Just In
পরিবেশ দূষণের কারণে কমছে বুদ্ধি এবং মস্তিষ্কের ক্ষমতাও, বলছে স্টাডি! তাই তো এই খাবারগুলি খেতেই হবে!
পবিশেষ দূষণের কারণে একাধিক মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যেমন বাড়ছে, তেমনি মস্তিষ্কের ক্ষতি হচ্ছে চোখে পরার মতো।
একদল ইংরেজ গবেষকদের করা এক গবেষণায় দেখা গেছে পবিশেষ দূষণের কারণে একাধিক মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যেমন বাড়ছে, তেমনি মস্তিষ্কের ক্ষতি হচ্ছে চোখে পরার মতো। বিশেষত ব্রেন পাওয়ার কমে যাওয়ার কারণে বুদ্ধির ধার তো কমছেই, সেই সঙ্গে স্মৃতিশক্তির উপরও খারাপ প্রভাব পরছে। আর যেমনটা আপনাদের সকলেই জানা আছে যে গত কয়েক বছরে দিল্লির পাশাপাশি আমাদের রাজ্যেও, বিশেষত কলকাতায় পরিবেশ দূষণের মাত্রা বেড়েছে চোখে পরার মতো। তাই তো এমন পরিস্থিতিতে ব্রেন এবং শরীরকে বাঁচাতে এই লেখাটি পড়া ছাড়া কিন্তু আর কোনও উপায় নেই!
কেন এমন কথা বলছি তাই ভাবছেন নিশ্চয়? আসলে এই লেখায় এমন কিছু খাবারের প্রসঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে, যা নিয়মিত খাওয়া শুরু করলে আমাদের শরীর এবং মস্তিষ্কের উপর পরিবেশ দূষণের খারাপ প্রভাব পরার আশঙ্কা যেমন কমে, তেমনি আরও নানাবিধ শারীরিক উপকার পাওয়া যায়। তাই তো বলি বন্ধু, নিজেকে এবং পরিবারের ছোট থেকে বড় সদস্যদের সুস্থ রাখতে বাজারের ব্যাগে জায়গা করে দিতে হবে এই খাবারগুলিকে। না হলে কিন্তু...!
প্রসঙ্গত, যে যে খাবারগুলি এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, সেগুলি হল...
১. ওমেগা ত্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার:
পরিবেশ দূষণের কারণে হার্টের যাতে কোনও ক্ষতি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখে ওমাগা ত্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। তাই তো এমন পরিস্থিতিতে রোজের ডায়েটে যেমন জায়গা করে দিতে হবে মাছকে, তেমনি বেশি করে খেতে হবে রাজমা, মেথি এবং সবুজ শাক-সবজির মতো ওমেগা ত্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবারও।
২. গ্রিন টি:
শরীরকে রোগ মুক্ত রাখতে এই পানীয়টি যে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, সে বিষয়ে নিশ্চয় সবারই জানা আছে। কিন্তু একথা জানেন কি বায়ু দূষণের প্রকোপ থেকে শরীরকে বাঁচাতেও গ্রিন টি নানাভাবে সাহায্য করে থাকে। আসলে গ্রিন টিতে থাকা নানাবিধ কার্যকরি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফুসফুস এবং শরীরের অন্দরে জমতে টক্সিক উপাদানদের বের করে দেয়। ফলে বায়ু দূষণের প্রভাবে শরীর খারাপ হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।
৩. অ্যাভোকাডো:
ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের করা এক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত এই ফলটি খাওয়া শুরু করলে শরীরের অন্দরে এমন কিছু উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পায় যে তার প্রভাবে বায়ু দূষণের কোনও প্রভাব শরীরের উপর পরতে পারে না। বিশেষত ফুসফুসের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা যায় কমে। ফলে অ্যাস্থেমার মতো রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না।
৪. অলিভ অয়েল:
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে অলিভ অয়েলে উপস্থিত অ্যালফা-টোকোফেরল নামক বিশেষ এক ধরনের ভিটামিন ই, ফুসফুসের অন্দরের প্রদাহ কমানোর মধ্যে দিয়ে লাং-এর কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, কুয়াশার হাত থেকে হার্টকে বাঁচাতেও এই তেলটি নানাভাবে সাহায্য করে থাকে। প্রসঙ্গত, আমার বাঙালিরা যে তাপমাত্রায় খাবার রান্না করে থাকি, সেই তাপমাত্রায় অলিভ অয়েলকে ফ্রাই করা সম্ভব নয়। তাই এই তেলটি দিয়ে বাঙালি খাবার বানানো সম্ভব নয়। সেই কারণেই তো নিয়ম করে অলিভ অয়েল ব্যবহার করে বানানো স্যালাড খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।
৫. সাইট্রাস ফল:
পাতি লেবু, কমলা লেবু, মৌসম্বি লেবু এবং কিউই-এর মতো সাইট্রাস ফলে উপস্থিত ভিটামিন সি কুয়াশার হাত থেকে শরীরকে বাঁচাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই সারা শীতকাল জুড়ে যদি ফিট এবং চাঙ্গা থাকতে চান, তাহলে রোজের ডায়াটে এই ফলগুলির কোনওটিকে অন্তর্ভুক্ত করা মাস্ট!
৬. ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার:
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত ভিটামিন ই সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া শুরু করলে বায়ু দূষণের কারণে টিস্যুর কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই নানাবিধ রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা যায় কমে। এই কারণেই তো বাদাম এবং সূর্যমুখি ফুলের বীজ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। কারণ এই দুই প্রকৃতিক উপাদানে প্রচুর মাত্রায় মজুত থাকে ভিটামিন ই। প্রসঙ্গত, আরও যে যে খাবারগুলিতে ভিটামিন ই-এর উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়, সেগুলি হল- সামদ্রিক মাছ, লবঙ্গ, তুলসি পাতা, পালং শাক, পার্সলে শাক প্রভৃতি।
৭. ব্রকলি:
বায়ু দূষণ এবং কুয়াশার হাত থেকে বাঁচাতে ব্রকলির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে ক্রসিফেরাস পরিবারের অন্তর্ভুক্ত এই সবজিটির শরীরে থাকা বেশ কিছু উপকারি উপাদান, কুয়াশার অন্দরে লুকিয়ে থাকা ক্ষতিকারক ওজন গ্যাসের প্রভাব থেকে শরীরকে বাঁচাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে বায়ু দূষণের কারণে শরীরে ভিতরে জমতে থাকা টক্সিক উপাদানদের বার করে দিতেও এই সবজিটি বিশেষ ভূমিকা নেয়। প্রসঙ্গত, যদি ব্রকলি খেতে ইচ্ছা না করে, তাহলে ফুলকপি বা বাঁধাকোপিও খেতে পারেন। কারণ ব্রকলির মতো এই দুই সবজিও একই পরিবারের সদস্য।
৮. টমাটো:
বায়ু দূষণের শরীর থেকে জন্ম নেওয়া কুয়াশার কারণে মূলত ফুসফুসেরই বেশি ক্ষতি হয়ে থাকে। তাই তো এমন খাবার খাওয়া উচিত, যা লাং-কে বিষাক্ত ধোঁয়ার হাত থেকে বাঁচাবে। আর এক্ষেত্রে টমাটোর ভূমিকাকে অস্বীকার করা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। কারণ এই সবজিটির অন্দরে মজুত থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং লাইকোপেন নামক এক ধরনের উপকারি উপাদান ফুসফুসের মধ্যে জমে থাকা বিষাক্ত উপাদানদের বের করে দেয়। সেই সঙ্গে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও বিশেষ ভাবে সাহায্য করে। তাই তো যাদের শ্বাস কষ্ট বা অ্যাস্থেমার মতো রেসপিরেটরি প্রবলেম রয়েছে, তারা যদি নিয়মিত টমাটো খেতে পারেন, তাহলে কিন্তু দারুন উপকার পাবেন।