Just In
ওয়ার্ল্ড সন্টেরিং ডে: আজ একটু অলসভাবে হাঁটার দিন!
একাধিক গবেষণায় ইতিমধ্যেই একথা প্রমাণিত হয়েছে যে হলকা চালে কয়েক মিনিট হাঁটলেই মন ভাল হয়ে যায়।
প্রতি বছর সারা বিশ্বজুড়ে আজকের দিনে সাধারণ মানুষকে অলসভাবে এদিক-সেদিক হাঁটার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। কারণ তাদের মনে হয়, ব্যস্ত জীবনের শিকল ছিঁড়ে একদন অন্তত শরীরের দিকে নজর দেওয়া যেতেই পারে। আর শরীরকে রোগমুক্ত রাখতে হাঁটার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।
একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে প্রতিদিন কম করে ২০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করলে একাধিক রোগ দূরে থাকে। আর যদি বলেন হাতে সময় নেই। তাহলে তো বলতে হয় আপনার বাঁচার ইচ্ছাটাই নেই। কারণ বাঁচতে গেলে যে বন্ধুরা শরীরের অন্দরের খেয়াল রাখতেই হবে। না হলে আজকের এই স্ট্রেসের দুনিয়ায় শরীর নামক ইমারতটি যে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পরবে।
সকালে হাঁটলেই কেবল শরীরের উপকার হয়, এমন নয়। হাতে যদি সত্য়িই সময় না থাকে, কোনও চিন্তা নেই! অফিস থেকে ফেরার সময় কিছুটা রাস্তা হেঁটে নিন না, তাহলেও দেখবেন উপকার মিলবে।
এখন প্রশ্ন হল হাঁটলে কীভাবে শরীরের উপকার হয়? চলুন খোঁজ লাগানো যাক সে ব্যাপারে।
১. মন খুশি খুশি হয়ে যায়:
একাধিক গবেষণায় ইতিমধ্যেই একথা প্রমাণিত হয়েছে যে হলকা চালে কয়েক মিনিট হাঁটলেই মন ভাল হয়ে যায়। আসলে হাঁটার সময় আমাদের মস্তিষ্কে এন্ডোরফিন নামে একটি হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়, যা নিমেষে মন খারাপকে আনন্দে বদলে দেয়।
২. এনার্জি লেভেল বেড়ে যায়:
ইউনিভার্সিটি অব জর্জিয়ার তত্ত্বাবধানে হওয়া এক সমীক্ষায় দেখা গেছে সারা দিনে যে কোনও সময় ২০ মিনিট হাঁটলে সারা শরীরে রক্ত প্রবাহ বেড়ে যায়। ফলে এনার্জির ঘাটতি কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যায় দূর হয়।
৩. হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়:
চিকিৎসকদের মতে সারা দিনে ২০ মিনিট হাঁটলে নানাবিধ হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৮ শতাংশে কমে যায়। আর এই যদি এই সময়টা ৪০ মিনিট এনে দাঁড় করতে পারেন, তাহলে তো কথায় নেই! সেক্ষেত্রে হার্ট ডিজিজের কারণে অসুস্থ হয়ে পরার সম্ভাবনা প্রায় ১৮-২০ শতাংশ কমে যায়।
৪. আয়ু বৃদ্ধি পায়:
ঘাম ঝড়িয়ে হাঁটতে হবে না, হলকা চালে একটু এদিক সেদিক হাঁটলেই উপকার মিলবে। যেমন ধরুন কম বয়সে হঠাৎ মৃত্য়ুর হাত থেকে রক্ষা পাতে হাঁটার কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। সেই সঙ্গে শরীরে সচলতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে একাধিক লাইফ স্টাইল ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও হ্রাস পায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আয়ুর বৃদ্ধি ঘটে।
৫. ডায়াবেটিসের মার থেকে রক্ষা মেলে:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে লাঞ্চ এবং ডিনারের পর নিয়ম করে হাঁটার অভ্যাস করলে শরীরে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে থাকে না বললেই চলে। প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই আমাদের দেশ ডায়াবেটিস ক্যাপিটালে পরিণত হয়েছে। শুধু তাই নয়, এদেশে প্রতি বছর নতুন করে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যাও ক্রমাগত বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে সুস্থ রাখতে এইটুকু কসরত করতেই পারেন বলে মনে হয়, তাই না!
৬. স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটে:
স্মৃতিশক্তি কার কতটা শক্তিশালী হবে, তা নির্ভর করে মস্তিষ্কের হিপোকম্পাস অংশের উপর। আর প্রতিদিন হাঁটলে হিপোকম্পাসের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই স্মৃতিশক্তি এবং মনে রাখার ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। ফলে ডিমেনশিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়।
৭. ওজন হ্রাস পায়:
প্রতিদিন ২০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করলে পেটের চর্বি বা ভিসারেল ফ্যাট কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে শরীরের অন্যত্র জমে থাকা অতিরিক্ত মেদও কমে যায়। ফলে সার্বিকভাবে ওজন হ্রাস পায়। তাই তো যারা অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগছেন, তারা আজ থেকেই অল্প বিস্তর হাঁটা শুরু করে দিন। দেখবেন উপকার পাবেন।