For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts

মন খারাপ হলেই দই খেতে হয় কেন জানেন?

গবেষকরা লক্ষ করে দেখেছেন দইয়ে উপস্থিত ল্যাক্টোব্যাসিলাস, সহজ কথায় উপকারি ব্যাকটেরিয়া শরীরে থাকা মাইক্রোবায়োমের চরিত্র এমনভাবে বদলে দেয় যে ডিপ্রেশন দূরে পালায়।

By Nayan
|

ঝড় উঠেছে। খুব জোরে ঝড় উঠেছে। পাঁজরে এত জোরে ধাক্কা মারছে যে কষ্টটা অর সহ্য হচ্ছে না। খুব...খুব কষ্ট! মনে হচ্ছে দমটা যেন বন্ধ হয়ে যাবে। এদিকে চোখটা ঝাপসা হচ্ছে। কী করি এখন। মনটা যে খারাপ আমার। কিছু করেই তো ঠিক হতে পাচ্ছি না। কয়েকজন বন্ধুকে ফোন করেছিলাম। খুব কাছের বন্ধু। ব্যস্ততার অজুহাতে দেখিয়ে ওরা ফোনটা রেখে দিল। এখন তো ঘরটা কাটতে আসছে আমায়। মনে হচ্ছে আজ আর পারবো না মনের সঙ্গে লড়তে। হার নিশ্চিত!

আরে আরে দাঁড়ান বান্ধু। কী করছেন! হাতের কাছে একটু দই হবে? দই দিয়ে কী হবে! মজা করছেন! আরে না না। একবারেই না! সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে মন খারাপের সময় এক বাটি দই খেলেই কেল্লাফতে! মনের মধ্যে থাকা দুঃখের বিষ তো বেরবেই, সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের অন্দরে বেশ কিছু কেমিকেলের ক্ষরণের কারণে নিমেষে মন ভাল হয়ে যাবে। মুন্নাভাই-এর একবার কেমিকেল লোচা হয়েছিল মনে আছে তো? মন খারাপও এমন এক ধরনের কেমিকেল লোচা, যা দইয়ের দাওয়াইয়ে চটজলদি সেরে যায়। কী মশাই, এবার দই খাবেন তো! তবে তার আগে মন এবং দইয়ের সম্পর্কটা আরও কত গভীরতা একবার জেনে নি। তাহলে আর মনে কোনও সন্দেহ থাকবে না।

গবেষণা কী বলছে?

গবেষণা কী বলছে?

গবেষকরা লক্ষ করে দেখেছেন দইয়ে উপস্থিত ল্যাক্টোব্যাসিলাস, সহজ কথায় উপকারি ব্যাকটেরিয়া শরীরে থাকা মাইক্রোবায়োমের চরিত্র এমনভাবে বদলে দেয় যে ডিপ্রেশন দূরে পালায়। এখানেই শেষ নয়, ডিপ্রেশন বা মন খারাপ তখনই হয়, যখন মস্তিষ্কে বিশেষ কিছু হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এক্ষেত্রেও দই বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। মন খারাপ করা হরমোনকে আক্রমণ করতে "ফিল গুড" হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে ধীরে ধীরে মন খারাপ কমতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, অন্যান্য বেশ কিছু গবষণাতে দেখা গেছে পাকস্থলীতে উপস্থিত মাইক্রোবায়োম মেন্টাল হেল্থের ভাল-মন্দের সঙ্গে অতোপ্রতোভাবে জড়িত। তাই তো দই এবং মন বা মস্তিষ্কের সম্পর্কটাকেও অস্বীকার করা কোনওভাবেই সম্ভব নয়।

আরও কিছু...

আরও কিছু...

দই এবং মন খারপের সম্পর্কটাকে আরও একটু গভীরে গিয়ে দেখা যাক। যে গবেষণার কথা আলোচনা করা হচ্ছে, তাতে দেখা গেছে মন খারাপের সময় শরীরে ল্যাক্টোব্যাসিলাসের পরিমাণ কমে যায়। ফলে কাইনুরেনাইন নামে একটি উপাদানের মাত্রা বাড়তে শুরু করে, যা স্ট্রেস লেভেলকে নিমেষে বাড়িয়ে দেয়। এই সময় যদি কোনও ভাবে শরীরে ল্যাক্টোব্যাসিলাসের মাত্রা বাড়ানো যায়, তাহলেই স্ট্রেস তো কমেই, সঙ্গে অ্যাংজাইটিও কমতে শুরু করে। আর একথা তো নিশ্চয় এতক্ষণে জেনে গেছেন যে দইয়ে প্রচুর পরিমাণে ল্যাক্টোব্যাসিলাস থাকার কারণ মন খারাপের প্রকোপ কমাতে দইয়ের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাহলে মশাই, এবার দই খাবেন তো? নাকি এখনও মনে হচ্ছে আমি মজা করছি!

দইয়ের আরও কিছু উপকারিতা:

দইয়ের আরও কিছু উপকারিতা:

১.হাড়কে শক্তপোক্ত করে:

এক কাপ দই খেলে শরীরে প্রায় ৩০০ গ্রাম ক্যালসিয়ামের প্রবেশ ঘটে। এই পরিমাণ ক্যালসিয়াম যদি প্রতিদিন শরীর পেতে থাকে, তাহলে হাড় এত শক্তপোক্ত হয়ে ওঠে যে কোনও ধরনের হাড়ের রোগ ধারে কাছে ঘেঁষারও সুযোগ পায় না।

২. ওজন কমায়:

নতুন বছরে ওজন কমানো যদি আপনার প্রথম এজেন্ডা হয়, তাহলে এখন থেকেই নিয়মিত দই খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন দারুন উপকার মিলবে। কারণ এই দুগ্ধজাত খাবারটিতে উপস্থিত একাধিক পুষ্টিক উপাদান শরীরে জমে থাকা ফ্যাট সেলেদের গলাতে শুরু করে। ফলে ওজন কমতে একেবারেই সময় লাগে না।

৩. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে:

দইয়ে উপস্থিত পটাশিয়াম শরীরে প্রবেশ করার পর সোডিয়ামের আধিক্য কমাতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। প্রসঙ্গত, শরীরে নুনের পরিমাণ বাড়তে থাকলে ওয়াটার রিটেনশন বেড়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রক্তচাপ বাড়তে শুরু করে।

৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়:

সুস্থভাবে দীর্ঘদিন যদি বাঁচতে চান, তাহলে রোজের ডায়েটে দইয়ের অন্তর্ভুক্তি ঘটানো মাস্ট! কারণ দইয়ে উপস্থিত বেশ কিছু উপাকারি উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে এতটা শক্তিশালী করে তোলে যে ছোট-বড় কোনও কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। ফলে রোগমুক্ত জীবন পাওয়ার স্বপ্ন পূরণ হতে সময় লাগে না।

৫. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়:

দইয়ের মধ্য়ে প্রচুর পরিমাণে উপস্থিত থাকে উপকারি ব্যাকটেরিয়া, যা পাকস্থলির কর্মক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি হজম ক্ষমতার উন্নতিতে এবং নানাবিধ পেটের রোগের প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই আপনি যদি খাদ্যরসিক হয়ে থাকেন, তাহলে রোজ একবাটি করে দই খেতে ভুলবেন না যেন!

Read more about: রোগ শরীর
English summary

দইয়ে উপস্থিত ল্যাক্টোব্যাসিলাস, সহজ কথায় উপকারি ব্যাকটেরিয়া শরীরে থাকা মাইক্রোবায়োমের চরিত্র এমনভাবে বদলে দেয় যে ডিপ্রেশন দূরে পালায়। এখানেই শেষ নয়, ডিপ্রেশন বা মন খারাপ তখনই হয়, যখন মস্তিষ্কে বিশেষ কিছু হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়।

In a recent study, it was found that consuming a diet rich in probiotics is likely to help prevent depression. Probiotics are live bacteria and yeasts that are good for the digestive system and have the ability to keep your gut healthy.
X
Desktop Bottom Promotion