Just In
আপনি কি চান সিঁদুরের কারণে আপনার বাচ্চার প্রাণ যাক?
সিঁদুরে যে পরিমাণ সীসা থাকে, সেই পরিমাণ যদি কোনও বাচ্চার শরীরে প্রবেশ করে যায়, তাহলে প্রথমেই প্রভাব পরে ব্রেনের একটি বিশেষ অংশের উপর।
বঙ্গ সংস্কৃতির সঙ্গে সিঁদুরের সম্পর্ক অনেক দিনের। পুজো-পার্বণ থেকে শুরু করে বিবাহিত নারীদের জীবনের অন্তরঙ্গ অঙ্গ হিসেবে সিঁদুরের কদর সারা ভারতবর্ষ জুড়ে। কিন্তু এবার মনে হয় সময় এসে গিয়েছে সংস্কতিতে বদল আনার।
কেন এমন কথা বলছি তাই ভাবছেন তো? আসলে সম্প্রতি সিঁদুরের উপর একটি গবেষণা চালানো হয়েছিল। আমেরিকা এবং ভারতের বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহ করে আনা সিঁদুরের স্যাম্পেলের উপর এই পরীক্ষাটি চালাতে গিয়ে গবেষকরা লক্ষ করেছিলেন উভয় দেশেই বিক্রি হওয়া সিঁদুরে যে পরিমাণে লেদ বা সীসা রেয়েছে, তা শরীরে পক্ষে বিষের সমান। সহজ কথায় মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে সীসা সহযোগে বানানে সিঁদুর শরীরের সংস্পর্সে এলে মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে, বিশেষত বাচ্চাদের। তাই সাবধান হওয়ার সময় মনে হয় এসে গিয়েছে বন্ধুরা।
কী
দেখা
গিয়েছিল
গবেষণা
চলাকালীন?
আমেরিকান
জার্নাল
অব
পাবলিক
হেলথে
প্রকাশিত
এই
গবেষণা
পত্র
অনুসারে
ভারতবর্ষের
নানা
রাজ্যে
বিক্রি
হওয়া
প্রায়
৮০
শতাংশ
সিঁদুরেই
২০
মাইক্রোগ্রামের
থেকে
বেশি
মাত্রায়
লেদ
রয়েছে।
চিকিৎসকেদের
মতে
এই
পরিমাণ
লেদ
নিমেষে
শরীরকে
ঝাঝরা
করে
দেওয়ার
জন্য
যথেষ্ট।
শুধু
তাই
নয়,
মায়ের
হাত
থেকে
সিঁদুর
যদি
কোনওভাবে
বাচ্চার
শরীরের
অন্দরে
চলে
যায়,
তাহলে
তো
আরও
বিপদ!
সেক্ষেত্রে
যে
যে
শারীরিক
সমস্যা
হওয়ার
আশঙ্কা
থাকে,
সেগুলি
হল...
কী দেখা গিয়েছিল গবেষণা চলাকালীন?
আমেরিকান জার্নাল অব পাবলিক হেলথে প্রকাশিত এই গবেষণা পত্র অনুসারে ভারতবর্ষের নানা রাজ্যে বিক্রি হওয়া প্রায় ৮০ শতাংশ সিঁদুরেই ২০ মাইক্রোগ্রামের থেকে বেশি মাত্রায় লেদ রয়েছে। চিকিৎসকেদের মতে এই পরিমাণ লেদ নিমেষে শরীরকে ঝাঝরা করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। শুধু তাই নয়, মায়ের হাত থেকে সিঁদুর যদি কোনওভাবে বাচ্চার শরীরের অন্দরে চলে যায়, তাহলে তো আরও বিপদ! সেক্ষেত্রে যে যে শারীরিক সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে, সেগুলি হল...
১. বাচ্চার ব্রেন পাওয়ার কমে যায়:
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে সিঁদুরে যে পরিমাণ সীসা থাকে, সেই পরিমাণ যদি কোনও বাচ্চার শরীরে প্রবেশ করে যায়, তাহলে প্রথমেই প্রভাব পরে ব্রেনের একটি বিশেষ অংশের উপর। যে কারণে ধীরে ধীরে শেখার ক্ষমতা কমে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে বিহেবিরাল প্রবলেম এবং শারীরিক গ্রোথ আটকে যাওয়ারও মতো জটিল সমস্যাও দেখা দেয়। তাই সাবধান! একান্তই যদি সিঁদুর ছাড়া থাকতে না পারেন, তাহলে একেবারে অল্প পরিমাণে সিঁথিতে লাগান। আর মনে করে সিঁদুর লাগানোর পর হাতটা ধুয়ে নিন। এমনটা করলে বাচ্চার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কিছুটা হলেও কমে।
২. একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের মারাত্মক ক্ষতি হয়:
সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশ করা একটি রিপোর্ট অনুসারে বাচ্চার রক্তে কোনওভাবে যদি সীসা মিশে যায় তাহলে সারা শরীরে এত মাত্রায় বিষ ছড়িয়ে যায় যে ধীরে ধীরে মস্তিষ্কের পাশাপাশি দেহের একাধিক অঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দিতে শুরু করে। ফলে ভযঙ্কর কিছু ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাই মায়েরা দয়া করে সিঁদুর লাগানোর পর বাচ্চার কাছাকাছি যাবেন না। শুধু তাই নয়, দুর্গা ঠাকুরের ভাসানের সময় যতটা সম্ভব বাচ্চাদের সিঁদুর খেলার জায়গা থেকে দূরে রাখবেন। সেই সঙ্গে নিজেরাও কম পরিমাণ সিঁদুরের সংস্পর্শে আসবেন। কেন এমন উপদেশ দিচ্ছি তাই ভাবেছেন তো? আসলে বেশ কিছু পরীক্ষায় দেখা গেছে সিঁদুরে উপস্থিত লেদের কারণে নানাবিধ ত্বকের রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই তো বেশি মাত্রায় সিঁদুর মুখে লাগাতে মানা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
৩. লিভার এব কিডনির মারাত্মক ক্ষতি হয়:
বাচ্চার রক্তে জমতে থাকা লেদ, লিভার এবং কিডনির মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় এই দুই অঙ্গের অন্দরে মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে টক্সিক উপাদান ছেড়ে দিয়ে যায়। ফলে এক সময়ে গিয়ে লিভার এবং কিডনি এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয় যে, কাজ করাই বন্ধ করে দেয়। আর এমনটা হলে কী হতে পারে তা নিশ্চয় আর বলে দিতে হবে না?
৪. ভাবী মা এবং বাচ্চার মারাত্মক ক্ষতি হয়:
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে সিঁদুর লাগানোর পরে একটু হলেও তা হাতে লেগে থাকে। সেই সিঁদুর হাতের মাধ্যমে যদি মুখ হয়ে শরীরের অন্দরে চলে যায়, তাহলেই বিপদ! কারণ ভাবী মায়ের শরীরে যদি কোনও ভাবে সিঁদুরে থাকা লেদ প্রবেশ করে যায়, তাহলে মায়ের তো ক্ষতি হয়ই। সেই সঙ্গে মাতৃগর্ভে থাকা বাচ্চার শরীরের উপরও মারাত্মক কুপ্রভাব পরে।
৫. অল্প-বেশির প্রশ্নই ওঠে না:
কত পরিমাণ সীসা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক? এই প্রশ্নের কোনও উত্তর হয় না। কারণ অল্প পরিমাণে হলেও লেদ যদি শরীরের অন্দরে চলে যায়, তাহলেও মারাত্মক ক্ষতি করে। এবার ভাবুন সিঁদুরে কম-বেশি ২০ এম জি-এর কাছাকাছি সীসা থাকে। এই পরিমাণ যদি শরীরে প্রবেশ করে, তাহলে কতটাই না ক্ষতি হতে পারে আমাদের।
৬. মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে:
সিঁদুরের কারণে শরীরে লেদের প্রবেশ ঘটার কারণে বছর বছর মৃত্যুর সংখ্যাটা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। ২০১৩ সালে এই কারণে সারা বিশ্বে মারা গেছে প্রায় ৮৫৩০০০ জন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে আগামী দিনে এই সংখ্যাটা আরও বাড়বে, যদি না এখন থেকেই মায়েরা সচেতন হন তো! কারণ সীসা বয়স দেখে ক্ষতি করে না। তাই সাবধান হওয়ার সময় মনে হয় এসে গেছে, তাই না!