Just In
এই গরমে আইসক্রিম খেতে মানা করা হচ্ছে কেন জানেন?
যতই গরম লাগুক না কেন ভুলেও আইসক্রিম খাবেন না যেন! কারণ বেশ কিছু গবেষণার পর একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে সুস্বাদু এই খাবারটি শরীরের কোনও উপকারেই লাগে না।
যতই গরম লাগুক না কেন ভুলেও আইসক্রিম খাবেন না যেন! কারণ বেশ কিছু গবেষণার পর একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে সুস্বাদু এই খাবারটি শরীরের কোনও উপকারেই লাগে না। বরং এতমাত্রায় ক্ষতি করে যে নানাবিধ রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।
বিশেষজ্ঞরা সেই সব খাবারকে বিষ হিসেবে গণ্য করে থাকেন, যা খাওয়া মাত্র সঙ্গে সঙ্গে না হলেও আয়ু কমে চোখে পরার মতো। আর দুর্ভাগ্য়ের বিষয় আইসক্রিম তাদের মধ্যে অন্যতম। কারণ তুল্য মূল্য বিচারে জিভে জল আনা এই ডেজার্টটির যতটা না উপকারিতা, অপকারিতা তার থেকে অনেক বেশি। আর ৮-৮০ যেহেতু এই খাবারটি খেতে ভালবাসে তাই আইসক্রিম সম্পর্কে সচেতন হওয়াটা একান্ত প্রয়োজন। না হলে কিন্তু...
১. ওজন বৃদ্ধি পায়:
যে যে উপকারণ দিয়ে সাধারণত আইসক্রিম বানানো হয়ে থাকে তাতে প্রচুর মাত্রায় স্টাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা শরীরে এনার্জির ঘাটতি দূর করার পাশাপাশি বিশেষ কিছু উপকারি এনজাইমের উৎপাদনে এবং স্ট্রেসের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে বাঁচাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। কিন্তু সেই সঙ্গে শরীরের ওজন বৃদ্ধিও ঘটায়। আর একথা তো সকলেরই জানা আছে যে অতিরিক্ত ওজন মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। কারণ ওজন বাড়ছে মানে শরীরে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এই রোগগুলি যে সবকটাই হটাৎ মৃত্যু ঢেকে আনে, সে সম্পর্কে নিশ্চয় সবাই জানেন। তাই ক্ষণিকের অনন্দের জন্য জীবনকে বিপদে ফেলে দেওয়া মনে হয় না বুদ্ধি মানের কাজ।
২. খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে:
হাফ কাপ ভ্যানিলা আইসক্রিমে কমবেশি ২৫ এম জি কোলেস্টেরল থাকে। তাহলে এবার ভাবুন, একটা পুরো কাপ অথবা একটা মোটা আইস ক্রিম বার খেলে কী পরিমাণে খারাপ কোলেস্টেরল শরীরে প্রবেশ করে। প্রসঙ্গত, দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে রক্তসরবরাহে ব্যাঘাত ঘটে। ফলে হটাৎ করে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।
৩. ডায়াবেটিস রোগ আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে:
আইসক্রিমে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে, যা শরীরে ক্যালরির মাত্রার বৃদ্ধি ঘাটায়। আর ক্যালরি যত বৃদ্ধি পাবে, তত ওজন বাড়বে। আর ওজন বাড়লে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়বে। প্রসঙ্গত, আমাদের দেশ বর্তমানে ডায়াবেটিস ক্যাপিটালে পরিণত হয়েছে। এমন অবস্থায় যদি প্রয়োজনীয় সাবধানতা না নেওয়া যায়, তাহলে কিন্তু বেজায় বিপদ!
৪. মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি হয়:
একাধিক স্টাডিতে দেখা গেছে আইসক্রিম খাওয়া মাত্র বেশ কিছু নার্ভের উপর এত মাত্রায় খারাপ প্রভাব পরে যে ক্রণিক মাথা যন্ত্রণা শুরু হয়। সেই সঙ্গে ব্রেন পাওয়ারও কমতে শুরু করে। ফলে স্মৃতিশক্তিও কমে চোখে পরার মতো। তাই কম বয়সেই যদি নানাবিধ ব্রেন ডিজিজে আক্রান্ত হতে না চান, তাহলে আইসক্রিম খাওয়া কমান। না হলে কিন্তু...!
এত কিছুর পরেও একটা বিষয় মানতেই হবে যে আইসক্রিম খেলে শরীরের নানাবিধ ক্ষতি হলেও এই খাবারটি বেশ কিছু উপকারেও লেগে থাকে। যেমন ধরুন...
১. এনার্জির ঘাটতি দূর হয়:
দেহকে সচল রাখতে মূলত যে উপদানটির প্রয়োজন পরে তা হল কার্বোহাইড্রেট। আর আইসত্রিমে এটি রয়েছে প্রচুর পরিমাণ। তাই এটি খাওয়া মাত্র আমাদের শরীরের অনন্দের এনার্জির ঘাটতি দূর হয়। ফলে দেহের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, মাত্র হাফ কাপ আইসক্রিমে প্রায় ১৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে, যা শরীরকে কয়েক ঘন্টা পর্যন্ত অ্যাকটিভ রাখতে পারে। তাই এবার থেকে কাজ করতে করতে যখনই ক্লান্ত বোধ করবেন, তখন ইচ্ছা হলে অল্প করে আইসক্রিম খেতেই পারেন। দেখবেন উপকার পাবেন। তবে বেশি মাত্রায় খেলে কিন্তু বিপদ!
২. ভিটামিনের ঘাটতি মেটে:
নিশ্চয় অবাক হচ্ছেন শুনে? কিন্তু এই তথ্যের মধ্যে কোনও ভুল নেই যে প্রচন্ড তাপ প্রবাহের সময় শরীর এবং মনকে শান্ত করার পাশাপাশি পুষ্টির ঘাটতি মেটাতেও এই ডেজার্টটির কোনও বিকল্প হয় না। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি, বি৬, ই, এ, ডি, বি১২ এবং কে। এখানেই শেষ নয়। আইসক্রিমে আরও বেশ কিছু পুষ্টিকর উপাদান থাকে। যেমন- থিয়েমিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, রাইবোফ্লেবিন এবং নিয়াসিন প্রভৃতি। এই সবকটি উপাদানই নানাভাবে শরীরের গঠনে বিশেষ ভূমিকা পলান করে থাকে।