Just In
- 7 hrs ago রোদে বের হলেই মাথা যন্ত্রণা কাবু করে? মাইগ্রেন নয় তো!
- 8 hrs ago শুধু ফ্যাশন নয়, প্রখর রোদ থেকে বাঁচতে পরুন সানগ্লাস!
- 10 hrs ago অসহ্য গরমে সর্দি-কাশিতে ভুগছেন? এই ঘরোয়া প্রতিকারগুলি ট্রাই করুন
- 14 hrs ago কর্মক্ষেত্রে সমস্যা মকরের, ব্যাবসায় আর্থিক লাভ মীনের, কেমন যাবে আজকের দিন? দেখুন রাশিফল
প্রতিদিন নানাভাবে মধু খাওয়ার পরামর্শ কেন দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা জানা আছে?
ভিটামিন, মিনারেল এবং আরও নানাবিধ উপকারি উপাদানে টাসা এই প্রকৃতিক উপাদানটিকে রোজের ডায়েটে জায়গা করে দিলে শরীর ভেতর এবং বাইরে থেকে এতটাই চাঙ্গা হয়ে ওঠে যে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।
মধু! খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি পুষ্টিগুণেও এর কোনও বিকল্প আছে বলে তো মনে হয় না। তাই তো সভ্য সমাজের সেই শুরুর দিন থেকেই আমারা মধু খেতে অভ্যস্ত। কিন্তু দুঃখটা কোথায় জানেন। খাবার হিসেবে মধুর ব্যবহার শুরু হওয়ার পর প্রায় হাজার বছর কেটে গেছে। এই দীর্ঘ সময়ে মানব সভ্যতায় যেমন পরিবর্তন এসেছে, তেমনি আমাদের সুঅভ্যাসগুলির জায়গা নিয়েছে নানাবিধ কুঅভ্যাস। তাই তো আজ প্রায় সিংহভাগের ডেয়েটে মধুর কোনও জায়গা নেই। বরং সেই শূন্যস্থান পূরণ করেছে রকমারি সব জাঙ্ক ফুড। তাই তো ডায়াবেটিস, হার্টের রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং কোলেস্টরলের মতো রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পরেছে এত চোখে পরার মতো।
তাহলে কি বলছেন মধু খেলে এই ধরনের কোনও রোগই ধারে কাছে আসতে পারতো না? একেবারেই! আসলে ভিটামিন, মিনারেল এবং আরও নানাবিধ উপকারি উপাদানে টাসা এই প্রকৃতিক উপাদানটিকে রোজের ডায়েটে জায়গা করে দিলে শরীর ভেতর এবং বাইরে থেকে এতটাই চাঙ্গা হয়ে ওঠে যে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। যেমন ধরুন...
১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে:
কর্মব্যস্ততা এবং আরও নানা কারণে আজকাল অনেকেই ঠিক মতো খাবার খাওয়ার সুয়োগ পান না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হতে শুরু করে। আর একবার যদি শরীরের এই প্রতিরোধী দেওয়াল ভেঙে যায়, তাহলে আর রক্ষে নেই। কারণ সে সময় হাজারো রোগ শরীরে এসে বাসা বাঁধার সুযোগ পেয়ে যায়। তাই তো দেহের ইমিউন সিস্টেমকে চাঙ্গা রাখাটা একান্ত প্রয়োজন। আর এই কাজটি করবেন কিভাবে? খুব সহজ! প্রতিদিন মধু এবং গরম জল খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন রোগের ভোগান্তি আর পোয়াতে হবে না। আসলে মধুতে উপস্থিত অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট শরীরের অন্দরে খারাপ ব্যাকটেরিয়ার বাঁচতে দেয় না। সেই সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে এতটাই চাঙ্গা করে তোলে যে অন্যান্য ক্ষতিকর জীবনুও শরীরের ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।
২. আর্থ্রারাইটিসের মতো রোগের প্রকোপ কমায়:
নিয়মিত গরম জলে পরিমাণ মতো মধু এবং দারচিনি পেস্ট মিশিয়ে খেলে জয়েন্টে প্রদাহ কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে হাড়ও শক্তপোক্ত হয়ে ওঠে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আর্থ্রারাইটিসের মতো রোগের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না।
৩. রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে:
পরিবারে কি এই মারণ রোগের ইতিহাস রয়েছে? তাহলে তো বন্ধু আজ থেকেই দরচিনি এবং মধু খাওয়া শুরু করতে হবে। কারণ এই দুই প্রকৃতিক উপাদান ইনসুলের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।
৪. ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে:
অতিরিক্ত ওজনের কারণে কি চিন্তায় রয়েছেন? ফিকার নট! আজ থেকেই মধু খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন দারুন উপকার পাবেন। কারণ এই প্রকৃতিক উপাদানটির শরীরে থাকা বেশ কিছু উপাকারি উপাদান হজম ক্ষমতাকে এতটা বাড়িয়ে দেয় যে শরীরে মেদ জমার কোনও সুযোগই পায় না। সেই সঙ্গে বদ-হজম এবং গ্যাস-অম্বলের সমস্যাও দূরে পালায়। এক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস গরম জলে পরিমাণ মতো লেবু এবং মধু মিশিয়ে খেতে হবে। কয়েক মাস এই পানীয়টি খেলেই দেখবেন উপকার মিলতে শুরু করেছে।
৫.শরীর বিষ মুক্ত হয়:
খাবারের সঙ্গে তো বটেই, আরও নানাভাবে একাধিক ক্ষতিকর উপাদান আমাদের শরীরে এবং রক্তে প্রতিনিয়ত মিশে চলেছে। এই সব টক্সিক উপাদানগুলিকে যদি শরীর থেকে বার না করা যায়, তাহলেই কিন্তু বিপদ! আর এক্ষেত্রে আপনাকে দারুনভাবে সাহায্য করতে পারে জল এবং মধু। কিভাব? এই পানীয়টি খাওয়ার পর পরই প্রস্রাবের হার বেড়ে যাবে। ফলে কিডনি, প্রস্রাবের মধ্যে দিয়ে শরীরে উপস্থিত এইসব টক্সিক উপাদানদের বের করে দিতে পারবে। ফলে কমবে নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা।
৬. দাঁতের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে:
অল্প পরিমাণ মধুতে দরচিনি ফেলে খাওয়া সুরু করুন। দেখবেন কোনও দিন দাঁতের রোগে ভুগবেন না। কারণ দারচিনি এবং মধুতে এমন কিছু পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে যা শরীরে প্রবেশ করার পর একদিকে যেমন দাঁতকে শক্তপোক্ত করে তো, তেমনি মুখগহ্বরে উপস্থিত ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াদের মেরে ফেলে। ফলে মুখের দুর্গন্ধ যেমন দূর হয়, তেমনি কোনও ধরনের ডেন্টাস প্রবলেম মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কাও আর থাকে না।
৭. এনার্জির ঘাটতি দূর হয়:
প্রতি চামচ মধুতে কম-বেশি ৬৪ ক্যালরি থাকে। এই পরিমাণ ক্যালরি শরীরে প্রবেশ করলে ওজন বাড়ার আশঙ্কা থাকে না। কিন্তু শরীরের সচলতা বৃদ্ধি পায় চোখে পরার মতো। এই কারণেই তো অ্যাথেলিটরা নিয়মিত মধু খেয়ে থাকেন।
৮. ত্বকের সংক্রমণের মতো রোগের প্রকোপ কমে:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে মধুর অন্দরে উপস্থিত একাধিক অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ত্বকের অন্দরে প্রবেশ করে ক্ষতিকর জীবাণুদের মেরে ফলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই তো নিয়মিত মধুর সাহায্যে ত্বকের পরিচর্যা করলে সংক্রমণের ফাঁদে পরার আশঙ্কা হ্রাস পায়।
৯. ভিটামিন এবং মিনারেলের ঘাটতি দূর হয়:
মধুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম এবং আয়রন। এই সবকটি উপাদানই নানাভাবে একাধিক রোগকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। যেমন ধরুন ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে এতটাই শক্তিশালী করে তোলে যে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। অন্যদিকে ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠনে সাহায্য করে। আর আয়রন দেহে রক্তার যোগান ঠিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা নিয়ে থাকে।
১০. অ্যান্টিক্সিডেন্টের চাহিদা মেটে:
ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখতে এবং হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিশেষভাবে সাহায্য করে থাকে। তাই তো শরীরে যাতে এই উপাদানটির কোনও সময় ঘাটতি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। প্রসঙ্গত, মধু হল এমন একটি খাবার যাতে এই উপাদানটি প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। তাই তো বলি বন্ধু, শরীরকে যদি নানাবিধ মারণ রোগের হাত থেকে বাঁচাতে হয়, তাহলে মধুর সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতে ভুলবেন না যেন!
১১. ব্রণর প্রকোপ কমে:
অল্প পরিমাণ মধু নিয়ে সারা মুখে লাগিয়ে ভাল করে মাসাজ করার পর ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে মুখটা ধুয়ে নিন। এইভাবে প্রতিদিন ত্বকের পরিচর্যা করলে ব্রণর প্রকোপ তো কমবেই, সেই সঙ্গে ডার্ক সার্কেল এবং কালো ছোপ ছোপ দাগ মিলিয়ে যেতেও সময় লাগবে না। প্রসঙ্গত, ড্রাই স্কিনের সমস্যা মেটাতেও এই প্রকৃতিক উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে মধুর অন্দরে থাকা একাধিক উপাকারি উপাদান ত্বকের অন্দরে লুকিয়ে থাকা ক্ষতিকর এলিমেন্টদের বের করে দেয়। সেই সঙ্গে স্কিন সেলের ক্ষতও দূর করে। এই কারণেই তো ত্বক সুন্দর হয়ে উঠতে সময় লাগে না।
১২. অ্যালার্জির মতো রোগ দূরে পালায়:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত এক গ্লাস গরম জলে মধু মিশিয়ে পান করলে আমাদের আশেপাশে ঘুরে বেরানো পলেন বা অ্যালার্জি সৃষ্টিকারি উপাদানগুলি সেভাবে আমাদের উপর কোনও প্রভাব ফেলতে পারে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই অ্যালার্জির প্রভাব কমতে শুরু করে।
১৩. বলিরেখা সব গায়েব হয়ে যায়:
স্ট্রেস এবং পরিবেশ দূষণের কারণে সময়ের আগেই ত্বক বুড়িয়ে যাওয়ার ঘটনা আজকের দিনে খুব সাধারণ ঘটনা। এমন পরস্থিতিতে ত্বককে সুন্দর এবং প্রাণবন্ত করে তুলতে কেমিকেল মেশানো কসমেটিক্স ব্যবহার না করে মধুর সাহায্য নেওয়া শুরু করুন। দেখবেন দারুন উপাকার পাবেন। কারণ এই প্রকৃতিক উপাদানটির অন্দরে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান ত্বকের হারিয়ে যাওয়া আদ্রতা ফিরিয়ে দেয়। ফলে বলিরেখা কমতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে এক চামচ মধু, সম পরিমাণ পেঁপে, দুধ অথবা দইয়ের একসঙ্গে মিশিয়ে একটি পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। তারপর মিশ্রনটি মুখে লাগিয়ে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করার পর মুখটা ধুয়ে নিতে হবে।
১৪. গলার ব্যথা এবং জ্বর-সর্দির প্রকোপ কমে:
হঠাৎ ঠান্ডা লেগে যাওয়ার কারণে গলায় ব্যথা। সেই সঙ্গে হাঁচি-কাশি? ফিকার নট! এক গ্লাস গরম জলে কয়েক চামচ মধু মিশিয়ে খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবেই মিলবে। প্রসঙ্গত, বুকে সর্দি জমে থাকার মতো সমস্যা কমাতেও মধুর কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।