Just In
গরম জল পান জরুরি কেন জানেন?
বিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে অনেক সাধারণ বিষয়ও আজকাল শরীরের উপকারে লাগতে শুরু করেছে। যেমন গরম জলের কথাই ধরুন না। বিজ্ঞান বলছে, ঠান্ডা জলের পরবর্তে যদি গরম জল পান করা শুরু করা যায়, তাহলে শরীরে নানা উপকারে লাগে। তবে তাই বলে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে গরন জল পান করা চলবে না কিন্তু! কারণ ভুলে যাবেন না অতি ব্যবহারে উপকারি জিনিসও কিন্তু নিজের চরিত্র বদলায়।
মানব শরীরের প্রায় ৭০ শতাংশই জল দিয়ে তৈরি। তাই তো দেহকে সচল রাখতে জলের গুরুত্বকে কখনও অস্বীকার করা যায় না। সেই দিনে কম করে ৮ গ্লাস দল খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। তাদের মতে এই পরিমাণ জল পান না করলে শরীরের অন্দরে জলের ঘাটতি হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। যদিও আরেক দল চিকিৎসক এ বিষয়ে একেবারে ভিন্ন মত পোষণ করেন। তাদের মতে এইভাবে জল খাওয়ার পরিমাণকে নির্দিষ্ট সংখ্যায় বেঁধে দেওয়া একেবারেই উচিত নয়। বরং যখনই জল তেষ্টা পাবে, তখনই জল খান। এমনটা করলে শরীর নিয়ে আর কোনও চিন্তা থাকবে না। কিন্তু জল যেন হয় হলকা গরম। তাহলে একদিকে যেমন ডিইহাইড্রেশনের আশঙ্কা কমবে, তেমনি শরীরের আরও অনেক উপকারও হবে। যেমন...
১. ওজন হ্রাস পাবে:
অতিরিক্ত ওজনের কারণে চিন্তায় রয়েছেন? তাহলে আজ থেকেই গরম জল খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন ফল পাবেন একেবারে হাতে নাতে। আসলে গরম জল খেলে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। ফলে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমার সুযোগই থাকে না। শুধু তাই নয়, গরম জল অ্যাডিপোস টিস্যু বা ফ্যাটেদের ভেঙে ফেলেও ওজন হ্রাসে সাহায্য করে।
২. ঠান্ডা লাগা এবং গলা ব্যথার প্রকোপ কমায়:
এই ধরনের শারীরিক সমস্যার চিকিৎসায় গরম জলের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। গরম জল এক্ষেত্রে রেসপিরেটারি ট্রাক্টকে পরিষ্কার করে ঠান্ডা লাগা এবং গলার অস্বস্তি কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে বন্ধ নাকও পুনরায় সচল হয়ে যায়।
৩. শরীরকে বিষমুক্ত করে:
যখন আমাদের রক্তে ক্ষতিকর টক্সিনের মাত্রা বাড়তে থাকে তখন কিডনিকে ওভার টাইম করে শরীর থেকে সেই টক্সিক উপাদনদের বার করে দিতে হয়। না হলেও হাজারো রোগ হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। এক্ষেত্রেও গরম জল নানাভাবে সাহায্য করে থাকে। গরম জল খাওয়া মাত্র শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে ঘাম হতে শুরু হয়। আর ঘামের মাধ্য়মে টক্সিনগুলি বেরিয়ে যেতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, গরম জলে যদি অল্প করে লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারেন তাহলে এক্ষেত্রে আরও উপকার পাওয়া যায়।
৪. শরীরের বয়স কমে:
গরম জল স্কিন সেলের ক্ষত সারিয়ে ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। সেই সঙ্গে ত্বক টান টান হয়ে ওঠে এবং বলিরেখাও হ্রাস পায়। ফলে বয়সের কোনও ছাপই ত্বকের উপর পরতে পারে না। প্রসঙ্গত, শরীরে টক্সিনের মাত্রা যত কমে, তত শরীর এবং ত্বকের বয়সও হ্রাস পায়। আর গরম জল যে এ কাজটা ভাল ভাবেই করে তা নিশ্চয় আর বলে দিতে হবে না!
৫. ব্রণর প্রকোপ কমায়:
শরীরের অন্দরে ময়লা যত কম জমবে, তত ব্রণর বাড়বাড়ন্তও হ্রাস পাবে।। আর গরম জল যে টক্সিনের বিরোধী, তা নিশ্চয় আর জানতে বাকি নেই! তাই ব্রণর প্রকোপ কমাতে সকাল বিকাল গরম জল পান শুরু করুন। দেখবেন অল্প দিনেই ব্রণ এবং পিম্পলের মতো ত্বকের রোগ একেবারে সেরে যাবে।
৬. চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়:
চুলের গড়ায় থাকা নার্ভদের সচলতা বৃদ্ধি করতে গরম জল বিশেষ ভাবে সাহায্য করে। ফলে গরম জল খাওয়া মাত্র স্কাল্পে রক্ত চলাচল বেড়ে যায়। ফলে অক্সিজেন সমৃদ্ধি রক্ত চুলের গোড়ায় পৌঁছে গিয়ে চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
৭. নার্ভাস সিস্টেম আরও কর্মক্ষম হয়ে ওঠে:
গরম জল খাওয়া মাত্র সারা শরীরে এমনকি মস্তিষ্কেও রক্তচলাচল বেড়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই নার্ভের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ব্রেন পাওয়ার বেড়ে যায়।
৮. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে খাবার খাওয়ার পর ঠান্ডা জল খেলে পাকস্থলীর ভিতরের দেওয়ালে ফ্যাটের পরিমাণ বাড়তে শুরু করে। ফলে ধীরে ধীরে পাকস্থলীর কর্মক্ষমতা কমে যায়। সেই সঙ্গে ইন্টেস্টিনাল ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। তাই তো খাবার পর পর ঠান্ডা জলের পরিবর্তে হালকা গরম জল খাওয়া পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। আসলে ঠান্ডা জলের কারণে সাধারণত যে যে সমস্যাগুলি হয়ে থাকে সেগুলি গরম জল খেলে একেবারেই হয় না। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতারও উন্নতি ঘটে। ফলে বদ-হজম এবং গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার কোনও সুযোগই পায় না।