Just In
- 13 hrs ago ঠাকুরকে নিত্যভোগ দেওয়ার সময় ঘণ্টা বাজে কেন? জানেন কি এর পিছনের রহস্য
- 15 hrs ago প্রখর রোদ থেকে স্বস্তি পেতে বাড়িতেই বানিয়ে নিন এই শরবতগুলি, ঠান্ডা রাখবে শরীরও
- 17 hrs ago গরমে এই পানীয়গুলি খেলে আপনিও থাকবেন হাইড্রেটেড ও সতেজ
- 19 hrs ago কাঠফাটা রোদ থেকে বাঁচতে কী করবেন? এড়িয়ে চলুন চা-কফি
ভুল করে দুধের সঙ্গে বাদাম খেয়ে ফেললে কি হতে পারে জানেন?
শরীরকে সচল এবং রোগমুক্ত রাখতে প্রতিদিন বিশেষ কিছু উপাদানের প্রয়োজন পরে, যা প্রচুর মাত্রায় উপস্থিত রয়েছে দুধ এবং বাদামে
আমার এক বন্ধু আছে। নাম সৈকত। ছোট বেলায় একবার ওর টিবি রোগ হয়েছিল। তখন পাড়ার হরেন ডাক্তার ওকে প্রতিদিন দুধের সঙ্গে কাঁচা ডিম মিশিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল। আর সেই থেকেই সৈকত আর দুধের মধ্যে চলছে বেদম মল্ল যুদ্ধ! কেন চলবে নাই বা বলুন। কোনও দিন কাঁচা ডিম আর দুধ খেয়ে দেখেছেন? এমন তার বদ গন্ধ যে ভূতও ভয়ে পালাবে। এমন বিদঘুটে গন্ধওয়ালা দুধ খেতে খেতে যে কারও দুধে অ্যালার্জি জন্মাতে বাধ্য!
আসলে গোল বেঁধেছে অন্য জায়গায়। ১০ বছর বয়সে দুধের সঙ্গে ডিভোর্স হওয়া সৈকতের হঠাৎই শরীরে এমন দুর্বলতা দেখা দিয়েছে যে শহর কলকাতার ঝাঁচকচকে হাসপাতালের ততধিক ঝাচকচকে এক ডাক্তার তাকে প্রতিদিন দুধ খেতে বলেছেন। সেই সঙ্গে যোগ করেছেন, এমনটা যদি না করা হয়, তাহলে সৈকতের বেজায় বিপদ! এমন পরিস্থিতিতে কী করণীয় এবার তা মাথায় আসছে না আমাদের। এদিকে চিন্তায় চিন্তায় গত কয়েকদিন সৈকত যেন আরও শীর্ণকায় হয়ে গেছে।
একে ছোট বেলার বন্ধু, তার উপর পড়শি, কিছু একটা করতে হবে ভেবে দারস্থ হলাম বেশ কিছু খাদ্য বিশারদ বন্ধুর দরবারে। সব শুনে তারা যা নিদান দিলেন, তাতে তো কেল্লাফতে!
কী বললেন বন্ধুরা? সৈকতের মুখ-চোখে দুশ্চিন্তা। দাঁড়া বন্ধু দাঁড়া সে উত্তর না হয় আমি দিচ্ছি কয়েক সেকেন্ডে। কিন্তু তার আগে বলুন তো আপনাদের মধ্যেও নিশ্চয় এমন অনেকে আছেন যারা নানা কারণে দুধের মতো পুষ্টিকর খাবারের সঙ্গ ছেড়েছেন? সৈকত জানালো স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান বলছে কখনও স্বাদ বা কখনও অন্য কারণে অনেকেই দুধের ছায়া পর্য়ন্ত মারান না। ফলে পুষ্টির অভাবে মরতে বসেন। তাই বন্ধুরা সৈকতের মতো এবার থেকে আপনারও দুধ খাওয়া শুরু করুন, তবে একটি মডিফাই করে। মানে, কিভাবে?
আমার সেই খাদ্য বিশারদেরা সমবেতভাবে যে উত্তর দিয়েছিলন, তা হল, দুধের সঙ্গে যদি বাদাম মিশিয়ে খাওয়া যায়, তাহলে দুধের গন্ধও দূর হয়, সেই সঙ্গে শরীরের যা উন্নতি হয়, তা বলে বোঝানোর নয়! একাধিক গবেষণাতেও প্রমাণিত হেয়েছে যে দুধের সঙ্গে বাদাম খেলে শরীরের একাধিক কাজে লাগে। যেমন...
১. পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়:
শরীরকে সচল এবং রোগমুক্ত রাখতে প্রতিদিন বিশেষ কিছু উপাদানের প্রয়োজন পরে, যা প্রচুর মাত্রায় উপস্থিত রয়েছে দুধ এবং বাদামে। তাই এই দুই "সুপার ফুড" এক সঙ্গে গ্রহণ করলে পুষ্টির ঘাটতি জনিত সমস্যা নিয়ে আর চিন্তাই থাকে না। প্রসঙ্গত, বাদাম দুধে রয়েছে ৩৯ ক্যালরি, ১.৫৫ গ্রাম প্রোটিন, ২.৮৮ গ্রাম ফ্যাট এবং ১.৫২ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট। সেই সঙ্গে রয়েছে দিনের মোট চাহিদার ৪৯ শতাংশ ভিটামিন ই, দৈনিক চাহিদার ১১ শতাংশ থিয়ামিন, ৭ শতাংশ রাইবোফ্লেবিন এবং ৫ শতাংশ ম্যাগনেসিয়াম।
২. ওজন কমাতে সাহায্য করে:
এক কাপ বাদাম দুধে কম-বেশি ৩৯-৫০ ক্যালরি থাকে। যেখানে হোল মিল্ক বা সাধারণ দুধে ক্যালরির পরিমাণ হল প্রায় ১৪৬। তাই সাধারণ দুধ খেলে যে পরিমাণে কসরত করতে হয়, তা বাদাম দুধ খেলে করার প্রয়োজনই পরে না। উল্টে দুধের মতোই প্রায় সব পুষ্টিকর উপাদানেরও যোগান মেলে বাদাম দুধ থেকে। ফলে একদিকে পুষ্টির ঘাটতি যেমন দূর হয়, তেমনি ওজন বাড়ার আশঙ্কাও থাকে না।
৩. হার্ট সুস্থ থাকে:
দুধ এবং বাদাম একসঙ্গে খেলে শরীরে উপকারি ফ্যাটের মাত্রা বাড়তে শুরু করে, যা হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, বাদাম দুধে উপস্থিত উপকারি ফ্যাট সার্বিকভাবে শরীরের একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৪.হাড় শক্তপোক্ত হয়:
নিয়মিত বাদাম দুধ খেলে দৈনিক ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি-এর চাহিদা যথাক্রমে প্রায় ৩০ শতাংশ এবং ২৫ শতাংশ পূরণ হয়ে থাকে। ফলে বুড়ো বয়সে পৌঁছানোর পর আর্থ্রারাইটিস এবং অস্টিওপোরোসিস মতো হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। শুধু তাই নয়, একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে বাদাম এবং দুধ যৌথ উদ্যোগে দাঁতের স্বাস্থ্যের উন্নতিও দারুনভাবে কাজে আসে।
৫. ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়:
বাদাম দুধে উপস্থিত ভিটামিন ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের অন্দরে লুকিয়ে থাকা সব রকমের ক্ষতিকারক উপাদানকে বার কের দিয়ে স্কিনের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধিতে বিশেষ ভাবে সাহায্য করে থাকে। সেই সঙ্গে সূর্যের ক্ষতিকারর প্রভাব থেকে ত্বককে বাঁচাতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়।
৬. পেশির ক্ষমতা বাড়ে:
বাদাম এবং দুধের মধ্যে বন্ধুত্ব পাতালে শরীরে আয়রন এবং রাইবোফ্লবিনের ঘাটতি দূর হয়। ফলে পেশি দুর্বল হয়ে পরার মতো সমস্যা দূরে পালায়।
৭. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়:
বাদাম দুধে রয়েছে ফাইবার, যা হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি কনস্টিপেশনের মতো রোগের চিকিৎসাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই যারা এমন ধরনের শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত এই পানীয়টি গ্রহণ করে দেখতে পারেন। এমনটা করলে দেখবেন উপকার মিলবে।