Just In
ওজন বাড়লে কিন্তু ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে তাই সাবধান...!
এই প্রবন্ধে এমন কিছু খাবারের প্রসঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে, যা নিয়মিত খাওয়া শুরু করলে দেহের অন্দরে ওজন হ্রাসের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। ফলে ওজন হ্রাস পেতে সময় লাগে না।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে শরীরের ইতিউতি মেদ জমতে শুরু করলে ফুসফুসের উপর এমন খারাপ প্রভাব পরে যে অ্যাস্থেমার মতো রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা যায় বেড়ে।
জার্নাল পেডিয়াট্রিক্সে প্রকাশিত এই স্টাডিটি অনুসারে ওজন বৃদ্ধি পাওয়া মাত্র শরীরের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে অ্যাস্থেমার মতো রোগ ঘাড়ে চেপে বসে। শুধু তাই নয়, আরও একাধিক মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। যেমন ধরুন-হার্টের অসুখ, স্ট্রোক, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, গলব্লাডারে স্টোন, অস্টিওআর্থ্রাইটিস, ব্রিদিং প্রবলেম প্রভৃতি। এমনকি অতিরিক্ত ওজনের কারণে দেহের অন্দরে ক্যান্সার সেল জন্ম নেওয়ার আশঙ্কাও থাকে। তাই তো বলি বন্ধু, অল্প বয়সেই যদি শয্যাশায়ী হতে না চান, তাহলে এই লেখাটি পড়তে ভুলবেন না যেন!
কিন্তু কী হবে এই লেখাটি পড়ে? আসলে এই প্রবন্ধে এমন কিছু খাবারের প্রসঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে, যা নিয়মিত খাওয়া শুরু করলে দেহের অন্দরে ওজন হ্রাসের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। ফলে ওজন হ্রাস পেতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে ভিতর এবং বাইরে থেকে শরীর এতটাই চাঙ্গা হয়ে ওঠে যে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। তাহলে আর অপেক্ষা কেন, চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই সব খাবারগুলি সম্পর্কে শেগুলি খাওয়া শুরু করলে ওজন কমে তরতরিয়ে...
৮. লাউ:
এই সবজিটিতে উপস্থিত ফাইবার অনেকক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে। ফলে বারে বারে খাওয়ার প্রবণতা যেমন কমে, তেমনি খাবারের পরিমাণও হ্রাস পায়। আর কম খাওয়ার কারণে ওজন কমতে যে সময় লাগে না, তা তো বলাই বাহুল্য! প্রসঙ্গত, লাউয়ে উপস্থিত আরও নানাবিধ উপকারি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর একদিকে যেমন অনিদ্রার মতো সমস্যার প্রকোপ কমায়, তেমনি হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
২. ডালিয়া:
প্রোটিন এবং ফাইবারে ভরপুর এই খাবারটি নিয়মিত ব্রেকফাস্টে খাওয়া শুরু করলে নানাবিধ পেটের রোগের প্রকোপ তো কমেই। সই সঙ্গে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটতেও সময় লাগে না। আর সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ হল দেহের অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলতেও ডালিয়ার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই তো বলি বন্ধু, কয়েক মাসের মধ্যে যদি ওজনকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে হয়, তাহলে ব্রেকফাস্ট বা লাঞ্চের মেনুতে ডালিয়াকে জায়গা করে দিতে ভুলবেন না যেন!
৩. বাটার মিল্ক:
অল্প পরিমাণ দই নিয়ে ভালো করে তা ফেটিয়ে নিতে হবে প্রথমে। তারপর তাতে পরিমাণ মতো জল এবং বিটনুন মিশিয়ে যে পানীয়টি তৈরা হবে, তাই "বাটার মিল্ক" নামে পরিচিত। নিউট্রিশানিস্টদের মতে নিয়মিত ১-২ গ্রাস বাটার মিল্ক খাওয়া শুরু করলে শরীরে ল্যাকটিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যার প্রভাবে ওজন হ্রাসের প্রক্রিয়া এমন ত্বরান্বিত হয় যে বডি ওয়েট নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না।
৪. লঙ্কা:
একেবারে ঠিক শুনেছেন! যে কোনও পদের স্বাদ বাড়াতে ব্যবহৃত এই সবজিটি অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে নানাভাবে কাজে লেগে থাকে। আসলে লঙ্কার শরীরে থাকা ডিহাইড্রোক্যাপসিয়েট নামক একটি উপাদান হজম ক্ষমতাতে এতটাই বাড়িয়ে দেয়ে যে কোনও খাবারই পুরো মাত্রায় হজম হতে সময় লাগে না। ফলে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমার সুযোগ থাকে না। তবে এখানেই শেষ নয়, লঙ্কায় থাকা ভিটামিন সি-ও এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বাড়লে শরীরের মধ্যভাগে মেদ জমার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আর স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ কমাতে পারে একমাত্র ভিটামিন সি। এবার বুঝেছেন তো কিভাবে এই বিশেষ ভিটামিনটি ওবেসিটির লড়ায়ে নিজেকে কাজে লাগায়!
৫. মুগ ডাল:
একদম ঠিক শুনেছেন বন্ধু!বাস্তবিকই শরীরে ইতি-উতি জমে থাকা অতিরিক্ত মেদকে ঝরিয়ে ফেলতে মুগ ডালের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এই প্রাকৃতিক উপাদানটিতে উপস্থিত ভিটামিন এ, বি, সি,ই এবং আরও নানাবিধ উপকারি উপাদান, যেমন- ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম, ফাইবার এবং প্রোটিন, শরীরে প্রবেশ করে এমন খেল দেখায় যে ওজন কমতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে আরও একাধিক শারীরিক উপকার পাওয়া যায়।
৬. ফুলকোপি:
প্রস্টেট, ব্রেস্ট, লাং এবং স্কিন ক্যান্সারকে দূরে রাখার পাশাপাশি এই সবজিটির অন্দরে থাকা ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস, টেস্টোস্টেরন হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। সেই সঙ্গে শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বিও কমিয়ে ফেলে। শুধু তাই নয়, ফুলকপি এবং ওই একই পরিবারের আরেক সদস্য ব্রকিলতে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি-এর সন্ধান পাওয়া যায়, যা স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ কমিয়ে ওজন কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৭.মাশরুম:
গবেষণাতে প্রমাণিত হয়ে গেছে যে ওজন কমাতে বাস্তবিকই এই সবজিটির কোনও বিকল্প হয় না। কারণ এতে থাকা ফাইবার এবং প্রোটিন অতিরিক্ত ওজন ঝরানোর কাজটা করে থাকে। আসলে শরীরে ফাইবার এবং প্রোটিনের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে স্বাভাবিকভাবেই ক্যালরি গ্রহণের ইচ্ছা কমে যায়। আর একথা কে না জানে যে ক্যালরি কম মাত্রায় শরীরে ঢোকা মানে ওজন কমার হার বেড়ে যাওয়া।
৮.পিঁয়াজ:
কুয়েরসেটিন নামে এক ধরনের ফ্লেবোনয়েড একেবারে ঠেসে ঠেসে ভরা রয়েছে পিঁয়াজের শরীরে। এই উপাদানটি চর্বিকে গলিয়ে ফেলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, অতিরিক্ত ওজনের কারণে যাতে কোনও ভাবেই হার্টের ক্ষতি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতেও পিঁয়াজের জুড়ি মেলা ভার। তাই ওজন কমানোর পাশপাশি হার্টকে যদি দীর্ঘকাল সুস্থ রাখতে চান তাহলে আপনার বাজারের থলেতে কোন সবজিটি থাকা মাস্ট, তা নিশ্চয় এতক্ষণে জেনে ফেলেছেন!
৯.পালং শাক:
বাঙালির প্রিয় এই সবজিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় প্রোটিন এবং থাইলেকয়েডস। এই দুটি উপাদানই অনেকক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে। আর পেট ভরা থাকলে অল্প অল্প করে, বারে বারে খাবার খাওয়ার ইচ্ছাও চলে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই অতিরিক্ত খাওয়ার কারণে ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কা হ্রাস পায়। এই প্রসঙ্গে আরেকটা কথা বলে রাখি, সবুজ এই সবজিটি ওজন কমানোর পাশাপাশি শরীরের গঠনে আরও নানাভাবে ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই প্রতিদিন যদি এক বাটি করে পালং শাক খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন, তাহলে শরীর নিয়ে আরও কোনও চিন্তাই থাকে না।
১০. গাজর:
বিটা-ক্যারোটিন এবং ফাইবারে ঠাসা এই সবজিটি খেলে অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে। ফলে বারে বারে খাবার খাওয়ার ইচ্ছা যেমন কমে, তেমনি কাজের ফাঁকে চিপস, কোল ড্রিঙ্কের আনাগোনাও বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ওজন কমতে আর কোনও বাঁধাই থাকে না। প্রসঙ্গত, গাজরে থাকা ডায়াটারি ফাইবার নানাবিধ পেটের রোগ এবং কনস্টিপেশনের মতো সমস্যা কমাতেও বিশেষ ভূমিকা নিয়ে থাকে।