Just In
দিনে মাত্র ১ ঘন্টা সোসাল মিডিয়ায় ঘোরাঘুরি করলেই ঘুম যাবে ছুটে!
এতদিন পর্যন্ত জানা ছিল শোয়ার আগে মোবাইল ব্যবহার করলে ঘুম কমে যায়। কিন্তু সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণা পত্রে যা প্রমাণিত হয়, তা বেজয়া চিন্তার বিষয়।
এতদিন পর্যন্ত জানা ছিল শোয়ার আগে মোবাইল ব্যবহার করলে ঘুম কমে যায়। কিন্তু সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণা পত্রে যা প্রমাণিত হয়, তা বেজয়া চিন্তার বিষয়।
অ্যাকটা পেডিয়ট্রিকার করা এক পরীক্ষায় দেখা গেছে দিনে যারা এক ঘন্টা বা তার বেশি সময় মোবাইল ব্যবহার করেন, বিশেষত সোসাল মিডিয়ায় অ্যাকটিভ থাকেন, তাদের ঘুমের পরিমাণ কমতে থাকে। ফলে ধীরে ধীরে কমে আয়ুও। প্রসঙ্গত, ঘুমানোর সময় আমাদের শরীরের অন্দরে কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে, যার প্রভাবে মস্তিষ্কের ক্ষমতা তো বৃদ্ধি পায়ই, সেই সঙ্গে শরীরের অন্দরের ক্ষমতাও এতটা বেড়ে যায় যে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। আর যদি ঘুমের পরিমাণ কমতে থাকে তাহল কী হয়...? সেক্ষেত্রে শরীর তো ভাঙতে থাকেই, সেই সঙ্গে স্ট্রেস লেভেলও যায় বেড়ে। শুধু তাই নয়, হার্ট, কিডনি এবং পাকস্থিলিরর মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের কর্মক্ষমতাও এতটা কমে যায় যে নানাবিধ মারণ রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।
কিন্তু মোবাইল ব্যবহারের সঙ্গে ঘুমেক কী সম্পর্ক? প্রায় ৫২৪২ জনের উপর পরীক্ষা চালিয়ে গবেষকরা জানতে পেরেছেন যারা সারা দিন ধরে হোয়াটস অ্যাপ, ফেসবুক বা অন্য কোনও ধরনের সোসাল মিডিয়ায় লগইন করে থাকেন, তাদের মস্তিষ্কের অন্দরে কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে। যে কারণে ঘুম আসতে সহায়ক হরমোনের ক্ষরণ কমে যেতে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ঘুমের পরিমাণ যায় কমে।
এখন প্রশ্ন হল যাদের কাজের কারণেই সারাদিন সোসাল মিডিয়ায় অ্যাকটিভ থাকতে হয়, তারা সুস্থ থাকতে কী করবেন? বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত যদি এই প্রবন্ধে আলোচিত খাবার খেতে পারেন, তাহলে হাজারো অত্যাচারের পরেও ঘুমের কোনও ব্যাঘাত হয় না। তাই আপনি যদি অনিদ্রার শিকার হয়ে থাকে। তাহলে এই খাবারগুলি খেতে ভুলবেন না যেন!
১. বাদাম:
দা জার্নাল অব অর্থোমলিকিউলার মেডিসিনে প্রকাশিত একটি স্টাডি অনুসারে শরীরে ম্যাগনেসিয়ামের মাত্রা বাড়তে শুরু করলে ঘুমের মাত্রাও বাড়তে শুরু করে। আর এই প্রকৃতিক উপাদানটিতে এই খনিজটি প্রচুর মাত্রায় রয়েছে। তাই তো নিয়মিত এক মুঠো করে বাদাম খাওয়া শুরু করলে অনিদ্রার সমস্যা ধারে কাছে ঘেঁষারও সুযোগ পায় না।
২. দুধ:
শুতে যাওয়ার আগে প্রতিদিন যদি এক গ্লাস করে দুধ খেতে পারেন, তাহলে সোসাল মিডিয়ায় যতই ঘোরাঘুরি করুন না কেন ঘুম আসতে একেবারেই সমস্যা হয় না। আসলে এই পনীয়টির অন্দরে উপস্থিত ক্যালসিয়াম, শরীরে প্রবেশ করার পর মস্তিষ্কের অন্দরে মেলাটোনিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে ঘুম আসতে সময়ই লাগে না। প্রসঙ্গত, শুধু দুধ নয়, রাত্রে যে কোনও ধরনের দুগ্ধজাত খাবার খেলেই সমান উপকার পাওয়া যায়।
৩. লেটুস শাক:
এই শাকটির অন্দরে রয়েছে ল্যাকটুক্যারিয়ার নামে একটি উপাদান, যা শরীরে প্রবেশ করার পর নার্ভরা শিথিল হয়ে পরে। ফলে ঘুম আসতে কোনও সমস্যাই হয় না। তাই তো এবার থেকে প্রতিদিন রাত্রে শুতে যাওয়ার আগে কয়েকটি লেটুস পাতা, এক কাপ জলে ফুটিয়ে সেই জলটা খেয়ে শুতে যাওয়া শুরু করুন। দেখবেন দারুন উপকার পাবেন।
৪. মাছ:
খেয়াল করে দেখবেন যারা কম-বেশি প্রায় প্রতিদিনই মাছ খেয়ে থাকেন, তাদের সাধারণত অনিদ্রার সমস্যা হয় না। কারণ মাছের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি৬ এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। এই দুটি উপাদান মস্তিষ্কের অন্দরে মেলাটোনিন এবং সেরাটোনিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। এই দুটি হরমোনের ক্ষরণ যত বাড়তে থাকে, তত অনিদ্রার সমস্যা দূরে পালাতে থাকে।
৫. চেরি জুস:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত শুতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস করে চেরির রস খাওয়া শুরু করলে মেলাটোনিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়তে শুরু করে। আর যেমনটা ইতিমধ্যেই জেনে গেছেন যে ঘুমের সঙ্গে এই হরমোনটির সরাসরি যোগ রয়েছে। তাই যাদেরকে কাজে-অকাজে সারাদিন মোবাইল ব্যবহার করতে হয়, তারা রোজের ডেয়েটে চেরির রসকে অন্তর্ভুক্ত করতে ভুলবেন না যেন!
৬. মধু:
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে শুতে যাওয়ার আগে এক চামচ মধু খেয়ে নিলে এই প্রকৃতিক উপাদানটির অন্দরে থাকা প্রকৃতিক সুগার, ট্রাইপোফেনের উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। ফলে ঘুমের রেশ আসতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, এক কাপ ক্যামোমিল চায়ে যদি মধু মিশিয়ে খেতে পারেন, তাহলে এক্ষেত্রে আরও বেশি মাত্রায় উপকার পাওয়া যায়।
৭. ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার:
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে রাতের ডায়েটে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার বেশি মাত্রায় রাখলে শরীরের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে তার প্রভাবে অনিদ্রার সমস্যা দূর হতে সময়ই লাগে না। এই কারণেই তো ইনসমনিয়াকদের বেশি করে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।