Just In
- 14 min ago রাতে খারাপ এবং ভয়ের স্বপ্ন আসে? সহজ জ্যোতিষী সমাধান স্বস্তি দেবে
- 2 hrs ago আপনি কি সেলফি তুলতে পছন্দ করেন? বিশেষজ্ঞরা বলছেন সেলফি স্বাস্থ্যকর
- 2 hrs ago হিন্দু নববর্ষের ৩ দিন আগেই গ্রহ পরিবর্তন, শনির প্রভাবে অর্থ-বৃষ্টির সম্ভাবনা এই রাশিগুলিতে
- 20 hrs ago এপ্রিল মাসে ৪ গ্রহের স্থান পরিবর্তন, রাজযোগ ও সৌভাগ্যে ফুলে ফেঁপে উঠবে এই রাশির জাতকরা, দেখুন
হাত দিয়ে খাবার খেলে কি হতে পারে জানেন?
এই যে বাঙালি সহ বহু দেশের বাসিন্দারাই হাত দিয়ে খাবার খায়, এর পিছনে আসল কারণ কী? হঠাৎ হাত দিয়ে খাওয়ার রেওয়াজই বা কেন চালু হল?
কবে থেকে জানা নেই! তবে কৌতুহলটা যেন মন থেকে যাচ্ছেই না। চড়ুই পাখি যেমন ঘরের ঘুলঘুলির মধ্যে বাসা বাঁধে, তেমনিই ভাবনাটা যেন মনের অলি-গলির স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে উঠেছে। তাই তো এই প্রবন্ধটি লেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া!
নিশ্চয় ভাবছেন কী নিয়ে ভাবছি, তাই তো? আরে মশাই এই যে বাঙালি সহ বহু দেশের বাসিন্দারাই হাত দিয়ে খাবার খায়, এর পিছনে আসল কারণ কী? হঠাৎ হাত দিয়ে খাওয়ার রেওয়াজই বা কেন চালু হল? এই সব প্রশ্নগুলি এতটা জ্বালাচ্ছিল যে একদিন হাজির হোলাম ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে। সেখানে গিয়ে যা জানলাম তাতে তো অবাক হওয়ার জোগাড়!
একাধিক প্রাচীন পুঁথি ঘেঁটে জানা গেল সেই সুপ্রাচীন কালে আমাদের দেশে হাত দিয়ে খাবার খাওয়ার রেওয়াজ শুরু হয়েছিল। আর এমনটা হওয়ার পিছনে ছিল কিছু শারীরির কারণ। কী কারণ? লক্ষ করে দেখা গিয়েছিল হাত দিয়ে খাবার খেলে নাকি শরীরের দারুন উন্নতি হয়, সেই সঙ্গে একাধিক রোগও দূরে পালায়। আর এই ধরণার মধ্যে যে কোনও ভুল ছিল না, সেকথা আধুনিক গবেষণাতেও প্রমাণ হেয়েছে।
সম্প্রতি একদল বিজ্ঞানী এই নিয়ে গবেষনা শুরু করেছিলেন। তাদের জানার ইচ্ছা ছিল আদৌ শরীরের ভাল-মন্দের সঙ্গে হাত দিয়ে খাওয়ার কোনও যোগ রয়েছে কিনা। এই নিয়ে পরীক্ষা চালাতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা দেখেন...
১. আয়ুর্বেদের যোগ রয়েছে:
বেদে লেখা রয়েছে হাত দিয়ে খাবার খাওয়ার আমাদের হাতের একাধিক নার্ভ অ্যাকটিভ হয়ে যায়, যার সরাসরি প্রভাব পরে আমাদের মস্তিষ্কের উপর। সেই সঙ্গে শরীরের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হয় যে বায়ু,পিত্ত এবং কফ, এই তিনটি এলিমন্টের মধ্যকার ভারসাম্য বজায় থাকে। ফলে কোনও রোগ ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। প্রসঙ্গত, যেমনটা আপনাদের সকলেরই জানা আছে যে আয়ুর্বেদ শাস্ত্র অনুসারে যে কোনও রোগ শরীরে বাসা বাঁধার পিছনে বায়ু-পিত্ত-কফের একটা ভূমিকা রয়েছে। তাই একবার যদি এই তিনটি উপাদানের মধ্যে ভারসাম্য ফিরে আসে, তাহলে শরীর নিয়ে আর কোনও চিন্তাই থাকে না। এখানেই শেষ নয়, আধুনিক গবেষণা বলছে হাত দিয়ে খাওয়ার সময় আঙুলের একেবারে মাথার কাছে থাকা নার্ভগুলি যখনই খাবারের স্পর্শ পায়, তাখনই একটা বিশেষ সিগনাল স্টমাকে এসে পৌঁছায়। ফলে খাবারটি শরীরে প্রবেশ করার আগেই পাকস্থলী নিজের কাজ করার জন্য় প্রস্তুত হয়ে যায়।
২. যে যেই কাজটা জানে তাকে সেই কাজই করা উচিত:
হাত হল এমন একটি অঙ্গ যা একাধিক কাজ করার জন্য তৈরি হয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হল খাবার খাওয়া। তাই অকারণ কাঁটা-চমচ ব্যবহার করার তো কোনও প্রয়োজন চোখে পরে না, যদি না আপনি পাশ্চাত্য সভ্যতাকে অনুসরণ করতে চান তো। তবে একটা কথা মাথায় রাখা প্রয়োজন যে এক্ষেত্রে পশ্চিমী সভত্য়কে অনুসরণ করলে কিন্তু বিপদে পরবেন!
৩. পুষ্টির ঘাটতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে না:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে হাত দিয়ে খাবার খাওয়ার সময় তাড়াহুড়ো করে খাবার খাওয়া সম্ভব হয় না। ফলে খাবার ঠিক মতো হজম হওয়ার সুযোগ পায়। আর যেমনটা সকলেরই জানা আছে, খাবার ঠিক মতো হজম হলে শরীর তার প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান পেয়ে যায়। ফলে পুষ্টির অভাব হওয়ার কারণে নানাবিধ রোগ হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।
৪. শরীরচর্চার একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ:
হাত দিয়ে খাবার খাওয়ার সময় একাধিক পেশির সঞ্চালন হতে থাকে। ফলে হাতের পাশাপাশি সারা শরীরে রক্তের সরবরাহ বেড়ে যায়। আর এমনটা হওয়া মাত্র বিভিন্ন অঙ্গে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তও পৌঁছে যায়। ফলে শরীরের প্রতিটি অংশ উজ্জীবিত হয়ে ওঠে।
৫. হজমের রোগ সেরে যায়:
একেবারেই ঠিক শুনেছেন! হাত দিয়ে খাবার খেলে বদ-হজম এবং গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যা মাথা তুলে দাঁড়ানোর সুযোগই পায় না। আসলে হাত দিয়ে খাবার খাওয়ার সময় আমাদের হাতে থাকা বেশ কিছু উপকারি ব্যাকটেরিয়া মাঝে মধ্যে শরীরে প্রবেশ করার সুযোগ পেয়ে যায়। এই ব্যাকটেরিয়াগুলি হজমের উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি মুখ, গলা এবং ইন্টেস্টাইনকে সুরক্ষিত রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৬.ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে:
জার্নাল অব ক্লিনিকাল নিউট্রিশনে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুসারে তাড়াতাড়ি খাওয়ার সঙ্গে ডায়াবেটিস রোগের সরাসরি যোগ রয়েছে। তাই তো সবারই হাত দিয়ে খাবার খাওয়া উচিত। কারণ যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে হাত দিয়ে খাওয়ার সময় নাকে-মুখে গুঁজে খাওয়া সম্ভবই হয় না। ফলে ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।
৭. খাবারে মন বসে:
শুধু যে পড়াশোনাই মন দিয়ে করতে হয়, এমন নয় কিন্তু। খাওয়া-দাওয়ার সময়ও মনটাকে বেঁধে রাখার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ খাবার খাওয়ার সময় মনকে সঙ্গে না রাখলে যেমন তৃপ্তি পাওয়া যায় না, তেমনি শরীরেরও অনেক ক্ষতি হয়। সেই কারণেই তো হাত দিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। কারণ একাধিক কেস স্টাডিতে দেখা গেছে কেউ যখন কাঁটা-চামচের পরিবর্তে হাতের সাহায্য় নেন খাওয়ার সময়, তখন প্রতিটা দানার সঙ্গে তার মনের একটা সংযোগ তৈরি হয়। ফলে নানাদিক থেকে বেশ উপকার মেলে।