Just In
- 4 hrs ago
শুক্র প্রবেশ করল মকর রাশিতে, দেখুন এটি ১২টি রাশির উপর কেমন প্রভাব ফেলবে
- 5 hrs ago
জিভে কালো দাগ? বাড়িতে বসেই সহজ উপায়ে মুক্তি পেতে পারেন
- 12 hrs ago
দৈনিক রাশিফল : লক্ষ্মীবারে লক্ষ্মীলাভ হবে কি? জানতে পড়ুন ২৮ জানুয়ারির রাশিফল
- 20 hrs ago
সিল্কি এবং ঘন চুল পেতে ডায়েটে এই ভিটামিনগুলি অন্তর্ভুক্ত করুন
Don't Miss
আয়ুর্বেদে বিশ্বাস থাকলে প্রতিদিন ত্রিফলা খাওয়া শুরু করুন, তারপর দেখুন কী হয়!
শরীরকে রোগ মুক্ত রাখতে ত্রিফলার বাস্তবিকই কোনও বিকল্প নেই। তাই তো আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে এর এত কদর। কিন্তু প্রশ্ন হল কী এই ত্রিফলা? তিনটি ফলকে শুকিয়ে নিয়ে তারপর তা গুঁড়ো করে একসঙ্গে মিলিয়ে যে শক্তিশালী মিশ্রনটি তৈরি করা হয়, তাকেই আযুর্বেদ শাস্ত্রে ত্রিফলা নামে ডাকা হয়ে থাকে। প্রসঙ্গত, তিনটি ফল ব্যবহার করে এই মিশ্রনটি বানানো হয় বলেই তো এর নাম ত্রিফলা। সংস্কৃতে "ত্রি" কথার অর্থ হল তিনটি, আর "ফলা" হল ফল।
কী কী ফল ব্যবহার করে ত্রিফলা বানানো হয়? সাধারণত আমলকি, হরিতকি এবং বিভিতকি সহযোগে বানানো হয় এই ঔষধিটি, যাতে উপস্থিত একাধিক ভিটামিন এবং মিনারেল ছোট-বড় নানা রোগকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে এতে উপস্থিত গ্যালিক অ্যাসিড, ইলেগিক অ্যাসিড এবং চেবুলিনিক অ্যাসিড ত্বক এবং চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতেও কাজে আসে। তবে এখানেই শেষ নয়, নিয়মিত ত্রিফলা চুর্ণ খাওয়ার অভ্যাস করলে মেলে আরও অনেক উপকার, যে সম্পর্কে এই প্রবন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
প্রসঙ্গত, এই আয়ুর্বেদিক ওষুধটি ডিনারের ৩০ মিনিট আগে খেতে হবে। ট্যাবলেট হিসেবে খেতে পারেন, নয়তো ত্রিফলা পাউডারকে গরম জলে গুলে চায়ের মতো করেও পান করতে পারেন। তবে যেভাবেই গ্রহণ করুন না কেন, মধ্যা কথা প্রতিদিন যদি ত্রফলা চূর্ন খেতে পারেন, তাহলে শরীর নিয়ে আর কোনও চিন্তাই থাকবে না। কারণ...

১. ক্ষত সেরে যায় চোখের নিমেষে:
অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটারি এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদানে টাসা হওয়ার কারণে এই মিশ্রনটি খাওয়া শুরু করলে শরীরের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে ক্ষত সারতে সময় লাগে না। এই কারণেই তো চোট বাচ্চাদের নিয়মিত এই আয়ুর্বেদিক মিশ্রনটি খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।

২. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসে:
রক্তচাপ কি বেজায় ওঠানামা করে? তাহলে বন্ধু কাল থেকেই নিয়মিত ত্রফলা খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগবে না। আসলে এই মিশ্রনটির অন্দরে উপস্থিত লাইনোলিক অ্যাসিড, শরীরে প্রবেশ করা মাত্র এমন খেল দেখায় যে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আশঙ্কা কমে।

৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত ত্রিফলা খাওয়া শুরু করলে দেহের অন্দরে পুষ্টিকর উপাদানের মাত্রা এতটা বেড়ে যায় যে তার প্রভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। ফলে ছোট-বড় রোগব্যাধির প্রকোপ কমে চোখের নিমেষে।

৪.ক্যান্সারের মতো মারণ রোগকে ধারে কাছেই আসতে দেয় না:
২০১৫ সালে ক্যান্সার সেলের গ্রোথ এবং তার উপর ত্রিফলার প্রভাব সম্বর্কে একটি গবেষণা করা হয়েছিল। তাতে দেখা গিয়েছিল নিয়মিত খালি পেটে এই আয়ুর্বেদিক চূর্ণটি খাওয়া শুরু করলে শরীরের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে ক্যান্সার সেল জন্মে নেওয়ার কোনও সুযোগই পায় না। আর একবার যদি জন্ম নিয়েও ফেলে তাহলেও তার বৃদ্ধি আটকে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এই মারণ রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। প্রসঙ্গত, অরেকটি স্টাডিতে প্রমাণিত হয়েছে যে কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধেও ত্রফলা বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে এই প্রকৃতিক উপাদানটির অন্দরে উপস্থিত গ্যালিক অ্যাসডি এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৫. খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে শুরু করে:
শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়তে শুরু করলে হার্টে রক্ত সরবরাহকারি আর্টারিগুলি বন্ধ হয়ে যেতে শুরু করে। ফলে পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত না পাওয়ার কারণে হার্ট দুর্বল হয়ে পরে । সেই সঙ্গে হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। সেই কারণেই তো নিয়মিত ত্রিফলা খাওয়া পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। আসলে এমনটা করলে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ার কোনও আশঙ্কাই থাকে না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের কোনও ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, জার্নাল অব ফার্মাসিউটিকাল সোসাইটি অব জাপানে প্রকাশিত একটি স্টাডি অনুসারে ত্রফলায় উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট একদিকে যেমন এল ডি এল বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। তেমনি হার্টের অন্দরে যাতে কোনওভাবেই প্রদাহ সৃষ্টি না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কোনও ধরনের করনারি আর্টারি ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।

৬. কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রকোপ কমায়:
সকালটা যদি আপনার কাছে অভিশাপের সমান হয়, তাহলে আজ থেকেই ত্রিফলা চুর্ন খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে। কারণ বেশ কিছু কেস স্টাডিতে একথা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়ে গেছে যে বাওয়েল মুভমেন্টের উন্নতি ঘটানোর মধ্যে দিয়ে কনস্টিপেশনের মতো রোগের চিকিৎসায় এই হার্বাল মিশ্রনটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, কোলোনকে পরিশুদ্ধ করার মধ্যে দিয়ে আরও নানা ধরনের রোগের আশঙ্কা কমাতেও ত্রিফলার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।

৭. ওজন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা কমে:
অতিরিক্ত ওজনরে কারণে যদি চিন্তায় থাকেন, তাহলে ডায়েট কন্ট্রোলের পাশাপাশি আপনার প্রথম পছন্দ হওয়া উচিত ত্রফলা চুর্ন। কারণ নিয়মিত এই প্রাকৃতিক উপাদানটি গ্রহন করলে বাওয়েল মুভমেন্টের উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটার কারণে শরীরে মেদ জমার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন কমতে শুরু করে।

৮. দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে:
এক গ্লাস গরম জলে ১-২ চামচ ত্রিফলা গুঁড়ো মিশিয়ে সারা রাত রেখে দিন। পরদিন সকালে উঠে জলটা ছেঁকে নিয়ে জলটা দিয়ে ভাল করে চোখ পরিষ্কার করুন। এইভাবে নিয়মিত চোখের পরিচর্যা করতে পারলে দেখবেন দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটতে সময় লাগবে না। সেই সঙ্গে চোখের সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও যাবে কমে।

৯. অ্যাংজাইটি এবং স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে চলে আসে:
নিয়মিত খালি পেটে ত্রিফলা খাওয়ার অভ্যাস করলে শরীরের অন্দরে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যা ব্রেন পাওয়ার বাড়ানোর পাশাপাশি মানসিক ক্লান্তি এবং স্ট্রেস কমাতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। প্রসঙ্গত, বর্তমানে আমাদের দেশে যেভাবে অ্যাংজাইটি এবং মানসিক অবসাদে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে ত্রিফলার খাওয়ার প্রয়োজনও যে বেড়েছে, সে বিষযে কোনও সন্দেহ নেই।