Just In
২ মিনিটেই ডাক্তারের খেল খতম!
সম্প্রতি প্রকাশিত একটি স্টাডি অনুসারে আমাদের দেশের সিংহভাগ ডাক্তারই নাকি রোগীপিছু ২ মিনিটের বেশি খরচ করেন না। এত কম সময়ে কি আদৌ ভাল করে চিকিৎসা করা সম্ভব? এমন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে নানা মহলে।
সম্প্রতি প্রকাশিত একটি স্টাডি অনুসারে আমাদের দেশের সিংহভাগ ডাক্তারই নাকি রোগীপিছু ২ মিনিটের বেশি খরচ করেন না। এত কম সময়ে কি আদৌ ভাল করে চিকিৎসা করা সম্ভব? এমন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে নানা মহলে।
মেডিকেল জার্নাল "বি এম জি ওপেন" এ প্রকাশিত এই স্টাডি অনুসারে পশ্চিমী দেশগুলিতে যেখানে একজন ডাক্তার কম করে ২০ মিনিট খরচ করেন রোগ নির্ধারণের ক্ষেত্রে, সেখানে ভারত, পাকিস্থান এবং বাংলাদেশে মাত্র ২ মিনিটেই নিজের কাজ সেরে ফেলেন ডাক্তার বাবুরা। এমন পরিস্থিতে ছোট ছোট রোগের চিকিৎসায় আদৌ ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত কিনা, সেই প্রশ্ন নিজেকে করার সময় মনে হয় এসে গেছে বন্ধুরা। কারণ বড় কোনও রোগ হলে হাসপাতালে যাওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই। সেখানে এই দু মিনিটের খেল হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশেই কম থাকে। তাই ছোট-বড় রোগকে কিভাবে বাড়ি বসেই সামলানো যায়, সে বিষযে জেনে নেওয়া মনে হয় জরুরি।
এখন নিশ্চয় প্রশ্ন জাগছে মনে যে বাড়িতে বসে ছোট-খাট রোগের চিকিৎসা কিভাবে করবেন, তাই তো? এক্ষেত্রে প্রথমেই আপনাকে যে কাজটা করতে হবে, তা হল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে মারাত্মক শক্তিশালী করে তুলতে হবে। তাহলেই দেখবেন কেল্লাফতে! কারণ পাহারা যখন মজবুত হয়, তখন রোগের পক্ষে ফাঁক গলে শরীরের অন্দরে প্রবেশ করা কোনও মতেই সম্ভব হয়ে ওঠে না। আর এমনটা হলে একদিকে যেমন টাকা বাঁচবে, তেমনি ভুল চিকিৎসার ফাঁদে পরার আশঙ্কাও কমবে।
রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তুলতে হলে নিয়মিত কতগুলি খাবার খেতেই হবে। কারণ একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থার কর্মক্ষমতা বাড়াতে প্রকৃতিক উপাদানের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই তো এক্ষেত্রে যে যে খাবারগুলিকে প্লেটে জায়গা করে দিতেই হবে, সেগুলি হল...
১. সাইট্রাস ফল:
কমলা লেবু, পাতি লেবু অথবা মৌসাম্বি লেবুর সঙ্গে বন্ধুত্ব আছে নাকি? যদি না থাকে, তাহলে আজই কাজটা সেরে ফেলুন। কারণ একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে এই সব সাইট্রাস ফলগুলির শরীরে প্রচুর মাত্রায় মজুত থাকে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তোলার পাশাপাশি সার্বিকভাবে শরীরের গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
২. ক্যাপসিকাম:
সাইট্রাস ফলের থেকে প্রায় দ্বিগুণ বেশি ভিটামিন সি রয়েছে এই সবজির অন্দরে। তাই তো সুস্থ জীবন পাওয়ার স্বপ্ন পূরণের জন্য ডাক্তারের থেকেও বেশি ক্যাপসিকামের উপর ভরসা রাখার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। প্রসঙ্গত, এই সবজিটির শরীরে ভিটামিন সি ছাড়াও রয়েছে প্রচুর মাত্রায় বিটা-ক্যারোটিন, যা শরীরের দেখভালে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৩. ব্রকলি:
ভিটামিন সি, এ, ই, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ এই সবজিটি নানাভাবে শরীরের গঠনে সাহায্য করে থাকে। সেই সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে চাঙ্গা রাখতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। তাই ডাক্তারখানার ঠিকানা যদি ভুলে যেতে চান, তাহলে রোজের ডায়েট থেকে ব্রকলি, ফুলকোপি এবং বাঁধাকোপিকে কখনও বাদ দেবেন না যেন!
৪. রসুন:
বাঙালি আমিষ রান্না এই প্রকৃতিক উপাদানটিকে ছাড়া তৈরি করা এক প্রকার অসম্ভব। তাই খেয়াল করে দেখবেন বাঙালিরা কিন্তু বাকি অনেকের থেকে বেজায় ফিট! আসলে রসুনের অন্দরে থাকা একাধিক উপকারি উপাদান আমাদের শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে ইমিউন পাওয়ার তো বাড়েই। সেই সঙ্গে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে এবং হার্টের কর্মক্ষমতা চোখে পরার মতো বৃদ্ধি পায়। প্রসঙ্গত, ন্যাশনাল সেন্টার ফর কমপ্লিমেন্টারি অ্যান্ড ইন্টেগ্রেটিভ হেলথের প্রকাশ করা রিপোর্ট অনুসারে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর পাশাপাশি আরও নানা ভাবে হার্টেক চাঙ্গা রাখতে রসুন সাহায্য করে থাকে।
৫. আদা:
অসুখ-বিসুখ থেকে যদি দূরে থাকতে চান, তাহলে আদার সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতানো মাস্ট! কারণ এই প্রকৃতিক উপাদানটি শরীরের অন্দরে প্রদাহ কমানোর মধ্যে দিয়ে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে আদার মধ্যে থাকা জিঞ্জেরল নামক এক উপাদান ব্যথা কমাতে, হার্টেক সুস্থ রাখতে, খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে এবং রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তুলতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৬. পালং শাক:
বাঙালির প্রিয় এই শাকটিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি। সেই সঙ্গে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং বিটা-ক্যারোটিন। আর যেমনটা আপনাদের সকলেরই জানা আছে যে এই তিনটি উপাদান নানাভাবে ইমিউনিটি বাড়াতে সাহায্য করে। তাই ডাক্তার বাবুদের দু মিনিটের খেল থেকে যদি বাঁচতে চান, তাহলে পালং শাককে দৈনন্দিন ডায়াটে অন্তর্ভুক্ত করতে ভুলবেন না যেন!
৭. দই:
এই দুগ্ধজাত খারারটিতে উপস্থিত উপকারি ব্যাকটেরিয়া শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে জোরদার করে তুলতে বেজায় কাজে আসে। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতার উন্নতিতে এবং বাওয়ালে মুভমেন্ট ঠিক করতেও সাহায্য করে। প্রসঙ্গত, দইয়ে প্রচুর মাত্রায় মজুত থাকে ভিটামিন ডি। এই ভিটামিনটি হাড়কে শক্তপোক্ত করতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। এবার নিশ্চয় বুঝতে পরেছেন কেন নিয়মিত এক বাটি করে টক দই খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।