতে পারে না:
বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে রোজের ডায়েটে কুমড়োকে জায়গা করে দিলে নানা কারণে দেহের অন্দরে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা প্রায় থাকে না বললেই চলে। তাই তো বলি বন্ধু, যাদের পরিবারে এই মারণ রোগটির ইতিহাস রয়েছে,তারা শরীরকে চাঙ্গা রাখতে কুমড়োর সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতে ভুলবেন না যেন!
২. ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়:
৩০ পেরলেও ত্বকের বয়স ২০-তেই আটকে থাকুক, এমনটা যদি চান, তাহলে কুমড়ো খেতে ভুলবেন না! কারণ এই সবজিটির অন্দরে উপস্থিত বিটা-ক্যারোটিন শরীর প্রবেশ করা মাত্র ত্বকের অন্দরে কোলাজেনের উৎপাদন বেড়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বক উজ্জ্বল এবং প্রাণবন্ত হয়ে উঠতে সময় লাগে না। অন্যদিকে কুমড়োর অন্দরে উপস্থিত ভিটামিন এ এবং সি বলিরেখা কমাতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বকের বয়স কমে চোখে পরার মতো।
৩. মানসিক অবসাদের প্রকোপ কমে:
কুমড়ো এবং তার বীজে উপস্থিত ট্রাইপটোফিন যে মুহূর্তে শরীরে প্রবেশ করে, অমনি দেহের অন্দরে সেরাটোনিন নামর একটি "ফিল গুড" হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে মন চাঙ্গা হয়ে উঠতে সময় লাগে না। আর এমনটা যখন হয়, তখন মানসিক অবসাদের প্রকোপ যেমন কমে, তেমনি স্ট্রেস লেভেলও তলানিতে এসে ঠেকে। ফলে জীবন অনন্দে ভরে উঠতে সময় লাগে না।
৪. ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে:
কুমড়োর অন্দরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ডায়াটারি ফাইবার, যা শরীরে প্রবেশ করার পর একদিকে যেমন নানাবিধ পেটের রোগের প্রকোপ কমায়, তেমনি অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরিয়ে রাখে, ফলে ক্ষিদে কমে যাওয়ার কারণে শরীরে ক্যালরির প্রবেশ কমে আসে। আর যেমনটা সবারই জানা আছে যে ক্যালরির প্রবেশ কমতে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কাও কমে যায়। প্রসঙ্গত, ডায়াটারি ফাইবার মেটাবলিজম রেট বাড়ানোর মধ্যে দিয়েও ওজন হ্রাসে সাহায্য করে থাকে।
৫. হার্টের ক্ষমতা বাড়ে:
হাওয়ার্ড ইউনির্ভাসিটির গবেষকদের করা এক পরীক্ষায় দেখা গেছে শরীরে ডায়াটারি ফাইবারের মাত্রা বাড়তে শুরু করলে কোনও ধরনের করনারি আর্টারি ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৪০ শতাংশ কমে যায়। সেই সঙ্গে হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনাও হ্রাস পায়। তাই তো এই উপাদানটির মাত্রা যাতে শরীরে কোনও কম না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা একান্ত প্রয়োজন। আর সেই কারণেই তো নিয়মিত কুমড়ো খাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ এই সবজিতে যে পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, তা হার্টের খেয়াল রাখার জন্য যথেষ্ট।
৬. দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে:
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে শরীরে যত ভিটামিন এ-এর মাত্রা বাড়তে থাকে, তত দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটতে থাকে। বিশেষত ছানি এবং গ্লকোমার মতো চোখের রোগকে দূরে রাখতে এই ভিটামিনটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর যেমনটা আগেই আলোচনা করা হয়েছে যে কুমড়োয় প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ভিটামিন এ, তাই তো রোজের ডায়েটে এই সবজিটিকে রাখা শুরু করলে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। প্রসঙ্গত, যারা সারাক্ষণ কম্পিউটার বা টিভির সামনে বসে থাকেন, তাদের তো এই কারণেই বেশি করে কুমড়ো খাওয়া শুরু করা উচিত। কারণ এমনটা করলে ডিজিটাল স্ক্রিনের খারাপ প্রভাব চোখের উপর পরলেও দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটে না।
৭. ইনসমনিয়ার মতো সমস্যা দূর হয়:
শরীর এবং মস্তিষ্ককে চাঙ্গা রাখতে ঘুমের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই তো দিনের পর দিন ঠিক মতো ঘুম না হলে শরীর তো ভাঙতে শুরু করেই, সেই সঙ্গে নানাবিধ জটিল রোগও এসে বাসা বাঁধে শরীরে। তাই আপনিও যদি ইনসমনিয়াক হয়ে থাকে, তাহলে পেঁপে বীজ খাওয়া শুরু করতে একেবারে দেরি করবেন না। কারণ এর মধ্যে রয়েছে ট্রাইপটোফেন নামক একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড, যা শরীরে প্রবেশ করার পর সেরাটোনিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে ঘুম আসতে একেবারেই সময় লাগে না।
৮. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়:
নিয়মিত কুমড়ো খেলে শরীরে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। এই দুটি উপাদান দেহের রোগ প্রতিরোধী সিস্টেমকে এতটা শক্তিশালী করে তোলে যে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষার সুযোগ পায় না। শুধু তাই নয়, কোনও ধরনের সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
৯. ব্লাড প্রেসার কন্ট্রোলে চলে আসে:
পরিবারে ব্লাড প্রেসারের মতো রোগের ইতিহাস আছে নাকি? যদি উত্তর হ্যাঁ হয়, তাহলে বন্ধু, কুমড়ো বীজের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতে ভুলবেন না যেন! কারণ এই প্রকৃতিক উপাদানটি নিয়মিত খাওয়া শুরু করলে দেহের অন্দরে ফাইটোইস্ট্রোজেনের মাত্রা বাড়তে শুরু করে, যা রক্তচাপকে স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
১০. ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ দূরে পালায়:
আমাদের দেশে প্রতি বছর যে হারে ক্যান্সার রোগের প্রকোপ বাড়ছে, তাতে কুমড়ো খাওয়ার প্রয়োজনও যে বেড়েছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কারণ এই সবজিটির অন্দরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা দেহের অন্দরে থাকা ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানদের বের করে দেয়। ফলে ক্যান্সার সেলের জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।