Just In
গুড় না খেলে কিন্তু মারাত্নক বিপদ! কেন জানেন?
আর মাত্র এক মাস। তারপরই আগমন ঘটবে উত্তরে হাওয়ার। আর ঠিক তার লেজুড় হয়ে সে সময় বাজার ছেয়ে যাবে নানা রকমের গুড়ে।
আর মাত্র এক মাস। তারপরই আগমন ঘটবে উত্তরে হাওয়ার। আর ঠিক তার লেজুড় হয়ে সে সময় বাজার ছেয়ে যাবে নানা রকমের গুড়ে। তাই তো আজ এই প্রবন্ধে গুড়ের এমন একটা অজানা দিক আপনাদের সামনে তুলে ধরবো, যা শোনর পর আপনাদের চোখ কপালে উঠে যাবে।
মজা করে অনেকেই একটা কথা খুব বলে থাকেন, "যত গুড় দেবে, তত মিষ্টি হবে"। কথাটা একেবারে যে একেবারে ভুল, তা নয়। কারণ বাস্তবিকই শরীরকে যত গুড় দেবেন, তত কিন্তু শরীর সুস্থ হয়ে উঠবে। সেই সঙ্গে বাড়বে আয়ুও।
বলেন কী মশাই! গুড় খেলে শরীরের উপকার হবে? একেবারেই! বেশ কিছু গেবষণায় দেখা গেছে গুড়ের অন্দরে এমন কিছু উপাদান আছে, যা শরীরে প্রবেশ করার পর নানা উপকারে লেগে থাকে। যেমন...
১. কনস্টিপেশন দূর করে:
প্রতিদিন সকালেই কী মারাত্মক কষ্টের সম্মুখিন হতে হয়? তাহলে তো মশাই রাতে গুড় খাওয়া শুরু করতে হবে। কারণ গুড় খাওয়া মাত্র শরীরের অন্দরে বেশ কিছু উপকারি এনজাইমেপ ক্ষরণ বেড়ে যায়, যার প্রভাবে বাওয়েল মুভমেন্টের এতটা উন্নতি ঘটে যে কনস্টপেশনের সমস্যা দূরে পালাতে সময় নেয় না। সেই সঙ্গে বদ-হজম এবং গ্যাস-অম্বলের সমস্যাও দূর হয়।
২.লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়ায়:
প্রথমটায় শুনে বিশ্বাস করতে কষ্ট হলেও একথা একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়ে গেছে যে লিভারকে সুস্থ রাখতে গুড় নানাভাবে সাহায্য করে থাকে। আসলে গুড় শরীরে প্রবেশ করার পর লিভারে জমে থাকা টক্সিক উপাদানদের বের করে দেয়। ফলে একদিকে যেমন লিভারের কোনও রকমের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কমে, তেমনি আরও নানা ধরনের রাগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও হ্রাস পায়।
৩. জ্বরের প্রকোপ কমায়:
এবার থেকে জ্বর-সর্দিকাশি হলেই অল্প করে গুড় খেয়ে নেবেন। তাহলেই দেখবেন শরীর একেবারে চাঙ্গা হয়ে উঠবে। এমনটা কেন হবে জানেন? আসলে গুড় আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তুলতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। ফলে শুধু জ্বর নয়, সব ধরনের ছোট-বড় রোগেরই প্রকোপ কমে যেতে শুরু করে।
৪. রক্তকে পরিশুদ্ধ করে:
চিকিৎসকদের মতে প্রতিদিন যদি গুড় খাওয়া যায়, তাহলে রক্তে ভেসে বেরানো ক্ষতিকর উপাদানগুলি শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রক্ত পরিশুদ্ধ হয়। আর একবার রক্ত তরতাজা হয়ে উঠলে শরীর এমনিতেই চাঙ্গা হয়ে ওঠে।
৫. শরীরের একাধিক অঙ্গকে তরতাজা রাখে:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত অল্প পরিমাণে গুড় খেলে রেসপিরেটরি ট্রাক্ট, লাং, ইন্টেস্টাইন, স্টামাক এবং ফুড পাইপে জমে থাকা টক্সিক উপাদান বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ফলে নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে। প্রধানত এই কারণেই যারা মারাত্মক দূষিত এলাকায় থাকেন, তাদের নিয়মিত গুড় খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
৬. অ্যানিমিয়ার প্রকোপ কমায়:
গুড়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রণ এবং ফলেট, যা শরীর প্রবেশ করা মাত্র লহিত রক্ত কণিকার উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। আর একবার লহিত রক্ত কণিকার ঘাটতি মিটে যাওয়া মানে অ্যানিমিয়ার প্রকোপও কমতে শুরু করে। তাই আপনি যদি এমন কোনও রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তাহলে গুড় খাওয়া শুরু করতে পারেন। দেখবেন উপকার মিলবে।
৭. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে:
গুড়ে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় পটাশিয়াম এবং সোডিয়াম, যা শরীরের অন্দরে অ্যাসিড ব্য়ালেন্স ঠিক রাখার মধ্যে দিয়ে রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই পরিবারে যদি হাই ব্লাড প্রেসার রোগের ইতিহাস থাকে, তাহলে নিয়ম করে গুড়ে খাওয়া শুরু করা উচিত কিন্তু!
৮. শ্বাস কষ্ট দূর করে:
অ্যাস্থেমার কারণে কি জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে? তাহলে একবার গুড় খেয়ে দেখতে পারেন। কারণ বিশেষজ্ঞদের মতে নিয়মিত গুড়ের সঙ্গে তিলের বীজ খেলে ফুসফুসের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে অ্যাস্থেমার প্রকোপ তো কমেই, সেই সঙ্গে ব্রাঙ্কাইটিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
৯. জয়েন্ট পেন কমায়:
প্রতিদিন এক গ্লাস দুধে পরিমাণ মতো গুড় মিশিয়ে খেলে কি হতে পারে জানেন? এমনটা করলে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দূর হয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হাড় এতটাই শক্তপোক্ত হয়ে ওঠে যে জেয়েন্ট পেন তো কমেই, সেই সঙ্গে নানাবিধ হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে।
১০. ওজন কমায়:
গুড়ে থাকা পটাশিয়াম একদিকে যেমন হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়, তেমনি ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্স ঠিক রাখে এবং পেশির গঠনে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে শরীরে ওয়াটার রিটেনশনের মাত্রা কমিয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন বাড়ার আশঙ্কা কমে।