Just In
- 14 hrs ago ঠাকুরকে নিত্যভোগ দেওয়ার সময় ঘণ্টা বাজে কেন? জানেন কি এর পিছনের রহস্য
- 15 hrs ago প্রখর রোদ থেকে স্বস্তি পেতে বাড়িতেই বানিয়ে নিন এই শরবতগুলি, ঠান্ডা রাখবে শরীরও
- 18 hrs ago গরমে এই পানীয়গুলি খেলে আপনিও থাকবেন হাইড্রেটেড ও সতেজ
- 20 hrs ago কাঠফাটা রোদ থেকে বাঁচতে কী করবেন? এড়িয়ে চলুন চা-কফি
Don't Miss
এবারের কালী পুজোয় উপোস করতে ভুলবেন না যেন! তবে তা ধর্মিও কারণে নয়, করতে হবে শরীরের কারণে!
মানে! কালী পুজোয় উপোস করলে শরীরের উপকার হবে! মশাই আপনি না একবার ডাক্তার দেখান, সম্ভব হলে সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে যান, কারণ প্রয়োজন আছে! কেন বলছি এমন কথা তাই ভাবছেন তো লেখক মশাই। তাহলে বলি আপনিকে। কখনও কালি পুজোর সময় উপোস করছেন? সেই সকাল থেকে রাত ২ টো পর্যন্ত না খেয়ে থাকাটা হাতীকে হাফ প্যান্ট পরানোর মতোই শক্ত। কারণটা হল সহ্য় করতে না পারা "খিদে"। তার উপর প্রথমে পেট গুরগুর, পরে গ্যাস-অম্বল। সঙ্গে প্রতিবেশির বানানো লুচির গন্ধে শরীর ওষ্ঠাগত। এমন পরিস্থিতিতে শরীরের কোন ভালটা হয় শুনি?
যা বললেন সব সত্যি! কিন্তু এমন কাঁচুমাচু পরিস্থিতিতেই যে শরীর চাঙ্গা হয়ে ওঠে, তার প্রমাণ দিচ্ছে হাজারো গবেষণা। সেই সব স্টাডি অনুসারে উপোস করা মানে শরীরের সামগ্রিক সিস্টেমটার একবার রুবুট হয়ে যাওয়া। আর কম্পিউটার হোক কী মোবাইল, রিস্টার্টের পর যেমন পাগলা ঘোড়ার মতো দৌড়ায়, শরীরও তেমন চাঙ্গা হয়ে ওঠে। শুধু তাই নয় বোনাস হিসেবে মেলে আরও অনেক উপকার, যেমন ধরুন...
১. আয়ু বৃদ্ধি পায়:
একেবারে ঠিক শুনেছেন বন্ধু! উপোস করলে কিন্তু সত্যিই আয়ু বাড়ে। কারণ সারা দিন না খেয়ে থাকলে শরীরে হাজারো-লক্ষ সেল নিজেকে রিবুট করতে শুরু করে দেয়। ফলে প্রতিটি কোষের কর্মক্ষমতা এতটাই বেড়ে যায় যে ছোট-বড় কোন রোগই দেহের ধারে কাছে আসতে পারে না। সেই সঙ্গে শরীরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায় চোখে পরার মতো। ফলে আয়ু বাড়তেও সময় লাগে না।
২. রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার শক্তি বৃদ্ধি পায়:
উপোস করা মাত্র শরীরের প্রতিটি অঙ্গ নিজেকে পরীক্ষা করতে শুরু করে দেয় যে কোথাও কোনও গন্ডগোল আছে কিনা। আর যে মুহূর্তে কোনও খারাপ কিছু ধরা পরে আমনি শরীরের নিজস্ব চিকিৎসকেরা সেই পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে চলে আসে। ফলে দেহের প্রতিটি অঙ্গ, প্রতিটি কোষ এবং শিরা-উপশিরারা এতটাই কর্মক্ষম হয়ে ওঠে যে সার্বিকভাবে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। আর একবার ইমিউনিটি বেড়ে গেলে রোগভোগের আশঙ্কাও যে কমে, তা তো বলাই বাহুল্য!
৩. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে:
উপোস করলে শরীররে অন্দরে লেপটিন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। যে কারণে হজম ক্ষমতার মারাত্মক উন্নতি ঘটে। ফলে বদ-হজম এবং গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যা কমে যেতে সময় লাগে না। এবার বুঝেছেন তো খাদ্যরসিক বাঙালি মাঝে মাঝে উপোস করলে কত উপকারই না পাওয়া যায়।
৪. হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে:
মাসে একবার উপোস করলে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়। সেই সঙ্গে ডায়াবেটিসের মতো মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে মাসে এক দিন না খেয়ে থাকলে প্রায় হার্টের রোগ হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৫৮ শতাংশ কমে যায়। শুধু তাই নয় একদিন উপোশ করলে আমাদের শরীরে হিউমেন গ্রোথ হরমোনের মাত্র বৃদ্ধি পায়। ফলে পেশির গঠন ভাল হয় এবং ওজন কমতে শুরু করে।
৫.ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ দূরে থাকে:
একদিন শুধু জল ছাড়া আর কিছু না খেয়ে থাকলে সেল ডিভিশন ধীরে হতে শুরু করে। ফলে ক্যান্সার সেলের বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যায়। তবে এক্ষেত্রে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।
৬. ব্রেন পাওয়ার বাড়ে:
বুদ্ধির ধার বাড়ুক, সেই সঙ্গে বৃদ্ধি পাক স্মৃতিশক্তিও, এমনটা যদি চান তাহলে কখনও-সখনও উপোস করতে ভুলবেন না যেন! কারণ এমনটা করলে মস্তিষ্কের অন্দরে ইনফ্লেমেশনের মাত্রা কমতে শুরু করে। ফলে ব্রেন ফাংশানের এত মাত্রায় উন্নতি ঘটে যে কোনও ধরনের ব্রেন ডিজিজ যেমন ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না, তেমনি আরও নানাবিধ উপকার পাওয়া মেলে।
৭. শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়ে:
বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে মাঝে মধ্যে উপোস করলে শরীরের অন্দরে বেশ কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে। বিশেষত হরমোনের ক্ষরণে কিছু বদল আসে, যার প্রভাবে ওজন হ্রাসের প্রক্রিয়া যেমন ত্বরান্বিত হয়, তেমনি সার্বিকভাবে শরীরে ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।
৮. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসে:
উপোস করলে শরীরে নুনের পরিমাণ কমতে শুরু করে। আর যেমনটা আপনাদের সবারই জানা আছে যে রক্তে নুনের পরিমাণ যত কমে, তত ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে চলে আসার সম্ভাবনা যায় বেড়ে। তাই তো যাদের পরিবারে উচ্চ রক্তচাপের ইতিহাস রয়েছে, তাদের মাঝে মধ্যেই উপোস করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।
৯. ডায়াবেটিসের মতো রোগে ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না:
বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে মাসে ১-২ দিন উপোস করা শুরু করলে ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার কোনও আশঙ্কাই থাকে না।
১০. ইনফ্লেমেশনের মাত্রা কমে:
নানাবিধ ব্যাকটেরিয়ার মার থেকে বাঁচাতে প্রতিদিনই শরীর নিজের অন্দরে ইনফ্লেমেশন বা প্রদাহের জন্ম দেয়। কিন্তু কোনও করণে যদি ইনফ্লেমেশনের মাত্রা বেড়ে যেতে শুরু করে, তাহলে কিন্তু বিপদ! কারণ সেক্ষেত্রে নানাবিধ হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যেমন বাড়ে, তেমনি ক্যান্সার এবং আর্থ্রাইটিসের মতো মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। তাই দেহের অন্দরে কোনও ভাবেই যাতে প্রদাহের মাত্রা বৃদ্ধি না পায়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। আর এই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে উপোস। কীভাবে? বেশ কিছু স্টাডি অনুসারে মাঝে-মধ্যে উপোস করলে শরীরে প্রদাহের মাত্রা কমতে সময় লাগে না। ফলে কোনও ধরনের বিপদ হওয়ার সম্ভাবনাও কমে।