Just In
- 2 hrs ago মসুর ডাল খেতে ভালোবাসেন? কিন্তু অতিরিক্ত খেলে হতে পারে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া!
- 3 hrs ago অনলাইন গেমে বাচ্চারা ঘরকুঁনো! জানেন কি স্বাস্থ্যের জন্য় কতটা উপকারি আউটডোর গেম?
- 3 hrs ago সূর্যগ্রহণের সময় ঘটবে মা দুর্গার আগমন, তবে কি গ্রহণকালে পড়বে মায়ের পূজায় বাধা?
- 18 hrs ago ত্বকের জেল্লা ফেরাতে ম্যাজিকের মত কাজ করবে চালের জল, কীভাবে দেখুন
নিয়মিত গোলমরিচ খাওয়া কি স্বাস্থ্যকর?
গবেষণা বলছে গত কয়েক দশকে যে যে রোগের কারণে সারা বিশ্বে সবথেকে বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটেছে, তার প্রায় সবকটিকে দূরে রাখতেই গোলমরিচ বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
ইতিহাস বলছে সারা দুনিয়ার মধ্য়ে ভারতেই প্রথম এই মশলাটির ব্যবহার শুরু হয়। তারপর এদেশ থেকে তা ছড়িয়ে পরে বাকি দুনিয়ায়। খুব অল্প দিনেই ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্য জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করে এই মশলাটি। এমনটা হওয়ার পিছেন মূল কারণ ছিল এর স্বাদ এবং এর নানাবিধ শারীরিক উপকারিতা। সেই সময় থেকেই মানুষ বুঝতে পেরেছিল এই কালো মশলাটি শরীরে প্রবেশ করার পর এমন কিছু করে, যাতে দেহ তার হারিয়ে যাওয়া বল ফিরে পায়। সেই সঙ্গে নানা রোগের কষ্টও কমে। প্রসঙ্গত, রোমান ইতিহাসেও গোলমরিচের উল্লেখ পাওয়া যায়। ঐতিহাসিকদের মতে ভারতের আগে নাকি রোম থেকেই এই মশলাটি সারা দুনিয়ায় রপ্তানি হত। যদিও এই নিয়ে বিতর্কের অবকাশ রয়েছে। তবে যাই হোক, সেই ৪০ এডি থেকে গোলমরিচের এত জনপ্রিয়তার পিছনে এর স্বাদ যতটা না দায়ি ছিল, তার থেকে বেশ ছিল শারীরিক উপকারিতা।
আধুনিক গবেষণা বলছে গত কয়েক দশকে যে যে রোগের কারণে সারা বিশ্বে সবথেকে বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটেছে, তার প্রায় সবকটিকে দূরে রাখতেই গোলমরিচ বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই দীর্ঘদিন যদি সুস্থভাবে বাঁচার ইচ্ছা থাকে, তাহলে শতাব্দী প্রাচীন এই মশলাটি খেতে ভুলবেন না যেন! প্রসঙ্গত, স্যালাড থেকে ডাল, দুধ থেকে ডিমের অমলেট, যে কোনও খাবারেই এই মশলাটি দিয়ে খাওয়া যেতে পারে। সব থেকে মজার বিষয় হল, শরীরকে চাঙ্গা রাখতে এক চিমটে গোলমরিচই যথেষ্ট, বেশি মাত্রায় খাওয়ার কোনও প্রয়োজনই নেই।
সাধারণত যে যে রোগের প্রতিরোধে গোলমরিচ বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, সেগুলি হল...
১. সংক্রমণের প্রকোপ কমায়:
গোলমরিচের অন্দরে উপস্থিত অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপাটিজ সংক্রমণের প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে পোকামাকড় কামড়ানোর পর মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে নানা সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতেও এই প্রকৃতিক উপাদানটিকে কাজে লাগানো যেতে পারে।
২. ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়:
অল্প পরিমাণ গোলমরিচের সঙ্গে পরিমাণ মতো মধু, দই মিশিয়ে যদি প্রতিদিন খেতে পারেন তাহলে ত্বকের উপর বয়সের ছাপ পরে না। সেই সঙ্গে বলিরেখাও অদৃশ্য হতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, এই তিনটি উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে বানানো পেস্ট মুখে লাগালেও দারুন উপকার পাওযা যায়। একাধিক কেস স্টাডি অনুসারে এই পেস্টটি ত্বকের উপরিঅংশে জমে থাকা মৃত কোষের আবরণ সরিয়ে দেয়। ফলে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য চোখে পরার মতো বৃদ্ধি পায়।
৩. ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়ায়:
শ্বাস কষ্টের মতো সমস্যা কমানোর পাশাপাশি সাইনুসাইটিস এবং নেজাল কনজেশনের মতো রোগের প্রকোপ কমাতেও এই প্রকৃতিক উপাদনটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, রেসপিরেটরি ইনফেকশনের প্রকোপ কমাতেও গোলমরিচের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই বায়ু দূষণের মাঝে ফুসফুসকে যদি চাঙ্গা রাখতে চান, তাহলে নিয়মিত গোলমরিচ খেতে ভুলবেন না যেন!
৪. ডিপ্রেশন কমায়:
বিজ্ঞানিরা এমনটা মনে করে থাকেন যে গোলমরিচে উপস্থিতে পিপেরাইন মস্তিষ্কের অন্দরে "ফিল গুড" হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে নিমেষে মন খারাপ ছুমান্তর হয়ে যায়। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।
৫. ক্যান্সারের মহৌষধি:
গোলমরিচে রয়েছে পিপেরিন নামে একটি উপাদান, যা ক্যান্সার সেলকে এনকাউন্টারে মারতে দারুনভাবে সক্ষম। এখানেই শেষ নয়, একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে এই মশলাটির শরীরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ফ্ল্যাভোনয়েড, ক্যারোটিন এবং আরও অনেক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানদের বের করে দেওয়ার মধ্যে দিয়ে ক্যান্সার রোগকে যেমন দূরে রাখে, তেমনি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়। ফলে সংক্রমণ ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।
৬. ওজন হ্রাসে সাহায্য করে:
শুনতে একটু অজাব লাগলেও বৈজ্ঞানিক গবেষণা একথা প্রমাণ করেছে যে ওজন কমাতে বাস্তবিকই গোলমিরচ দারুনবাবে সাহায্য করে। আসলে গোলমরিচের মধ্যে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস, যা ফ্যাট সেলকে গলিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি মেটাবলিজম রেটের বৃদ্ধি ঘটায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমার সুযোগ না পাওয়ার কারণে ওজন কমতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, এক্ষেত্রে যে কোনও খবারে এক চিমটে গোলমরিচ মিশিয়ে খেলেই ফল মিলবে, বেশি মাত্রায় খাওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই।
৭. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়:
পিপেরাইন যে শুধু ক্যান্সার সেলকেই ধ্বংস করে না, সেই সঙ্গে হজম সহায়ক অ্যাসিডের ক্ষরণ যাতে ঠিক মতো হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে। আর একবার এইসব অ্যাসিডগুলি যদি ঠিক মতো কাজ করা শুরু করে দেয়, তাহলে হজমের সমস্যা তো হয়ই না, সেই সঙ্গে গ্যাস-অম্বলের মতো অস্বস্তিও কমতে শুরু করে।
৮. পেপটিক আলসারের মতো রোগের চিকিৎসায় কাজে আসে:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে গোলমরিচে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইফ্লেমেটরি প্রপাটিজ শরীরে প্রবেশ করে একদিকে যেমন গ্য়াস্ট্রিক মিউকোজাল ড্যামেজকে প্রতিরোধ করে, তেমনি পেপটিক আলসারের মতো রোগকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৯.জ্বরের প্রকোপ কমায়:
কারণে-অকারণে সারা বছর ধরেই কি জ্বর, সর্দি-কাশিতে ভুগে থাকেন? তাহলে তো আজ থেকেই যখন সুযোগ পাবেন, খাবারে গোলমরিচ মিশিয়ে খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে। আসলে এই মশলাটির শরীরে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা জ্বরের প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এক্ষেত্রে এক চামচ মধুর সঙ্গে অল্প পরিমাণে গোলমরিচ মিশিয়ে খাওয়া শুরু করতে হবে। এমনটা করলে একদিকে যেমন জ্বর কমবে, তেমনি বুকে কফ জমে থাকলে, তাও কমতে শুরু করবে। সেই সঙ্গে ভাইরাল ইনফেকশনও আর ধারে কাছে ঘেঁষার সুযোগ পাবে না।