Just In
বাতাস থেকেও ছড়াতে পারে করোনা, জানুন WHO-এর মত
একের পর এক নতুন চমক। যতদিন যাচ্ছে ততই করোনা ভাইরাসের যেন নতুন রুপ ফুটে উঠছে এবং বিজ্ঞানী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষকে ধোঁয়াশার মধ্যে রেখে দিচ্ছে। কখনও নতুন নতুন উপসর্গ নিয়ে হাজির হচ্ছে, কখনও বা পরিবর্তন হচ্ছে ভাইরাস ছড়ানোর পদ্ধতি।
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সময় থেকে এটি বায়ুবাহিত কিনা, তা নিয়ে বহু বিতর্ক জন্ম নিয়েছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দাবি করেছিল যে, করোনা ভাইরাস হাঁচি বা কাশির সময়ে ড্রপলেটস্-এর মাধ্যমে ছয় ফুট দূর পর্যন্ত ছিটকে গিয়ে সংক্রমণ ছড়াতে পারে, তবে এটি বায়ুবাহিত নয়। সেই বিতর্ককে ফের টেনে আনলেন একদল গবেষক। ৩২টি দেশের ২৯৩ জন বিজ্ঞানী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-কে একটি খোলা চিঠি দিয়ে দাবি করেন যে, কেবলমাত্র ড্রপলেটস্ এর মাধ্যমেই নয়, বাতাসের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে করোনা ভাইরাস। তাই এই মর্মে WHO এর গাইডলাইন পরিবর্তনের প্রস্তাবও দেন ওই গবেষকরা।
গবেষকদের দাবি, ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত রোগীর হাঁচি বা কাশি থেকে নির্গত ড্রপলেটস্ এর মাধ্যমে ভাইরাসটি বাতাসে মিশে যায়। বাতাসে মিশে থাকা এই ড্রপলেটস্ শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে যেকোনও ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করলেই সেই ব্যক্তি করোনা দ্বারা সংক্রামিত হতে পারেন।
গবেষকদের এই কথা ও তথ্যের উপর ভিত্তি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংক্রমণ প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণ বিভাগের টেকনিকাল প্রধান বেনেডেট্টা অ্যালেগ্রাঞ্জি একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, ''আমরা মেনে নিচ্ছি যে বাতাসের মাধ্যমেও করোনা ভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তা নিশ্চিতভাবে এখনও বলা সম্ভব নয়। কারণ, তার প্রমাণ এখনও এতটাও জোরালো হয়নি।''
আরও পড়ুন : করোনার আবহে 'বিউবোনিক প্লেগ' এর প্রাদুর্ভাব, দেখে নিন এই রোগের লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায়
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই দাবি একেবারেই উড়িয়ে দিচ্ছে না। বিজ্ঞানীদের দেওয়া সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখার পর, অবশেষে তাঁদের ধারনাকে স্বীকৃতি দিচ্ছে WHO। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোভিড-১৯ বিশ্ব মহামারীর টেকনিকাল লিড মারিয়া ভ্যান কেরখোভ সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, "বাতাস এবং ভাসমান ড্রপলেটস্-এর মাধ্যমে কোভিড-১৯ ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। বাতাসের মাধ্যমেও যে সংক্রমণ ছড়াতে পারে, সে আশঙ্কা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।"
এই তথ্য উঠে আসার পরে সাধারণ মানুষ কিছুটা হলেও চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্ক ব্যবহার, হাত ধোওয়া ও সোশ্যাল ডিস্ট্যান্স মেনে চলা খুবই প্রয়োজন। তাই, যেকোনও রোগ এড়াতে গেলে প্রথমেই নিজেদের সতর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিরোধমূলক সমস্ত গাইডলাইন মেনে চলার পাশাপাশি রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর দিকেও আমাদের বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।