For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts

গ্রিন টির উপকারিতা সম্পর্কে জানা আছে?

গবেষণায় দেখা গেছে টিউমারের বৃদ্ধি কমাতে এবং অতিবেগুনী রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব কমাতে গ্রিন টি-তে উপস্থিত পলিফেনলের ভুমিকা অপরিসীম।

By Swaity Das
|

গ্রিন টি-এর নাম শোনেননি এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া বেজায় মুশকিল। কারণ ভারতের পাশাপাশি এশিয়া মহাদেশের বহু দেশে এই চা-টি উৎপাদিত হয়ে আসছে এবং কয়েক শতাব্দী ধরে সারা বিশ্বে সমাদৃত।

আজ পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষের কাছে পানীয় হিসেবে চাই হল প্রথম পছন্দ। আর তার প্রায় ৭৮ শতাংশই লাল চা খেতে পছন্দ করেন। এমন পরিস্থিতে পরিসংখ্যান বলছে সারা বিশ্বে এই মুহূর্তে গ্রিন টি-এর বিক্রি হার মাত্র ২০ শতাংশ। তবে তাই বলে ভাববেন না জনপ্রিয়তায় কোনও খামতি রয়েছে। নানাবিধ উপকারিতার কারণে এমন অনেকেই আছেন যারা চিরাচরিত চায়ের পেয়ালা ছেড়ে হাতে তুলে নিয়েছে এই ভেষজ চাকে।

গ্রিন টি সম্পর্কিত জরুরি কিছু তথ্য:
আয়ুর্বেদে ও চৈনিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে গ্রিন টি-এর ব্যবহার লক্ষ করা যায়। কারণ এই চায়ের শরীরে রয়েছে বেশ কিছু উপকারি উপাদান, যা ক্যান্সারের মতো মারণ রোগকে দূরে রাখতে যেমন বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, তেমনি আরও নানা কাজে লাগে।

সুস্বাস্থ্য ও গ্রিন টি:
স্বাস্থ্য ভাল রাখতে গ্রিন টি-এর কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। কারণ এই পানীয়টি অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে, ক্ষত সারাতে, হৃদযন্ত্রের নানা সমস্যার সমাধানে, হজমে সাহায্য করতে, শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে, এমনকি মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই কারণেই তো ভারতের সনাতন আয়ুর্বেদিক চিকৎসায় এর এত কদর।

সাম্প্রতিক কালে হওয়া কিছু গবেষণা বলছে শরীরের ওজন কমানো থেকে যকৃতের নানা সমস্যা, মধুমেহ বা টাইপ ২ ডায়াবেটিস, এমনকি অ্যালজাইমারের মতো জটিল স্নায়বিক রোগের চিকিৎসাতেও দারুণ কাজ আসে গ্রিন টি। তবে এখানেই শেষ নয়, নথি বলছে নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে শরীরের অনেক উপকার হয়, যেমন...

১. ম্য়ালিগনেন্ট টিউমারের যম:

১. ম্য়ালিগনেন্ট টিউমারের যম:

গবেষণায় দেখা গেছে টিউমারের বৃদ্ধি কমাতে এবং অতিবেগুনী রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব কমাতে গ্রিন টি-তে উপস্থিত পলিফেনলের ভুমিকা অপরিসীম। অন্তত এমনটাই মনে করেন ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউটের গবেষকরা। আসলে তাদের গবেষণায় দেখা গেছে গ্রিন টি পানের চল রয়েছে এমন দেশে ক্যান্সারের প্রকোপ অত্যন্ত কম। তবে তার সঠিক কারণ সবুজ চায়ের ব্যবহার না অন্য কিছু, সে সম্পর্কে যদিও তা জানা প্রায় অসম্ভব। প্রসঙ্গত, গ্রিন টি বহু ধরণের ক্যান্সারকে রোধ করতে পারে। যেমন,স্তন ক্যান্সার, মুত্রথলির ক্যান্সার, ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার, বৃহদন্ত্রের ক্যান্সার, গলার ক্যান্সার, ফুসফুসের ক্যান্সার, প্রস্টেট ক্যান্সার, ত্বকের ক্যান্সার এবং খাদ্যনালীর ক্যান্সার। তবে সবুজ চায়ের উপকারিতা সম্পর্কে নানা মুনির নানা মত রয়েছে। বেশ কিছু গবেষকদের মতে, চায়ের পলিফেনলগুলি ক্যান্সারের কোষের বৃদ্ধি বন্ধ করে ও এদের মেরে ফেলতেও সক্ষম হয়। কিন্তু কিভাবে এমনটা সম্ভব হয়, তা যদিও বিজ্ঞানের কাছে এখনও অজানা। অন্য আরেকটি গবেষণার ফলাফল অনুসারে এই ধারণা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আবার নানা সমীক্ষায় উঠে এসেছে আরও নানা রকমের তথ্য। কারও মতে ক্যান্সার রোধ করতে দিনে দু'কাপ সবুজ চা খেতে হবে। তো কারও মতে সেটা ৮, ৯ এমনকি ১০ কাপও হতে পারে। এ ব্যাপারে আমেরিকার ফুড এন্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ২০০৫ সালে তাদের একটি বক্তব্য প্রকাশ করে। তাতে বাল হয়েছিল ক্যান্সার রোধে গ্রিন টি-এর আদৌ ভুমিকা রয়েছে কিনা তা নিয়ে আরও গবেষণায় প্রয়োজন রয়েছে। তবে এই পানীয়টি পান করলে যে শরীরের উপকার হয়, সে বিষযে কোনও সন্দেহ নেই।

২. হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ায়:

২. হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ায়:

২০০৬ সালে জার্নাল অফ দ্য আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনে প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্রে বলা হয়েছিল গ্রিন টি সেবনে মৃত্যুর হার অনেকাংশে কমে। কারণ এই পানীয়টি হার্টকে চাঙ্গা রাখতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। আর একথা তো সকলেরই জানা আছে যে হার্ট যদি ঠিক মতো কাজ করা শুরু করে দেয়, তাহলে মৃত্যু দূরে থাকতে বাধ্য হয়। প্রসঙ্গত, এই গবেষণায় দেখা গেছে যারা দিনে কমপক্ষে ৫ কাপ গ্রিন টি পান করেন, তাদের হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে মৃত্যুর আশঙ্কা অনেকাংশে কমে যায়। অন্যদিকে দু কাপ করে যারা গ্রিন টি পান করেন, তাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার প্রথম দলের থেকে কিছুটা হলেও বেশি থাকে। এমনটা মনে করা হয় যে গ্রিন টিতে উপস্থিত ক্যাটেচিন্স এবং পলিফেনল নামক উপাদান দুটি শরীরের আশপাশে রক্ষাকবচ গড়ে তুলতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। বিশেষত হৃদরোগকে দূরে রাখতে এই উপাদন দুটি দারুণ কাজে দেয়।

৩. শরীরে কোলেস্টেরল মাত্রা কমে:

৩. শরীরে কোলেস্টেরল মাত্রা কমে:

২০১১ সালে হওয়া একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল গ্রিন টি তরল অবস্থায় বা ক্যাপসুল আকারে, যেভাবেই গ্রহণ করা হোক না কেন, তা আমাদের শরীর থেকে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে দারুনভাবে সাহায্য করে থাকে।

৪. টাইপ ২ ডায়াবেটিসকে প্রতিরোধ করে:

৪. টাইপ ২ ডায়াবেটিসকে প্রতিরোধ করে:

সমীক্ষায় দেখা গেছে গ্রিন টি সেবনে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা অনেকটাই কমে। এমনকি যারা ইতিমধ্য়েই ডায়াবেটিস রোগে ভুগছেন তাদের রক্তে যাতে শর্করার মাত্রা বেড়ে না যায়, সেদিকেও খেয়াল রাখে এই পানীয়টি। তাই সুগার লেভেলকে বেঁধে রাখতে ডায়াবেটিস রোগীরা নিশ্চিন্তে গ্রিন টি পান করতেই পারেন।

৫. ওজন কমায়:

৫. ওজন কমায়:

গ্রিন টি অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে। যদিও চিকিৎসাবিজ্ঞানে এই বিষয়ে গবেষণা খুবই কম হয়েছে। তথাপি মনে করা হয় গ্রিন টি-এর মধ্য়ে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বি ঝরাতে সাহায্য করে।

৬. প্রদাহ জনিত সমস্যা এবং ত্বকের রোগের প্রকোপ কমে:

৬. প্রদাহ জনিত সমস্যা এবং ত্বকের রোগের প্রকোপ কমে:

২০০৭ সালে হওয়া একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে গ্রিন টি ত্বকের যে কোনও রকমের সমস্যা কমাতে দারুণ কাজে দেয়। এমনকি খুশকির প্রকোপ কমাতেও গ্রিন টি দারুণ উপকারি ভূমিকা নেয়। বৈজ্ঞানিকেরা এই সম্পর্কিত একটি গবেষণায় জানিয়েছেন ত্বকে প্রদাহ জনিত সমস্যা যেসব রোগ দেখা দেয়, সেগুলি মূলত শুরু হয় ত্বক অতিরিক্ত শুকিয়ে গেলে, লালচে হয়ে গেলে এবং ত্বকের চামড়া আঁশের মতো আকার ধারণ করলে। এছাড়াও খুব বেশী পরিমাণে কোষ তৈরি হতে থাকলেও ত্বকে প্রদাহজনিত সমস্যা তৈরি হয়। এই সব কারণগুলিকে একে একে নির্মূল করে স্কিনের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে গ্রিন দারুনভাবে কাজ আসে।

৭. স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটে:

৭. স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটে:

সাইকোফার্মাকোলজি নামক একটি গবেষণা পত্রিকায় জানানো হয়েছে গ্রিন টি আমাদের মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে। একই সঙ্গে আমাদের স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতেও দারুণ কাজে দেয়। এই গবেষণা পত্রে আরও দাবি করা হয়েছে কোনও ব্যক্তির স্মৃতিভ্রম হলে বা কোনও কারণে মানসিক কোনও সমস্যা দেখা দিলে তাকে যদি নিয়মিত গ্রিন টি খাওয়ানো যেতে পারে তাহলে দারুন উপকার মেলে।

গ্রিন টিতে থাকা পুষ্টিকর উপাদান:

গ্রিন টিতে থাকা পুষ্টিকর উপাদান:

মিষ্টি ছাড়া গুঁড়ো গ্রিন টি-তে ক্যালোরির মাত্রা থাকে শূন্য। শুধু তাই নয়, গ্রিন টিতে ক্যাফেইন মাত্রা, কালো চা বা লিকার চায়ের থেকে অনেক কম থাকে। দেখা গেছে ১০০ গ্রাম গ্রিন টি-তে ক্যাফেইনের মাত্রা থাকে ২০-৪৫ গ্রাম। যেখানে এক কাপ কালো চা এবং কফির মধ্যে এর মাত্রা থাকে ৫০ গ্রাম এবং ৯৫ গ্রাম। প্রসঙ্গত, গ্রিন টি- এর মধ্যে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। সেই সঙ্গে থাকে পলিফেনল, যা শরীরে প্রদাহজনিত সমস্যা এবং ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা নেয়।

Read more about: রোগ শরীর
English summary

আয়ুর্বেদে ও চৈনিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে গ্রিন টি-এর ব্যবহার লক্ষ করা যায়। কারণ এই চায়ের শরীরে রয়েছে বেশ কিছু উপকারি উপাদান, যা ক্যান্সারের মতো মারণ রোগকে দূরে রাখতে যেমন বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, তেমনি আরও নানা কাজে লাগে। যেমন...

Obesity is one of the biggest problems challenging the world today. A sedentary lifestyle, combined with the craving for junk food and drinks, is leading to several obesity-related complications like heart disease, sleep apnea, diabetes, hypertension, etc. To combat this monster, we surely need to incorporate green tea into our daily diet.
Story first published: Tuesday, September 5, 2017, 15:30 [IST]
X
Desktop Bottom Promotion