Just In
Don't Miss
পাঁউরুটি খেলে শরীরের কতটা ক্ষতি হয় জানা আছে?
গবেষণা বলছে এদেশে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ১ জন সিলিয়াক ডিজিজ নামে একটি ভয়ঙ্কর অটোইমিউন ডিজিজে আক্রান্ত। আর এমনটা হওয়ার পিছনে কে দায়ি জানেন? পাঁউরুটি।
গবেষণা বলছে এদেশে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ১ জন সিলিয়াক ডিজিজ নামে একটি ভয়ঙ্কর অটোইমিউন ডিজিজে আক্রান্ত। আর এমনটা হওয়ার পিছনে কে দায়ি জানেন? পাঁউরুটি। একেবারে ঠিক শুনেছেন! ব্রেকফাস্টে বেশিরভাগেরই পছন্দের এই খাবারটি বেশি মাত্রায় খেলে শরীরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে তার প্রভাবে একাধিক রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। শুধু তাই নয়, বেশ কিছু মারণ রোগও শরীরে এসে বাসা বাঁধতে শুরু করে। তাই তো চিকিৎসকেরা পাঁউরুটি থেকে দূরত্ব বাড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন। আর যদি কেউ এমনটা না করেন, তাহলে শরীরের আরও যে যে ক্ষতিগুলি হতে পারে, সেগুলি হল?
এক্ষেত্রে সাধারণত যে যে রোগ আক্রমণ শানায়, সেগুলি হল...
১. মানসিক অবসাদে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়:
শুনে অবাক হয়ে গেলেও একথার মধ্যে কোনও ভুল নেই যে সাদা পাঁউরুটি খাওয়ার সঙ্গে মানসিক অবসাদের সরাসরি যোগ রয়েছে। প্রসঙ্গত, আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিকাল নিউট্রিশনে প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্র অনুসারে পাঁউরুটি খাওয়া মাত্র শরীরের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে বিশেষ কিছু হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যার প্রভাবে মানসিক অবসাদ এবং ডিপ্রেশনের মতো সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।
২. শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়:
টানা ১২ সপ্তাহ ৩৬ জন মানুষের উপর গবেষণা চালিয়ে বিশেষজ্ঞরা লক্ষ করেছেন, নিয়মিত পাঁউরুটি বা ময়দা দিয়ে তৈরি কোনও খাবার খেলে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা মারাত্মক বৃদ্ধি পায়। আর যেমনটা আপনাদের সকলেরই জানা আছে যে কোলেস্টরল আমাদের হার্টের জন্য় একেবারেই ভাল নয়। কারণ এই উপাদানটির পরিমাণ রক্তে বাড়তে থাকলে হার্ট অ্যাটাক সহ নানাবিধ হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।
৩. শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দেয়:
অনেকই মনে করেন পাউরুটি বেশ স্বাস্থ্যকর। কিন্তু এই ধরণা একেবারেই ঠিক নয়। কারণ ময়দা বানানোর সময় এর শরীরে কোনও ধরনের পুষ্টিকর উপাদানই আর অবশিষ্ট থাকে না। ফলে পাঁউরুটি খেলে শরীরের তো কোনও উপকার হয়ই না, উল্টে ময়দা পেটের রোগে আক্রান্ত হওয়ার পথকে প্রশস্ত করে, সেই সঙ্গে শরীরের অন্দরে মারাত্মক ক্ষতি সাধনও করে থাকে। তাই এই খাবারটি থেকে দূরে থাকাটাই শ্রেয়!
৪. ওজন বৃদ্ধি পায়:
গবেষণা বলছে পাঁউরুটি খাওয়ার পর শরীরে একদিকে যেমন শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পায়, তেমনি অন্যদিকে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণও বাড়তে শুরু করে। ফলে এমমনটা যদি কয়েক দিন ধরে চলতে থাকে, তাহলে ওজন বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে লেজুড় হয় কোলেস্টেরল এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগও।
৫. শরীরে ক্ষতিকর নুনের মাত্রা মাত্রা বৃদ্ধি পায়:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে বেশি মাত্রা পাঁউরুটি খাওয়া শুরু করলে দেহের অন্দরে সোডিয়ামের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্লাড প্রেসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে দেখা দেয় আরও কিছু রোগও। তাই এইসব মারণ রোগটি থেকে যদি দূরে থাকতে চান, তাহলে পাঁউরুটি খাওয়া কমাতে হবে। বিশেষত ময়দা দিয়ে বানানো সাদা পাঁউরুটি।
৬. ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে পাঁউরুটি শরীরে প্রবেশ করার পর হজম হতে সময় নেয়, কিন্তু যে মুহূর্তে হজম হয়, তখনই রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে ইনসুলিনের ক্ষরণও বেড়ে যায়। এমনটা দিনের পর দিন হতে থাকলে শরীরের অন্দরে ইনসুলিন রেজিস্টেন্স তৈরি হয়ে যায়। ফলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা মারাত্মক বৃদ্ধি পায়। সেই কারণেই তো যাদের পরিবারে এই মারণ রোগটির ইতিহাস রয়েছে, তাদের পাঁউরুটি থেকে শত হস্ত দূরে থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিকাল নিউট্রিশিয়ানে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে উল্লেখ ছিল, যারা হোল গ্রেন খাবার বেশি মাত্রায় খায়, তাদের শরীরে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার কেনাও আশঙ্কাই থাকে না। কিন্তু এমনটা না করে যারা রিফাইন ময়দা দিয়ে তৈরি খাবার বেশি মাত্রায় খেয়ে থাকেন, যেমন ধরুন পাঁউরুটি, তাদের শরীরে ডায়াবেটিস রোগ বাসা বাঁধার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
৭. পোস্ট মেনোপজাল ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে :
যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে পাঁউরুটি এবং ডিপ্রেশনের মধ্যে গভীর যোগ রয়েছে। বিশেষত পোস্ট মেনোপজাল সময়ে মহিলাদের ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হওয়ার পিছেন এই খাবরটি যে বিশেষ ভাবে দায়ি, সে বিষয়ে আর কোনও সন্দেহ নেই। তাই এবার থেকে ব্রেড-বাটার খাওাযার আগে একবার অন্তত ভেবে দেখবেন, খাবারের নামে বিষ খাচ্ছেন না তো!