For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts

জলজিরা পান করা কি আদৌ উচিত?

বিয়ে বাড়ি হোক কী রবিবাসরীয় লাঞ্চ, ভরপেট পেট পুজোর পর উদ্ভট ঢেকুর উঠতে থাকলে এক গ্লাস জলজিরা ছাড়া অন্য কিছু যেন খাদ্যরসিক বাঙালিদের মাথাতেই আসে না।

By Nayan
|

বিয়ে বাড়ি হোক কী রবিবাসরীয় লাঞ্চ, ভরপেট পেট পুজোর পর উদ্ভট ঢেকুর উঠতে থাকলে এক গ্লাস জলজিরা ছাড়া অন্য কিছু যেন খাদ্যরসিক বাঙালিদের মাথাতেই আসে না। আর কেন আসবেই বা বলুন! এই মশলাটি যে বাস্তবিকই কোনও ধরনের মশলাদার খাবার হজম করতে দারুনভাবে কাজে আসে। শুধু কী তাই, ভারতীয় যে কোনও পাখোয়ানে স্বাদ বাড়াতে জিরার ব্যবহার সেই মহাভারতের সময় থেকে হয়ে আসছে। আসলে স্বাদে-গন্ধে এই মশলাটির সত্যিই জুড়ি মেলা ভার। তবে শুধু যে স্বাদের কারণেই জিরার অন্তর্ভুক্তি ঘটেছে ভারতীয় নানা নানা পদে, এমনটা ভেবে নিলে কিন্তু ভুল হবে। আসলে প্রাচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে এমনটা উল্লেখ পাওয়া যায় যে রান্নার স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি শরীরকে ভিতর এবং বাইরে থেকে সুস্থ রাখতে এই মশলাটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।

ভারতের পাশাপাশি সমগ্র এশিয়া মহাদেশে জিরা এতটা জনপ্রিয়তার পিছনে মশলাটির শারীরিক উপকারিতার দিকটাই বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। কারণ আমরা যেমন রান্নায় জিরাকে ব্যবহার করে থাকি, বাকি দেশে কিন্তু এমনটা করা হয় না। তারা মূলত পরিমাণ মতো জিরা নিয়ে সেটিকে জলে ভিজিয়ে গ্রহণ করে থাকে। তাই তো আজ এই প্রবন্ধে জিরা ওয়াটারের নানা গুণ নিয়ে আলোচনা করা হবে।

নিয়মিত পরিমাণ মতো জিরা খেলে যে যে উপকারগুলি পাওয়া যায়, সেগুলি হল...

১. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়:

১. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়:

বাঙালি মানেই জন্ম খাদ্যরসিক। আর এমনটা হওয়া মানেই বদ-হজম এবং গ্যাস-অম্বল রোজের সঙ্গী। কি তাই তো! এমন অবস্থা যদি আপনারও হয়ে থাকে, তাহলে আজ থেকেই এক গ্লাস জলে পরিমাণ মতো জিরা ভিজিয়ে সেই জল পান করা শুরু করুন, দেখবেন কব্জি ডুবিয়ে খেলেও এবার থেকে আর অম্বল হবে না। আসলে জিরার শরীরে উপস্থিত একাদিক উপাকারি উপাদান একদিকে যেমন হজম প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটায়, তেমনি অন্যদিকে হজমে সহায়ক এনজাইমের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে বদ-হজম হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।

২. শরীরকে ভিতর থেকে তরতাজা রাখে:

২. শরীরকে ভিতর থেকে তরতাজা রাখে:

নিয়মিত জিরা জল পান করলে শরীরে জলের ঘাটতি দূর হয়। সেই সঙ্গে দেহের অন্দরের তাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে শরীর শুকিয়ে গিয়ে কোনও ধরনের সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। শুধু কী তাই, শরীরকে ডিহাইড্রেট করার পাশাপাশি আরও একটা কাজ করে থাকে জিরা, তা হল মশলাটি খাওয়া মাত্র দেহের অন্দরে ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্স ঠিক হতে শুরু করে। ফলে শরীরে লিকুইড ব্যালেন্স ঠিক থাকে। সেই সঙ্গে শরীর ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।

৩. রোগ প্রতিরাধ ক্ষমতা বাড়ায়:

৩. রোগ প্রতিরাধ ক্ষমতা বাড়ায়:

জিরায় উপস্থিত আয়রন শরীরে প্রবেশ করার পর লহিত রক্ত কণিকার উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। সেই সঙ্গে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঘাটতিও দূর করে। ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থা এতটাই শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। তাই সারা বছর যদি চাঙ্গা থাকতে চান, তাহল আদ থেকেই জিরা জল খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন দারুন উপকার মিলবে।

৪. অ্যানিমিয়ার প্রকোপ কমায়:

৪. অ্যানিমিয়ার প্রকোপ কমায়:

সরকারি পরিসংখ্যান ঘাঁটলেই জানতে পারবেন আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার একটা বড় অংশ অ্যানিমিক। আর এমনটা হওয়ার পিছনে আয়রনের ঘাটতিকেই দায়ি করে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। তাই তো আমাদের মতো দেশে জিরা খাওয়ার প্রয়োজন আরও বেশি। কারণ যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে জিরায় রয়েছে প্রচুর মাত্রায় আয়রন, যা রক্তের ঘাটতি মেটাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আর একবার শরীরে লহিত রক্ত কমিকার মাত্রা বেড়ে গেলে অ্যানিমিয়ার প্রকোপ কমতেও সময় লাগে না।

৫. ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণে রাখে:

৫. ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণে রাখে:

প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক গ্লাস করে জিরা জল খাওয়ার অভ্যাস করলে শরীরে ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্স যেমন ঠিক হয়ে যায়, তেমনি পটাশিয়ামের ঘাটতিও দূর হতে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্লাড প্রেসার কমতে শুরু করে। আসলে পটাশিয়াম, শরীরে সোডিয়ামের মাত্রা ঠিক রাখার মাধ্যমে রক্তচাপকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে থাকে। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও এই ঘরোয়া ঔষধিটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই যাদের পরিবারে হার্টের রোগের ইতিহাস রয়েছে, তারা নিয়মিত যদি এই প্রকৃতিক উপাদানটি গ্রহণ করতে পারেন, তাহলে হার্ট নিয়ে চিন্তা কিন্তু অনেকটাই কমবে।

৬. ওজন হ্রাসে সাহায্য করে:

৬. ওজন হ্রাসে সাহায্য করে:

জিরায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। এই উপাদানটি শরীরে প্রবেশ করার পর মেটাবলিজম রেট বাড়িয়ে দেয়। ফলে খাবার এত সুন্দরভাবে হজম হতে শুরু করে যে ওজন বাড়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। ফাইবার আরেকভাবেও ওজন কমাতে সাহায্য করে থাকে। কিভাবে? ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলে অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরা থাকে। ফলে বারে বারে খাবার খাওয়ার ইচ্ছা চলে যায়। আর কম খাবার খাওয়া মানে ওজনও কমে যাওয়া।

৭. ডায়াবেটিস রোগকে দূরে রাখে:

৭. ডায়াবেটিস রোগকে দূরে রাখে:

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত সকাল বেলা খালি পেটে জিরে ভেজানো জল খেলে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা এতটা বেড়ে যায় যে রক্তে শর্করার মাত্রা কমতে শুরু করে। এই কারণেই তো ডায়াবেটিস রোগীদের জিরা ভেজানো জল পানের পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।

৮. এনার্জির ঘাটতি দূর করে:

৮. এনার্জির ঘাটতি দূর করে:

আজকাল অফিস থেকে ফেরার পর বেশ ক্লান্ত লাগে নাকি? এবার থেকে এমনটা হলে ঝটপট এক গ্লাস জিরা ভেজানো জল খেয়ে নেবেন। দেখবেন শরীর একেবারে চাঙ্গা হয়ে উঠবে। এমনটা কেন হবে জানেন? কারণ জিরার অন্দরে থাকা একাদিক উপকারি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর এনার্জি এতটা বাড়িয়ে দেয় যে ক্লান্তি দূরে পালায়।

তাহলে বন্ধু এতক্ষণে নিশ্চয় উত্তর পয়ে গেছেন যে জলজিরা খাওয়া উচিত কী উচিত নয়...?

Read more about: রোগ শরীর
English summary

বিয়ে বাড়ি হোক কী রবিবাসরীয় লাঞ্চ, ভরপেট পেট পুজোর পর উদ্ভট ঢেকুর উঠতে থাকলে এক গ্লাস জলজিরা ছাড়া অন্য কিছু যেন খাদ্যরসিক বাঙালিদের মাথাতেই আসে না। কিন্তু এমন ভাবনা কেন আসে বলতে পারেন?

Jeera water improves digestion during pregnancy, as it acts as a stimulator for the enzymes which are required for digestion of carbohydrates and fats.
X
Desktop Bottom Promotion