Just In
Don't Miss
তাড়াহুড়ো করে খেয়েছেন কী মরেছেন!
তাড়াহুড়ো করে খাওয়ার সঙ্গে জীবনহানী কী সম্পর্ক? একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে সময় নিয়ে ধীরে ধীরে না খেলে মেটাবলিক সিনড্রমে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
ব্যস্ত জীবনে শ্বাস নেওয়ার সময় নেই, সেখানে পাত পেরে খাওয়ার সুযোগ কোথায়! কিন্তু মশাই এমন চটজলদি খেলে কিন্তু বেজায় বিপদ। এমনকি মৃত্যু পর্যন্তও হতে পারে!
কিন্তু তাড়াহুড়ো করে খাওয়ার সঙ্গে জীবনহানী কী সম্পর্ক? একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে সময় নিয়ে ধীরে ধীরে না খেলে মেটাবলিক সিনড্রমে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সহজ কথায় চটজলদি খাওয়ার অভ্যাসের কারণে শরীরের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। আর যেমনটা আপনাদের সকলেরই জানা আছে যে ওজন মাত্রা চাড়ালে একে একে ডায়াবেটিস, রক্তচাপ বৃদ্ধি, এমনকী হার্টের রোগ এবং স্ট্রোকের আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। আর এই রোগগুলি সবকটাই যে বেজায় ভয়ঙ্কর, তা নিশ্চয় আর বলে দিতে হবে না।
প্রসঙ্গত, একাধিক কেস স্টাডি চলাকালীন গবেষকরা লক্ষ করেছেন তাড়াহুড়ো করে খেলে ব্লাড সুগারের ওঠানামা এত বেশি মাত্রায় হতে থাকে যে ইনসুলিন রেজিস্টেন্স তৈরি হয়ে যায়। আর এমনটা হওয়া শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল খবর নয়। তাই যতই ব্যবস্থা থাকুন না কেন খাবার খাওয়ার সময় ভুলেও তাড়াহুড়ো করবেন না। বরং যতটা সময় নিয়ে সম্ভব খাবারটা উপভোগ করে খাওয়া চেষ্টা করবেন। এমনটা করলে শরীরে পুষ্টির ঘটতি তো দূর হবেই, সেই সঙ্গে নানাবিধ রোগ ভোগের আশঙ্কাও হ্রাস পাবে।
এখন প্রশ্ন হল, আজকাল নানা কারণে যেভাবে সবাই ব্যস্ত হয়ে পরেছে। তাতে ব্রেকফাস্ট বা লাঞ্চ শান্তি মতো করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখাটা কি আদৌ সম্ভব? অবশ্যই সম্ভব! তবে তার জন্য এই প্রবন্ধে আলোচিত ঘরোয়া টোটকাগুলিকে কাজে লাগাতে হবে। তাহলেই দেখবেন কেল্লাফতে!
এক্ষেত্রে যে পদ্ধতিগুলিকে কাজে লাগিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চালানা হবে, সেগুলি হল...
১. লেবুর রসের সঙ্গে অল্প গরম জল:
এই ফলটিতে থাকা ভিটামিন সি এবং উপকারি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে প্রবেশ করার পর হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটাতে শুরু করে। ফলে ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কা হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে দেহে জমে থাকা অতিরিক্ত মেদ ঝরাতেও এই সাইট্রাস ফলটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। এক্ষেত্রে এক গ্লাস গরম জলে ৩ চামচ লেবুর রস, এক চামচ মধু, হাফ চামচ গোলমরিচ মিশিয়ে সেই জলটা সকালবেলা খালি পেটে পান করতে হবে। প্রতিদিন যদি এই পানীয়টি খেতে পারেন, তাহলে ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কা কমবে।
২. অ্যাপেল সিডার ভিনিগার:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে যে যে প্রকৃতিক উপাদানগুলি দারুন কাজে এসে থাকে, অ্যাপেল সিডার ভিনিগার তাদের মধ্যে অন্যতম। তাই অবেসিটির সমস্যাকে যদি দূরে রাখতে চান, তাহলে প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস জলে ২ চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার মিশিয়ে পান করা শুরু করুন, দেখবেন উপকার মিলবে। প্রসঙ্গত, এই প্রকৃতিক উপাদানটি শরীরে জমে থাকা ফ্যাটেদের ঝরিয়ে দেয়। ফলে ওজন কমার সঙ্গে সঙ্গে নতুন করে চর্বি জমার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
৩. অ্যালো ভেরা:
প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠতে দেরি! তাই নাকে মুখে গুঁজে অফিস যাত্রা কি রোজের রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে? তাহলে যে বন্ধু অ্যালো ভেরার সঙ্গে বন্ধুত্ব করতেই হবে। কারণ একাধিক পরীক্ষা করে দেখা গেছে দুটো অ্যালো ভেরা পাতা থেকে সংগ্রহ করা জেলের সঙ্গে এক কাপ লেবুর রস যোগ করে ২-৩ মিনিট ভাল করে মিশিয়ে তৈরি মিশ্রন টানা এক মাস খেলে ওজন বাড়ার কোনও সম্ভাবনাই থাকে না।
৪. গ্রিন টি:
শরীরকে রোগ মুক্ত রাখার পাশাপাশি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে গ্রিন টি দারুন কাজে আসে। তাই চটজলদি খাবার খাওয়ার অভ্যাস থাকলে দিনে কম করে ২-৩ কাপ এই পানীয় খেতেই হবে। এই নিয়মটি যদি চালিয়ে যেতে পারেন, তাহলে দেখবেন ওজন বৃদ্ধি নিয়ে কোনও দিন আপনার কপালে চিন্তার ভাঁজ পরবে না। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি হওয়া একটি গবেষণায় দেখা গেছে গ্রিন টিতে থাকা "ই জি সি জি" নামক একটি কম্পাউন্ড ওজন বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে থামিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে শরীরে যাতে কোনওভাবেই মেদ জমতে না পারে, সেদিকেও খেয়াল রাখে।
৫. গোলমরিচ:
প্রথমটায় বিশ্বাস করতে কষ্ট হলেও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে গোলমরিচ বাস্তবিকই দারুন কাজে আসে। আসলে এর অন্দরে থাকা ক্যাপসিসিন নামক উপাদান মেদ ঝরানোর পাশাপাশি এনার্জির ঘাটতি দূর করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে প্রতিদিন গোলমরিচ দিয়ে বানানো চা পান যেমন করতে পারেন, তেমনি এক গ্লাস লেবুর রসের সঙ্গে অল্প করে গোলমরিচ মিশিয়েও খেতে পারেন। এই দুটি পদ্ধতিতেই সমান উপকার পাওয়া যায়।
৬. কারি পাতা:
আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ১০ টা কারি পাতা খেলে শুধু ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে না, সেই সঙ্গে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়। আসলে এই পাতাটির অন্দরে বেশ কিছু অ্যান্টি-ওবেসিটি প্রপাটিজ রয়েছে, যা ওজন বৃদ্ধির পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। ফলে মধ্যপ্রদেশ বৃদ্ধির আশঙ্কা একেবারে তলানিতে এসে দাঁড়ায়।