Just In
নিয়মিত কলা খেলে কি হয় জানেন?
বেশ কিছু স্টিডিতে দেখা গেছে নিয়মিত কলা খেলে শরীরের ক্ষমতা মারাত্মক বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে হার্টের কর্মক্ষমতাও বাড়তে শুরু করে।
কী হয় মশাই? কী আবার হবে, শরীরের অন্দের এমন পরিবর্তন হতে থাকে যে...
আরে আরে বলুন বলুন! হঠাৎ থেমে গেলেন কেন? থামিনি মশাই, একটু শ্বাস নিতে দিন! তারপর বলছি। বেশ কিছু স্টিডিতে দেখা গেছে নিয়মিত কলা খেলে শরীরের ক্ষমতা মারাত্মক বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে হার্টের কর্মক্ষমতাও বাড়তে শুরু করে। আসলে কলা খাওয়া মানেই পটাশিয়ামের এন্ট্রি ঘটা শরীরে। আর দেহের অন্দরে পটাশিয়াম বাড়তে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। এক কথায় বলতে পারেন এই খনিজটির ছোঁয়া পেয়ে হার্ট পুনর্জীবন ফিরে পায়। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি অব অ্যালাবেমার গবেষকদের করা এক পরীক্ষায় উঠে এসেছে এক আজব তথ্য। তারা জানাচ্ছেন প্রতিদিন কলার মতো আরও সব পটাশিয়াম সমৃদ্ধ ফল খেলে আর্টারির কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে। আর একবার হার্ট ঠিক মতো কাজ করা শুরু করে দিলে স্বাভাবিকভাবেই আয়ুও বৃদ্ধি পায়। তবে কলা যে শুধুমাত্র হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়াতেই কাজে লাগে, এমন নয়! এই ফলটি নিয়মিত খেলে মেলে আরও অনেক উপকারিতা। যেমন...
১. পুষ্টির ঘাটতি দূর করে:
শরীরের সচলতা বজায় রাখতে প্রতিদিন নির্দিষ্ট মাত্রায় ভিটামিন এবং মিনারেলের প্রয়োজন পরে শরীরের। আর এইসব উপাদানের যোগান শরীর পায় খাবারের মাধ্যমে। সমস্যাটা হল আজকের প্রজন্ম এতটাই ব্যস্ত যে তাদের হাতে ঠিক মতো খাওয়া-দাওয়া করার সময় নেই। ফলে যা হওয়ার তাই হয়, পুষ্টির ঘাটতি হওয়ার কারণে নানাবিধ রোগ এসে বাসা বাঁধে শরীরে। এমন পরিস্থিতি কলা কিন্তু দারুন কাজে আসতে পারে। কিভাবে? এই ফলটির শরীরে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন এবং মিনারেল। সেই সঙ্গে রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং ফলেটের মতো উপাদান, যা শরীরকে চাঙ্গা রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই এবার থেকে ঠিক সময় খাবার খাওয়া সুযোগ না পেলে ২-৪ টে কলা খেয়ে নিতে ভুলবেন না যেন!
২. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়:
আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে কলার অন্দরে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা পাচক রসের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হজম প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটে। তাই পুজোর পর থেকে যদি পেটটা ঠিক না যায়, তাহলে আজ থেকেই নিয়মিত কলা খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে।
৩. রক্তাল্পতা দূর করে:
কলায় রয়েছে বিপুল পরিমাণে আয়রন, যা শরীরে লহিত রক্ত কণিকার মাত্রা বৃদ্ধি করার মধ্যে দিয়ে অ্যানিমিয়ার প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই যারা এমন রোগে ভুগছেন, তারা আয়রন ট্য়াবলেটের পাশাপাশি যদি নিয়ম করে কলা খেতে পারেন, তাহলে কিন্তু দারুন উপকার মিলতে পারে।
৪. ওজন কমায়:
কলার শরীরে পটাশিয়াম ছাড়াও রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার, যা অনেকক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে। ফলে খাওয়ার পরিমাণ কমতে শুরু করে। আর কম খেলে যে ওজনও কমে, সে কথা কার না আজানা বলুন! প্রসঙ্গত, ফাইবার কনস্টিপেশনের মতো রোগ সারাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে
৫. রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখে:
কলায় উপস্থিত পটাশিয়াম শরীরে নুনের ভারসাম্য বজায় রাখতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। ফলে নিয়মিত কলা খেলে দেহে নুনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার সুযোগ পায় না। ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার কোনও আশঙ্কাই থাকে না।
৬. স্ট্রেস কমায়:
মানসিক চাপ এমন বেড়েছে যে দৈনন্দিন জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে? তাহলে তো বন্ধু সকাল-বিকাল কলা খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে। আসলে এই ফলটির শরীরে উপস্থিত নরএপিনেফ্রিন নামক একটি উপাদান আমাদের শরীরে প্রবেশ করার পর মস্তিষ্কের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে স্ট্রেস লেভেল কমতে থাকে।
৭. খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়:
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে কলার অন্দরে থাকা ফাইটোস্টেরলস নামক একটি উপাদান রক্তে মিশে থাকা এল ডি এল বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আর একবার খারাপ কোলেস্টরলের মাত্রা কমে গেলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। তাই তো কোলেস্টেরলের সমস্যায় ভোগা রোগীদের নিয়মিত কলা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।