Just In
মেথি পাতা কি আদৌ স্বাস্থ্যকর খাবার?
আজকের ডেটে যাকে নানা সুস্বাদু পদ বানানোর সময় ব্য়বহার করা হয়ে থাকে, সেই মেথি পাতা,এক সময় মানুষেরা ছুঁয়েও দেখতে না, খাওয়া তো অনেক দূরের বিষয়। এটা খেত মূলত গরু ছাগলেরা।
এই প্রশ্ন কেন উঠছে তাই ভাবছেন তো? আসলে আজকের ডেটে যাকে নানা সুস্বাদু পদ বানানোর সময় ব্য়বহার করা হয়ে থাকে, সেই মেথি পাতা,এক সময় মানুষেরা ছুঁয়েও দেখতে না, খাওয়া তো অনেক দূরের বিষয়। এটা খেত মূলত গরু ছাগলেরা। আর যদি আমার কথা বিশ্বাস না হয়, তাহলে একবার মেথির ইংরেজি নামের দিকে নজর ফেরান। "ফেনুগ্রিক" নামে পরিচিত এই প্রকৃতিক উপাদানটির এই নামটি এসেছে ল্যাটিন ভাষা থেকে, যার অর্থ হল, "এমন খাবার যা পশুরা খায়"। এবার বুঝেছেনযোগ্য তো কেন প্রশ্ন উঠছে মেথি আদৌ মানুষের খাওয়ার যোগ্য় কিনা!
উত্তর আমেরিকা এবং ভারতের বিভিন্ন জায়গায় বেড়ে ওঠা এই গাছটির পাতা এবং বীজ, উভয়ই নানা পদ বানানোর সময় ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আসলে এই মেথি পাতা এবং বীজ, খাবারের স্বাদ বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে...
সেই সঙ্গে আর কী করে? একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে তাচ্ছিল্যের চোখে দেখা হলেও মেথি পাতা এবং বীজ নানাভাবে শরীরের উপকারে লাগে থাকে। তাই তো গরু-ছগলের খাবার বলে দূরে ঠেলে দিলেও এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে মেথি বাস্তবিকই লম্বা রেসের ঘোড়া, যা মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত শরীরের প্রতিটি অঙ্গের সচলতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। কিন্তু প্রশ্নটা হল, এই প্রকৃতিক উপাদানটি কীভাবে সুস্থ থাকতে আমাদের সাহায্য করে?
১. বাওয়েল মুভমেন্টের উন্নতি ঘটায়:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে মেথি পাতা নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস করলে লিভার ফাংশের উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে নানা ধরনের গ্যাস্ট্রিক প্রবলেমের সুরাহা করতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখানেই শেষ নয়, ডায়ারিয়ার মতো রোগ সারাতেও এই প্রকৃতিক উপাদানটির কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে। তাই তো এবার থেকে পেট সংক্রান্ত কোনও সমস্যা হলেই অল্প করে মেথি পাতা খেতে ভুলবেন না যেন!
২. খারাপ কোলেস্টেরলর মাত্রা কাময়:
রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কি বিপদসীমা পেরিয়েছে? তাহলে তো বন্ধু এখনই সাবধান হতে হবে। না হলে কিন্তু হার্টের ক্ষতি হওয়া কেউ আটকাতে পারবে না। কিন্তু প্রশ্ন হল খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাবেন কীভাবে? এক্ষেত্রে মেথি পাতাকে কাজে লাগাতে পারেন। কারণ এই প্রকৃতিক উপাদানটি রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমিয়ে হার্টকে সুস্থ রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে অ্যাথেরোস্কেলেরোসিসের মতো রোগকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। এক্ষেত্রে অল্প করে কয়েকটি মেথি পাতা নিয়ে সারা সারা জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরদিন সকালে উঠে জলটা ছেঁকে নিয়ে পান করতে হবে। এমনটা নিয়মিত করলেই হার্টকে নিয়ে আর কোনও চিন্তা থাকবে না।
৩. ডায়াবেটিস রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখে:
অ্যান্টি-ডায়াবেটিক প্রপাটিজে পরিপূর্ণ থাকার কারণে রক্তে শর্করার মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার মধ্যে দিয়ে ডায়াবেটিস রোগকে দূরে রাখতে এই প্রকৃতিক উপাদানটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই তো যাদের পরিবারে এই মারণ রোগের ইতিহাস রয়েছে, তাদের নিয়মিত মেথি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞরা।
৪. হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত মেথি পাতা বা বীজ খাওয়ার অভ্যাস করলে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কমে। সেই সঙ্গে মেথির অন্দরে থাকা একাধিক উপকারি উপাদান ব্লাড ক্লটের আশঙ্কা কমায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই স্ট্রোক এবং হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা কমে। প্রসঙ্গত, মেথিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও হার্টের খেয়াল রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৫. ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়:
বলিরেখা এবং ত্বক কুঁচকে যাওয়ার কারণে কি চিন্তায় রয়েছেন? তাহলে আজ থেকেই মেথি পাতা দিয়ে তৈরি ফেস প্যাক ব্যবহার করা শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে। আসলে এই পাতাটিতে থাকা একাধিক উপাকারি উপাদান ত্বককে সুন্দর এবং প্রাণচ্ছ্বল রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে পরিমাণ মতো মেথি পাতা নিয়ে প্রথমে পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। তারপর সেই পেস্টটা মুখে ভাল করে লাগিয়ে কম করে ১৫ মিনিট রেখে দিতে হবে। সময় হয়ে গেলে ভাল করে মুখটা ধুয়ে ফেলতে হবে। এমনটা যদি নিয়মিত করতে পারেন, তাহলে ত্বককে নিয়ে আর কোনও চিন্তাই থাকবে না।
৬. চুলকে সুন্দর করে তোলে:
লম্বা চুলের অধিকারী হতে চান কি? উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, তাহলে আজ থেকেই মেথি পাতার পেস্ট স্কাল্পে লাগাতে শুরু করুন। দেখবেন মনের ইচ্ছা পূরণে একেবারেই সময় লাগবে না। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু কেস স্টাডিতে দেখা গেছে সপ্তাহে ২-৩ বার এই ঘরোয়া পদ্ধতিটি মেনে চুলের যত্ন নিলে চুল পরা কমে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে স্কাল্পে পুষ্টির ঘাটতি দূর হওয়ার কারণে চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটতেও সময় লাগে না।
কী বন্ধু! মেথি পাতা খাওয়া উচিত কিনা, সে প্রশ্নের উত্তর পয়েছেন তো?