Just In
Don't Miss
নিয়মিত পেঁপের সরবত খেলে শরীরের কি হতে পারে জানেন?
গবেষণা বলছে শরীর যখন প্রতি মুহূর্তে ভয়ানক ধাক্কা খাচ্ছে, তখন শরীরকে ভিতর থেকে শক্তিশালী করে তুলতে হবে। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে পেঁপে, বিশেষত পেঁপের রস।
একটু খেয়াল করে দেখুন কী ভয়ানক পরিস্থিতির মধ্যেই না বেঁছে আছি আমরা। একদিকে বাঁড়ছে বিষ ধোঁয়া। ফলে ফুলফুসের কর্মক্ষমতা যাচ্ছে কমে। অন্যদিকে স্ট্রেস বাড়াচ্ছে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের মতো রোগের মতো মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা। এখানেই শেষ নয়, এমন পরিস্থিতিতে যেখানে আমাদের নিজেদের খেয়াল রাখার প্রয়োজন বেড়েছে, সেখানে এই কাজটা মন দিয়ে না করে উল্টে জাঙ্ক ফুড খেয়ে কমাচ্ছি আয়ু।
এখন প্রশ্ন হল এমন পরিস্থিতিতে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার উপায় কী? গবেষণা বলছে যখন শরীর প্রতি মুহূর্তে ভয়ানক ধাক্কা খাচ্ছে, তখন শরীরকে ভিতর থেকে শক্তিশালী করে তুলতে হবে। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে পেঁপে, বিশেষত পেঁপের রস। কেন, রোজ এই ফলটি খেলে কী হতে পারে? বেশ কিছু স্টাডি অনুসারে পেঁপের অন্দরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং মিনারেল, যা নানাভাবে শরীরের উপকারে লেগে থাকে। তাই তো সেই প্রাচীন কাল থেকে নানা রোগের চিকিৎসায় কাজে লাগানো হয়ে থাকে এই ফলটিকে। আর বর্তমানে আমরা সবাই যে ধরনের পরিবেশের মধ্য়ে শ্বাস নিচ্ছি, তাতে সুস্থ থাকতে বাস্তবিকই পেঁপের রস খাওয়ার কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে।
গবেষণা বলছে নিয়মিত এক গ্লাস করে পেঁপের রস খেলে শরীরের অন্দরে ভিটামিন এবং মিনারেলের ঘাটতি দূর হওয়ার পাশাপাশি পেপেইন নামক এক ধরনের উপকারি এনজাইমের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যা নানাবিধ শারীরিক সমস্যার হাত থেকে আমাদের রক্ষা করে। যেমন ধরুন...
১. ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখে:
পরিসংখ্যান বলছে প্রতি বছর আমাদের দেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এই মারণ রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। তাই তো পেঁপের রস খাওয়ার প্রয়োজন বাড়ছে প্রতিনিয়ত। এতদূর পড়ার পর হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন পেঁপের রস খাওয়ার সঙ্গে ক্যান্সার রোগের দূরে থাকার কী সম্পর্ক? আসলে এই ফলটির অন্দরে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরে উপস্থিত টক্সিক উপাদানদের বের করে দেয়। ফলে ক্যান্সার সেল জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। প্রসঙ্গত, পেঁপেতে আরেকটি উপকারি উপাদান রয়েছে, যা লাইকোপেন নামে পরিচিত। এই উপাদানটিও ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
২. ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়:
রোজের ডায়েটে পেঁপের রসকে অন্তর্ভুক্ত করলে শরীরে পেপেইনের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। এই উপাদানটি ত্বকের অন্দরে পুষ্টির ঘাটতি দূর করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই স্কিন সুন্দর হয়ে উঠতে সময় লাগে না। প্রসঙ্গত, নিয়মিত মুখে পেঁপের প্যাক লাগালেও সমান উপকার পাওয়া যায়। তাই বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ত্বক বুড়িয়ে যাক, এমনটা যদি না চান, তাহলে পেঁপের সঙ্গে নিতে ভুলবেন না যেন!
৩. গ্যাস্ট্রিক প্রবলেমকে দূরে রাখে:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে পেপেইন হল এমন একটি উপাদান, যার মাত্রা শরীরে বাড়তে শুরু করলে পাকস্থলির কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে পাচক রসের ক্ষরণ এতটা বাড়িয়ে দেয় যে কোনও ধরনের পেটের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। প্রসঙ্গত, পেঁপেতে কার্পেইন নামেও নামক একটি উপাদান রয়েছে, যা নানাবিধ গ্যাস্ট্রিক সমস্যাকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৪. কনস্টিপেশনের মতো সমস্যার প্রকোপ কমায়:
পেঁপের রসে উপস্থিত ফাইবার, শরীরে প্রবেশ করার পর বর্জ্যের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো রোগের কষ্ট কমতে শুরু করে। ফলে সুস্থজীবনের স্বপ্ন পূরণ হতে একেবারেই সময় লাগে না।
৫. স্ট্রোককে দূরে রাখে:
বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে নিয়মিত পেঁপে খাওয়া শুরু করলে শরীরের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে রক্তচাপ স্বাভাবিক হতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই স্ট্রোকের খপ্পরে পরার আশঙ্কা হ্রাস পায়। এই কারণেই তো হাই ব্লাড প্রেসারে আক্রান্ত রোগীদের রোজের ডায়েটে পেঁপের রস খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
৬. ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়ে:
বায়ু দূষণের মাত্রা এত মাত্রায় বাড়ছে যে সবারই ফুসফুসের কর্মক্ষমতা কমছে। ফলে বাড়ছে নানাবিধ রেসপিরেটরি প্রবলেমে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা। এমন পরিস্থিতিতে নিয়মিত পেঁপের রস খাওয়া শুরু করলে দারুন উপাকার পাওয়া যায়। কারণ এই ফলটির অন্দরে থাকা একাধিক উপকারি উপাদান ফুসফুসের অন্দরে সৃষ্টি হওয়া প্রদাহ কমায়। ফলে লাং-এর কোনও ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কমে।
৭. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়:
শীতকালে শরীর খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেড়ে যায়। কেন এমনটা হয় জানেন? কারণ এই সময় নানা কারণে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই নানাবিধ রোগ শরীরে এসে বাসা বাঁধে। তাই এই ঠান্ডায় যদি সুস্থ থাকতে চান, তাহলে নিয়মিত পেঁপের রস খেতে ভুলবেন না যেন! কারণ এই ফলটি, শরীরের অন্দরে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি-এর মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এই দুটি ভিটামিন, ইমিউন সিস্টেমকে এত মাত্রায় শক্তিশালী করে তোলে যে রোগভোগের আশঙ্কা কমে।