Just In
ভুলেও এবার থেকে একা একা খাবার খাবেন না যেন!
সম্প্রতি একটি গবেষণা পত্র প্রকাশিত হয়েছে, তাতে একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে যারা সাধারণত একা একা খাবার খেতে অভ্যস্ত তারা বেশিরভাগই মেটাবলিক সিনড্রমের শিকার।
একাকিত্ব। খেয়াল করে দেখুন মাত্র চারটে শব্দ। কিন্তু এর মার বড়ই ভয়ানক। আর আজকাল তো আমরা সবাই কেমন যেন একা। কেউ চাকরির খোঁজে দেশের বাইরে, তো কেউ এত ব্যস্ত যে সময় নেই পরিবারের সঙ্গে সমায় কাটানোর। ফলে জীবনের গাড়ি কেমন সঙ্গী ছাড়াই ছুটে চলেছে সময়ের হাইওয়েতে।
একা একা থাকার কারণে মনের ক্ষতি তো হচ্ছেই। কিন্তু খেয়াল রাখেন কি এই একই কারণে শরীরেরও মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। বিশেষত সকাল-বিকাল একা একা খাওয়ার কারণে শরীরে যাচ্ছে একেবারে ভেঙে। মানে! একা খাওয়ার সঙ্গে শরীরের কী সম্পর্ক মশাই! আছে সম্পর্ক, আর সে সম্পর্ক বেজায় গভীর। সম্প্রতি একটি গবেষণা পত্র প্রকাশিত হয়েছে, তাতে একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে যারা সাধারণত একা একা খাবার খেতে অভ্যস্ত তারা বেশিরভাগই মেটাবলিক সিনড্রমের শিকার।
দক্ষিণ করিয়ার একদল গবেষক প্রায় ৭৭২৫ জনের উপর এই গবেষণাটি চালিয়েছিলেন। পরীক্ষাটি চলাকালীন তারা লক্ষ করেছিলেন যারা দিনের পর দিন একা একা খেয়ে থাকেন, তাদের ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কা প্রায় ৪৫ শতাংশ বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে হার্টের রোগ, ডায়াবেটিস এবং কোলেস্টেরলের মতো মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও প্রায় ৬৪ শতাংশ বেড়ে যায়। এবার বুঝেছেন তো একাকিত্ব কতটা ভয়ানক। তাই চটজলদি স্বর্গে যাওয়ার প্ল্যান না থাকলে এবার থেকে দয়া করে আর একা একা খাবেন না। কাউকে না পান কোনও বন্ধুকে ডেকে নেবেন। আর তারপর দুজন মিলে খাবার ভাগ করে নেওয়ার পাশপাশি অল্প-বিস্তর সুখ-দুঃখও ভাগাভাগি করে নেবেন। দেখবেন মন এবং শরীর, দুইই চাঙ্গা হয়ে উঠবে।
এত দূর পড়ার পর নিশ্চয় প্রশ্ন জাগছে মনে যে কিভাবে একা খাওয়ার সঙ্গে ওজন বৃদ্ধি বা বাকি সমস্যা যোগ রয়েছে? আসলে এমনটা লক্ষ করে দেখা গেছে কেউ যখন একা একা খাবার খায়, তখন শুধু পেট ভরিয়ে নেওয়াটাই তার কাছে মূল লক্ষ থাকে। তাই সে সময় জাঙ্ক ফুড খাওয়ার দিক ঝোঁক বাড়ে। আর যেমনটা আপনাদের সবারই জানা আছে যে বেশি মাত্রায় জাঙ্ক ফুড বা ভাজা জাতীয় খাবার খেলে স্বাভাবিকভাবেই ওজন বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে লেজুড় হয় বাকি সব রোগও।
এখন প্রশ্ন হল যাদের একা খাওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই, তারা কী করবেন? খুব সহজ! নিজের কথা ভেবে জাঙ্ক ফুডের পরিবর্তে এই প্রবন্ধে আলোচিত খাবারগুলি খাওয়া শুরু করতে হবে, তাহলেই দেখবেন কেল্লাফতে। আসলে এই খাবারগুলি যে শুধু পেট ভরাবে এমন নয়, সেই সঙ্গে শরীর এবং মনকে চাঙ্গা রাখতেও সাহায্য করবে। তাহলে আর অপেক্ষা কেন বন্ধুরা। একাকিত্বকে হারিয়ে সুস্থ জীবন ফিরে পেতে এক্ষুনি চোখ রাখুন বাকি প্রবন্ধে।
১. বাদাম:
অফিস থেকে ফিরে বেশ ক্লান্ত লাগছে। সেই সঙ্গে ক্ষিদেটাও কেমন যেন চিমটি কাটে চলেছে? ফিকার নট! ভাল করে মুখ হাত-পা ধুয়ে এক বাটি বাদাম আর পছন্দের কোনও বই নিয়ে শুয়ে পরুন। বই পড়তে পড়তে চলুক বাদাম খাওয়া। দেখবেন ক্ষিদেও কমবে, সঙ্গে একাকিত্বও দূর হবে। শুধু কী তাই, বাদামে উপস্থিত একাধিক উপাকারি উপাদান শরীরকে ঠিক রাখতেও সাহায্য করবে। আর যদি বই পড়তে মন না চায়, তাহলে টিভি বা ওয়াটস অ্যাপ তো আছেই!
২. আপেল:
কথায় আছে না আপেল খান, আর ডাক্তারের নাম্বার ভুলে যান! বাস্তবিকই প্রতিদিন যদি একটা করে আপেল খাওয়া যায়, তাহলে শরীর নিয়ে কোনও চিন্তাই থাকে না। কারণ ফলটির অন্দরে উপস্থিত পলিফেনল নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হার্ট এবং মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর মধ্যে দিয়ে নানাবিধ মেটাবলিক ডিজিজকে দূরে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৩. সবুজ শাক-সবজি আর রুটি:
রাত্রের খাবার যদি একা একাই খেতে হয়, তাহলে খেয়াল করে সে সময় রুটি বা ভাতের সঙ্গে জমিয়ে কোনও সবজি খেতে হবে। সঙ্গে থাকতে পারে মাছ অথবা মাংস। এমন সব খাবার খেলে একদিকে ডায়াবেটিস এবং রক্তচাপের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা যেমন কমবে, তেমনি অন্যদিকে শরীরের অন্দরে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড এবং প্রোটিনের ঘাটতি দূর হওয়ার কারণে আরও অনেক উপকার মিলবে। ফলে একাকিত্ব যতই ছেপে ধরুন না কেন, শরীরের কোনও ক্ষতি করতে পারবে না।
৪. ডিম:
রাত্রে বা দুপুরে ভাত বা রুটির সঙ্গে ১-২ ডিম খেতে পারলে কোনও কথাই নেই, কারণ ভাত বা রুটি শরীরের কার্বোহাড্রেটের ঘাটতি দূর করে এনার্জেটিক করে তুলবে, অন্যদিকে ডিমের মধ্যে থাকা একাধিক উপকারি উপাদান ভিটামিন এবং মিনারেলের ঘাটতি দূর করে হার্টকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।