Just In
- 2 hrs ago মসুর ডাল খেতে ভালোবাসেন? কিন্তু অতিরিক্ত খেলে হতে পারে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া!
- 4 hrs ago অনলাইন গেমে বাচ্চারা ঘরকুঁনো! জানেন কি স্বাস্থ্যের জন্য় কতটা উপকারি আউটডোর গেম?
- 4 hrs ago সূর্যগ্রহণের সময় ঘটবে মা দুর্গার আগমন, তবে কি গ্রহণকালে পড়বে মায়ের পূজায় বাধা?
- 18 hrs ago ত্বকের জেল্লা ফেরাতে ম্যাজিকের মত কাজ করবে চালের জল, কীভাবে দেখুন
ওজন কমান আয়ুর্বেদের হাত ধরে
ওজন তো কমাতে চাইছেন। কিন্তু কিছুতেই তা করে উঠতে পারছে না। অন্যদিকে, নানা মুনির নানা মত শুনে আপনার প্রাণ ওষ্ঠাগত। যা কিছু খেতে যাচ্ছেন, তাতেই ওজন বাড়ার ভয়। ফলে খাদ্যতালিকা থেকে বাদ গেছে অনেক কিছুই।
ওজন তো কমাতে চাইছেন। কিন্তু কিছুতেই তা করে উঠতে পারছে না। অন্যদিকে, নানা মুনির নানা মত শুনে আপনার প্রাণ ওষ্ঠাগত। যা কিছু খেতে যাচ্ছেন, তাতেই ওজন বাড়ার ভয়। ফলে খাদ্যতালিকা থেকে বাদ গেছে অনেক কিছুই। অন্যদিকে দিন দিন শরীরের ভিতর থেকে ভেঙে পড়তে শুরু করেছেন আপনি। তাহলে উপায়? এমন কি আছে, যা আপনাকে সুস্থ শরীরও দেবে আবার ওজনও থাকবে নিয়ন্ত্রণে? সেই ধরণের খাবার এবং তাদের আশ্চর্য গুণাবলী নিয়ে বোল্ডস্কাইয়ের আজকের এই প্রতিবেদন।
ওজন নিয়ন্ত্রণে তখনই থাকবে, যখন আমাদের হজম প্রক্রিয়া সঠিকভাবে হবে। তাই আজ আমরা এমন কিছু খাদ্য এবং তার গুণাবলী নিয়ে আলোচনা করব, যা নিয়মিত খেলে শরীর এবং ওজন দুইই সুস্থ এবং সঠিক থাতবে। সঙ্গে কমবে ওজনও। তাহলে আর অপেক্ষা কেন, চলুন পড়ে ফেলা যাক সেই সব আয়ুর্বেদিক উপাদানগুলির সঙ্গে।
লেবু এবং মধু:
ওজন কমাতে লেবু এবং মধু দারুণ উপকারি। এক গ্লাস গরম জলে লেবুর রস এবং মধু মিশিয়ে পান করলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। এই পানীয় খিদে কমাতে সাহায্য করে, শরীর থেকে বিষাক্ত বর্জ্য বের করে দেয় এবং সবথেকে বড় কথা কোনও ক্ষতি না করেই খুব তাড়াতাড়ি ওজন কমিয়ে ফেলে।
গোলমরিচ:
লেবু এবং মধু মেশানো পানীয়তে আর একটু ম্যাজিক যোগ করতে চান? তাহলে সাহায্য নিন গোলমরিচের। এতে যেমন লেবু-মধু মেশানো পানীয়ের শক্তি দ্বিগুন হবে, তেমনই লেবুর রস থেকে ঠাণ্ডা লেগে যাওয়ার সম্ভাবনাও কমবে। তাই, নিয়ম করে লেবুর রস এবং মধু মেশানো পানীয় পান করলে তার মধ্যে অবশ্যই গোলমরিচের গুঁড়ো মিশিয়ে নিতে ভুলবেন না।
বাঁধাকপি:
সালাড খেতে ভালবাসেন? পছন্দ কন্টিনেন্টালও? তাহলে তো একটু আধটু কাঁচা বাঁধাকপি খাওয়ার অভ্যাস আছেই। আর শীতের মটরশুঁটি দিয়ে বাঁধাকপির ঘণ্ট চেখেছেন? উফ, ভাবলেই জিভে জল। আচ্ছা, জানেন কি, বাঁধাকপি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে দারুণ কাজ করে। বলা হয় যে, রান্না করার থেকেও কাঁচা বাঁধাকপি খেলে ওজন বেশি নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে, আজকাল যে হারে কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে, তাতে যে কোনও সব্জি রান্না করে খাওয়াই উচিত।
হজমে সাহায্য করে এমন সবজি খান:
ওজন বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ হল, হজম ঠিক মতো না হওয়া। তাই আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শাস্ত্রে বলা আছে যে, এমন খাদ্য গ্রহণ করতে হবে, যা হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। যেমন- আদা, পেঁপে, উচ্ছে বা করলা, রসুন এবং কাঁচা লঙ্কা। এই সব্জিগুলি আমাদের খাদ্যতালিকায় স্বাদের মাত্রা যেমন বৃদ্ধি করে, তেমনই হজম প্রক্রিয়ায় উন্নতিতেও দারুণ কাজে আসে।
উপকারি মশলা নিয়ম করে খান:
আপনি কি খুব বেশি স্বাস্থ্য সচেতন? খাবারে নাম মাত্র মশলা ব্যবহার করেন? তাহলে কিন্তু ঘোর বিপদ! আসলে আমাদের অনেকেরই ধারণা যে, মশলা মানেই তা শরীরের জন্য খারাপ, তা কিন্তু একেবারেই না। কারণ ভারতীয় মশলাগুলি নানারকম ঔষধি গুণে সমৃদ্ধ। যেমন- জিরা, ধনে, সরষে দানা, গোল মরিচ ইত্যাদি। তাই প্রতিদিনের খাবারে এই মশলাগুলি ব্যবহার করা খুবই ভাল।
আমাশয়ের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করুন:
কেউ আছেন যারা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন। আবার কেউ আছেন, যারা আমাশয়ে আক্রান্ত। দুই ক্ষেত্রেই পেট পরিষ্কার না হওয়ার কারণেই যাবতীয় সমস্যা। আমাশয়, অর্থাৎ বারবার বাথরুমে যাওয়া, শরীরে অস্বস্তি, ক্লান্তি, দিন দিন খাবারে অরুছি এবং সঠিক ভাবে হজম না হওয়া, এই ধরণের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে বেশ কিছু আয়ুর্বেদিক গুণসম্পন্ন ভেষজ উপাদান নিয়মিত খেতে হবে। যেমন- হলুদ, ত্রিফলা, ত্রিকটু ইত্যাদি। এগুলি নিয়মিত খেলে পেট পরিষ্কার হয়, হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
উপবাস রাখা:
সারা সপ্তাহে আমাদের কত কিছুই না খেয়ে থাকি, তাই না? অথচ হিসাব করে কখনও দেখেছি কি, না খেয়ে কতদিন থাকি? আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শাস্ত্র অনুযায়ী আমাদের সপ্তাহে একদিন উপস করে থাকা খুবই দরকারি। এতে শরীরের থেকে বিষাক্ত বর্জ্য বেড়িয়ে যেতে পারে এবং হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তবে একেবারে কোনওকিছু না খেয়ে দিন কাটিয়ে দেবেন না। সবজি হালকা স্যুপ, গ্রিন টি, সরবত এগুলো খেতে পারেন।
ভেষজ উপাদান:
বেশ কিছু ভেষজ উপাদান আছে, যা আমাদের হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যেমন- হরিতকি, বিভীতকী, আমলকী, তুলসি, অ্যালোভেরা ইত্যাদি। এগুলি নিয়মিত খেলে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে ওজনও থাকে নিয়ন্ত্রণে। এখন এই সব উপাদানগুলি ক্যাপসুল আকারেও কিনতে পাওয়া যায়।
আদা:
আদা খাওয়ার অভ্যাস আছে? আচ্ছা কিভাবে খান? রান্নার দিয়ে নিশ্চয়? হ্যাঁ! সেটা তো বেশ ভাল অভ্যাস। কিন্তু কখনও কাঁচা আদা খেয়েছেন কি? তাহলে আজ থেকেই কাঁচা আদা খাওয়া শুরু করুন। আদার সঙ্গে মধুও মিশিয়ে নিতে পারেন। এর কারণ, আদা অতিরিক্ত মেদ গলিয়ে দিতে সাহায্য করে। এরফলে, ওজনও থাকে নিয়ন্ত্রণে। তাই ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে আদা খাওয়া খুবই জরুরি।
কুলত্ত কলাই:
ওজন কিছুতেই কমছে না? তাহলে অবশ্যই কুলত্ত কলাই খাওয়া শুরু করুন। এক কাপ কুলত্ত কলাই সারা রাত জলে ভিজিয়ে রেখে দিন। পর দিন দুপুরবেলা বয়েল করে নিন। সেদ্ধ হয়ে গেলে পেঁয়াজ কুচি এবং বিট নুন মিশিয়ে খান। একইভাবে টানা ৪৫ দিন এটি খেয়ে যান। ভুলেও একদিনও বাদ দেবেন না যেন!
অ্যালোভেরা পাঞ্চ:
ওজন কমাতে অ্যালোভেরার কোনও জুড়ি নেই। আর তাই ওজন কমাতে হলে বাড়িতেই তৈরি করে ফেলুন অ্যালোভেরা পাঞ্চ। অ্যালোভেরা পাঞ্চ বানাতে হলে অ্যালোভেরার রস, হলুদ গুঁড়ো, জিরা গুঁড়ো, গুলঞ্চ গুঁড়ো, হরিতকি গুঁড়ো এক গ্লাস জলের মধ্যে মেশাতে হবে। জল অল্প গরম হলেও ক্ষতি নেই। এবার এর মধ্যে এক চামচ মধু দিতে হবে। তারপর পান করলেই কেল্লাফতে। এটি পান করার এক ঘণ্টা অবধি অন্য কোনও খাবার খাবেন না। মনের মতো ওজন না পাওয়া অবধি এই পানীয়টি নিয়মিত পান করতে হবে।
হজম ভালো করতে চা পান করুন:
হজম ভালো ভাবে হলে তবেই ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তাই হজম ভাল করতে হলে আমাদের একটা বিশেষ ধরণের চা পান করা খুবই জরুরি। তো এই চা বানাতে গেলে আমাদের লাগবে, অল্প পরিমাণ জিরা, সমপরিমাণ ধনে এবং মৌরি। এই উপকরণগুলির পরিমাণ ১/২ চামচ করে নিতে হবে। এবার এই উপকরণগুলি একটি পাত্রের মধ্যে জল নিয়ে ভাল করে ৫ মিনিট ফোঁটাতে হবে। এবার এই জল একটি ফ্লাস্কের মধ্যে রেখে দিয়ে সারাদিনে একটু একটু করে খেতে হবে। এই পানীয় হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে এবং ওজন কমাতে বাধ্য করে।
সবরকম স্বাদের খাবার খান:
প্রতিদিন কি কি স্বাদের খাবার খান? এমন প্রশ্ন করছি কারণ এই জিনিসগুলিও মাথায় রাখা খুবই দরকার। প্রতিটি খাবারের মধ্যেই যেমন আলাদা স্বাদ হয়, তেমনই তাদের খাদ্যগুণও প্রত্যেকের ভিন্ন ধরণের হয়। যেমন, ঝাল, টক, মিষ্টি, তেঁতো এই রকম প্রতিটি স্বাদের খাবারেই নানা গুণের বৈচিত্র্য দেখা যায়। আর তাই আয়ুর্বেদিক মতে, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় এই প্রতিটি স্বাদের খাবার রাখা খুবই জরুরি। এতে যেমন হজম প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটে, তেমনই ওজনও থাকে নিয়ন্ত্রণে।