Just In
নিয়মিত পুশ আপ করুন, সুস্থ থাকুন!
পুশ আপ করলে সারা শরীরের মাংসপেশির ওপর চাপ পরে। এতে মাংসপেশিতে যে টান পরে, তাতে শরীরের উপকার হয়। এছাড়াও, পুশ আপ করলে হাত, কাঁধ এবং শরীরের নীচের অংশ মজবুত হয়।
জিমে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘাম ঝরানো বা বাড়িতে একটু সময় নিয়ে যোগব্যায়াম অনেকেরই করা হয়ে ওঠে না। আবার এমনও অনেকে আছেন, যারা সময় পেলেই সবকিছু বাদ দিয়ে পুশ আপ করতে শুরু করে দেন। শরীরের ওজনের ভারসাম্য দুহাতের ওপর রেখে পুরো শরীরকে ওপর নিচ করার এই কেরামতিও বেশ কষ্টকর। তবে এই কষ্ট করলেই আসল কেষ্টটি মেলে। দীর্ঘক্ষণ ঘাম ঝরিয়ে, এত কষ্ট করে ঠিক কি ধরণের উপকার মেলে পুশ আপ থেকে? বহু শরীরচর্চা বিশারদদের মতে পুশ আপ করলে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পায়, ক্যালরি ঝরে, মানসিক শক্তি দৃঢ় হয় এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ে। এছাড়াও, গলা থেকে পা অবধি প্রতিটি মাংসপেশি শক্তিশালী হয়ে ওঠে। অনেকেই আছেন যারা অনেকক্ষণ ধরে পুশ আপ করতে পারেন। তবে একদিনে বা কয়েকদিনের মধ্যে অনেকক্ষণ ধরে পুশ আপ করার চেষ্টা না করাই ভাল। ধীরে ধীরে সময় হাতে নিয়ে অনুশীলন করতে করতে তবেই পুশ আপ করার নির্ধারিত সময় বাড়ানো উচিত। তাহলে আর অপেক্ষা কেন, চলুন জেনে নেওয়া যাক নিয়মিত পুশ আপ করলে কি কি উপকার মেলে।
সারা শরীরের ব্যায়াম হয়
পুশ আপ করলে সারা শরীরের মাংসপেশির ওপর চাপ পরে। এতে মাংসপেশিতে যে টান পরে, তাতে শরীরের উপকার হয়। এছাড়াও, পুশ আপ করলে হাত, কাঁধ এবং শরীরের নীচের অংশ মজবুত হয়। শুধু তাই নয়, পুশ আপ মাংসপেশিকে স্থিতিস্থাপক বানাতে সাহায্য করে।
ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে
পুশ আপ করলে আমাদের মাংসপেশির অন্দরে থাকা ফাইবারের উন্নতি ঘটে। এই ফাইবারগুলি প্রত্যেকটিই আণুবীক্ষণিক এক ধরণের স্নায়ু। এই স্নায়ুগুলি আমাদের শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ফলে নিয়মিত পুশ আপ করলে আমাদের শরীরের ভারসাম্য বজায় থাকে। এখানেই শেষ নয়, পুশ আপ সারা শরীরজুড়ে ছড়িয়ে থাকা স্নায়ুদের আরও শক্তিশালী করে তোলে, যা শরীরের গতিবিধি এবং তার ওজনের সঙ্গে খুব তাড়াতাড়ি খাপ খাইয়ে নিতে পারে।
মাংসপেশির ঘনত্ব বজায় থাকে
মানুষের বয়স যত বাড়তে থাকে, তত তার মাংসপেশির ঘনত্ব কমতে থাকে। একইসঙ্গে অল্প পরিমাণ কাজ করতে গিয়ে প্রচুর এনার্জি খরচ হয়ে যায়। এমন ধরনের সমস্যা কমাতেও দারুণ কাজ করে পুশ আপ। কারণ প্রতিদিন পুশ আপ অনুশীলন করলে মাংসপেশির ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে শরীরের সার্বিক কর্মক্ষমতাও বাড়ে।
শরীরের উপরিভাগের ক্ষমতা বাড়ে
পুশ আপ অনুশীলন করা শরীরের উপরিভাগের জন্য খুবই উপকারি। আসলে যখন আমরা পুশ আপ করি, তখন আমাদের প্রতিটি মাংসপেশি শরীরের ওজন ধরে রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও এই এক্সারসাইজটি করার সময় শিরদাঁড়া সোজা থাকতে পারে এবং দেহকে উপর নিচ হতে সাহায্য করে। একই সঙ্গে বুক, পেট এবং কাঁধের ওপর ক্রমাগত চাপ পরতে থাকায় শরীরের এই অংশগুলিও উপকৃত হয়। এইভাবে শরীরের উপরিভাগের কার্যক্ষমতা এবং স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি পায়।
স্ট্রং কোর পেতে সাহায্য করে
আপনি কি ওয়াশ বোর্ড অ্যাব বা স্ট্রং কোর বানাতে চাইছেন? আসলে এগুলি হল, শরীরের বিভিন্ন অ্যাবের নাম, যা শরীরের বিভিন্ন অংশভেদে এইভাবে পরিচিত হয়েছে। কোর বলতে বোঝায় পেট, কোমরের দুইপাশ এবং পেলভিসের নিচের দিকের অংশ। প্রসঙ্গত, নিয়মিত পুশ আপ করলে শরীর এমন একটি পর্যায়ে চলে যায় যখন যে কোনও ব্যায়াম খুব সহজেই করে ফেলা যায়। এমনকি পুশ আপ করলে কোমর ব্যাথার সমস্যা দূর হয় এবং শরীরের গঠন দৃঢ় হয়।
পুশ আপ করার কিছু নির্দেশ:
তাড়াহুড়ো করবেন না
পুশ আপ কতটা করছি বা কতবার করছি, সেটা অনেকটাই ভেবে দেখার মতো বিষয়। যদিও মনে রাখতে হবে যে, বেশি সংখ্যক বার পুশ আপ করতে গিয়ে যেন তাড়াহুড়ো না করে ফেলা হয়। এতে নানাবিধ শরীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সঠিকভাবে শরীরকে রাখুন
পুশ আপ করার সময় খেয়াল রাখবেন মাথা, গলা, কোমর, পা যেন একটি সোজা লাইন বরাবর থাকে। এরপর ধীরে ধীরে দেহকে উপর দিকে তুলে তারপর নীচের দিকে নামিয়ে আনতে হবে। কখনই তাড়াহুড়ো করে পুশ আপ করা উচিত নয়। এতে শরীরের ক্ষতি হতে পারে। প্রথম প্রথম এগুলি খেয়াল করে পুশ আপ অনুশীলন করা একটু কঠিন ব্যাপার হয়ে যায়। ধীরে ধীরে অভ্যাস হয়ে গেলে তখন এক্সারসাইজটি ভিষণ সোজা হয়ে যায়।
নিতম্বকে সঠিক রাখুন
পুশ আপ করার সময় এই বিষয়টি খেয়াল রাখা প্রয়োজন। কারণ দেহের ভারসাম্য বজায় রাখতে হলে নিতম্বকে অনেকটা শক্ত করে রাখতে হবে। চেষ্টা করতে হবে যাতে গলা এবং পায়ের সোজাসুজি শরীরের এই অংশটি থাকতে পারে। নিতম্বকে শক্ত না করতে পারলে পুশ আপ করার সময় দেহের ওজন ধরে রাখা সম্ভব নয়।