Just In
দই খেলে ঠান্ডা লাগে না তো? তাহলে এই ১০ টি কারণে আপনার প্রতিদিন দই ভাত খাওয়া উচিত...!
দক্ষিণ ভারতে এর কদর রয়েছে ঠিকই। কিন্তু ভারতের যে দিকটায় আমাদের বসবাস, তারা খুব একটা পছন্দ করেন না এ জিনিস। কিন্তু যদি শরীরিক উপকারিতার কথা বলেন, তাহলে দই ভাতের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।
দক্ষিণ ভারতে এর কদর রয়েছে ঠিকই। কিন্তু ভারতের যে দিকটায় আমাদের বসবাস, তারা খুব একটা পছন্দ করেন না এ জিনিস। কিন্তু যদি শরীরিক উপকারিতার কথা বলেন, তাহলে দই ভাতের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই তো বঙ্গ খাদ্যরসিকদের নিয়মিত দইভাত খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
এত দূর পড়ার পর যদি প্রশ্ন করেন দই ভাত নিয়ে এত সমর্থনের ঝান্ডা উঠছে কেন? তাহলে উত্তরে বলবো বন্ধু, এই খাবারটির অন্দরে মজুত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং মিনারেল। সেই সঙ্গে রয়েছে পটাশিয়াম, কার্বোহাইড্রেট, কিছু পরিমাণ প্রোটিন এবং বেশ কিছু উপকারি ব্যাকটেরিয়া, যা নানাভাবে শরীরকে চাঙ্গা রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। যেমন ধরুন...
১. প্রো-বায়োটিক এবং অ্যান্টিবায়োটিকের ঘাটতি মেটে:
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত দই ভাত খাওয়া শুরু করলে শরীরে এত মাত্রায় প্রো-বায়োটিক এবং অ্যান্টিবায়োটিকের মাত্রা বৃদ্ধি পায় যে ভিতর থেকে শরীর চাঙ্গা হয়ে উঠতে যেমন সময় লাগে না, তেমনি বারে বারে সর্দি-কাশি এবং নানাবিধ সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও যায় কমে।
২. হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ভয় কমে:
দইয়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, যা হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর একবার হাড় শক্তপোক্ত হয়ে উঠলে আর্থ্রাইটিস মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার ভয় যে কমে, তা তো বলাই বাহুল্য! তাহলে বন্ধু, এবার নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন রোজের ডেয়েটে দই ভাত থাকা জরুরি কেন!
৩. পেটের যন্ত্রণা কমায় নিমেষে:
একটু বেশি খাওয়া-দাওয়ার কারণে কি পেট গুরগুর করছে, সঙ্গে লেজুড় হয়েছে স্টমাক পেন, তাহলে চটজলদি একবাটি দই ভাত খেয়ে নিন। দেখবেন নিমেষে কমে যাবে কষ্ট। আসলে দই ভাতে উপস্থিত ম্যাগনেসিয়াম এবং পটাশিয়াম, শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে পেটের যন্ত্রণা কমতে সময় লাগে না। সেই সঙ্গে নানাবিধ পেটের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও যায় কমে।
৪. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে চোখে পরার মতো:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে দই এবং ভাত মিশে যাওয়ার পর এমন কিছু উপাদানের জন্ম হয় যে তা শরীরে প্রবেশ করা মাত্র একাধিক পেটের রোগ সেরে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে বদ-হজমের সমস্যা থাকলে তারও উপশম ঘটে। আসলে দইয়ে উপস্থিত উপকারি ব্যাকটেরিয়া শরীরে প্রবেশ করা মাত্রা তা ধীরে ধীরে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটাতে থাকে। সেই সঙ্গে কনস্টিপেশন এবং তলপেটে অস্বস্তির মতো রোগের প্রকোপ কমাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে:
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ থাকায় দই ভাত খাওয়ার অভ্যাস করলে ধীরে ধীরে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার মারাত্মক উন্নতি ঘটে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই নানাবিধ সংক্রমণের আশঙ্কাও হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে এনার্জির ঘাটিতও পূরণ হয়। তাই তো ইচ্ছা হলে অফিস যাওয়ার আগে এক বাটি দই ভাত খেয়েই যেতে পারেন। দেখবেন উপকার পাবেন।
৬. ভিটামিনের চাহিদা মেটে:
খাবারে উপস্থিত নানাবিধ ভিটামিন যাতে ঠিক মতো শরীরের দ্বারা শোষিত হতে পারে, সেদিকে খেয়াল রাখে দই। তাই তো প্রতিদিন দই ভাত অথবা এমনি এমনিই দই খাওয়া পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। এমনটা করলে শরীরে ভিটামিন এবং খনিজের ঘটতি হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়, ফলে স্বাভাবিকভাবেই একাধিক রোগ দূরে থাকে।
৭. স্ট্রেসের মাত্রা কমে:
দইয়ে উপস্থিত প্রোবায়োটিকস, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং উপকারি ফ্যাট মস্তিষ্কের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন করে যে চোখের পলকে স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। বর্তমান সময়ে যুব সমাজ যেখানে স্ট্রেসের কারণে এত ধরনের শারীরিক সমস্যায় ভুগছে, সেখানে দই যে তাদের প্রিয় বন্ধু হয়ে উঠতে পারে, তা বলাই বাহুল্য!
৮. শরীরে পুষ্টিকর উপাদানের ঘাটতি মেটে:
দইয়ে রয়েছে ক্যালসিয়াম এবং উপকারি ফ্যাট। অন্য়দিকে ভাতে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট। ফলে দই ভাত খেলে একসঙ্গে এতগুলি পুষ্টিকর উপাদান শলরীরে প্রবেশ করে। প্রসঙ্গত, ক্যালসিয়াম হাড়কে শক্তপোক্ত করে। আর কার্বোহাইড্রেট এনার্জির ঘাটতি পূরণ করে।
৯. শরীর ঠান্ডা থাকে:
গরমের সময় শরীরকে ঠান্ডা রাখার মাধ্য়মে সান স্ট্রোকের আশঙ্কা কমাতে দই ভাতের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে দইয়ের মধ্যে তাপ বিরোধী উপাদান রয়েছে, যা নিমেষে তাপদাহকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে চলে আসে। তাই তো গরমকালে প্রতিদিনে দই ভাত খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।
১০. ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে:
খেয়াল করে দেখবেন দই ভাত খাওয়ার পর অনেকটা সময় পর্যন্ত পেট ভরে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই খাওয়ার পরিমাণ কমে যায়। সেই সঙ্গে কমে শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমার আশঙ্কাও। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা হ্রাস পায়। তাই তো যারা অতিরিক্ত ওজনের কারণে চিন্তায় রয়েছেন, তারা আজ থেকে ডায়েটে দই ভাতের অন্তর্ভুক্ত ঘটাতে পারেন, দেখবেন উপকার পাবেন।