Just In
Don't Miss
কোন সময় গ্রিন টি খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায় জানা আছে?
শরীরকে রোগ মুক্ত রাখতে বাস্তবিকই এই পানীয়টির কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে। কিন্তু কোন সময় গ্রিন টি পান করলে বেশি উপকার পাওয়া যায়, সে বিষযে কোনও ধারণা আছে কি?
না মশাই, এ বিষয়ে তো তেমন কোনও জ্ঞান নেই! চিন্তা নেই, আপনি একা নন। এমন অনেকে আছেন যারা গ্রিন টি পানের সঠিক সময় সম্পর্কে খোঁজ না নিয়েই দিনের পর দিন এই পানীয় পান করে চলেছেন। তবে এমনটা করার কারণে যে কোনও ক্ষতি হচ্ছে, এমন নয়। কিন্তু সঠিক নিয়ম মেনে যদি পান করা যায়, তাহলে আরও উপকার পাওয়া যায়। তাই তো এই প্রবন্ধে এই বিষয়টির উপর আলোকপাত করার চেষ্টা চালানো হল।
দিনের কোন সময় গ্রিন টি খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়?
যতই অন্টিঅক্সিডেন্টে এবং পলিফেনল পরিপূর্ণ হক না কেন, অল্প পরিমাণে হলেও গ্রিন টিতে ক্যাফেইন থাকে। এই কারণে দিনে ৩ কাপের বেশি এই পানীয় খাওয়া কোনওভাবেই চলবে না। আর যদি সময়ের কথা জিজ্ঞাসা করেন, তাহলে সকাল ১০-১১ টা নাগাদ এক কাপ এবং বিকাল ৪-৫ টা নাগাদ এক কাপ গ্রিন টি পান করলে দারুন উপকার পাওয়া যায়। সকাল সকাল এই পানীয়টি পান করলে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। ফলে সারাদিন গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
গ্রিন টি এত স্বাস্থ্যকর কেন?
এই পানীয়টিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। সেই সঙ্গে রয়েছে আরও সব উপাকারি উপাদান, যা শরীরে প্রবেশ করার পর নানাভাবে দেহের গঠনে সাহায্য করে থাকে। যেমন ধরুন...

১. ক্যান্সারের মতো রোগকে দূরে রাখে:
ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের করা এক গবেষণা অনুসারে গ্রিন টিতে উপস্থিত পলিফেনল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের অন্দরে ক্যান্সার সেলের জন্ম আটকে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এই রোগ ধারে কাছে আসার সুযোগ পায় না। এখানেই শেষ নয়, অন্যদিকে অরেকটি গবেষণায় এও দেখা গেছে যে লাং, স্ক্রিন, ব্রেস্ট, লিভার এবং কোলন ক্যান্সারকে দূরে রাখতেও এই পানীয়টি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

২. হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ায়:
হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের গবেষকদের করা এক গবেষণায় দেখা গেছে শরীরে বাড়তে থাকা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর মধ্যে দিয়ে হার্টকে চাঙ্গা রাখতে গ্রিন টি সাহায্য করে থাকে। তবে এখানেই শেষ নয়, আরও নানাভাবে এই পানীয়টি হার্টের খেয়াল রাখে। যেমন ধরুন এক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে হার্টের প্রদাহ কমে। ফলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা প্রায় ৩১ শতাংশ কমে যায়।

৩. রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখে:
ব্লাড প্রেসারের কারণে কি চিন্তায় রয়েছেন? তাহলে আজ থেকেই গ্রিন টি পান করা শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে দৈনিক ২-৩ কাপ গ্রিন টি পান করলে শিরা-ধমনীর উপর রক্তের চাপ কমতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্লাড প্রেসার স্বাভাবিক মাত্রায় নেমে আসে।

৪. টাইপ-২ ডায়াবেটিসকে দূরে রাখে:
আপনার পরিবারে যদি এই মারণ রোগের ইতিহাস থাকে, তাহলে নিয়মিত গ্রিন টি খেতে ভুলবেন না যেন! কারণ এই পানীয়টি পান করা শুরু করলে ইনসুলিন রেজিস্টেন্স কমতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্লাড সুগার মাত্রা ছাড়ানোর আশঙ্কা হ্রাস পায়।

৫. ওজন কমায়:
গ্রিন টিতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মেটাবলিজম রেট এত মাত্রায় বাড়িয়ে দেয় যে খাবার সুন্দরভাবে হজম হতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমার আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। আরেকভাবেও গ্রিন টি ওজন কমিয়ে থাকেন। কীভাবে? গ্রিন টিতে থাকা নানাবিধ উপকারি উপাদান শরীরে উপস্থিত ফ্যাট সেলেদের গলাতে শুরু করে। এই কারণেই ওজন কমে চোখে পরার মতো। তাই কম সময় যে কোমড়ের মাপ কমাতে হয়, তাহলে আজ থেকেই দৈনিক ২-৩ কাপ গ্রিন পান করা শুরু করুন। দেখবেন উপকার মিলবে।

৬. আর্থ্রাইটিস প্রকোপ কমায়:
এক্ষেত্রেও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট নিজের খেল দেখিয়ে থাকে। শরীরে এই উপাদানটির মাত্রা বাড়তে শুরু করলে শরীরের বিভিন্ন অংশে প্রদাহ কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে কার্টিলেজের কর্মক্ষমতা এতটা বেড়ে যায় যে আর্থ্রাইটিসের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না।

৭. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়:
ইমিউন সিস্টমকে শক্তিশালী করে তুলতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে। আর যেমনটা আপনারা ইতিমধ্যেই জেনে গেছেন যে গ্রিন টিতে এই উপাদানটি মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই গ্রিন পান করা শুরু করলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা এতটা বেড়ে যায় যে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাও শক্তিশালী হতে শুরু করে। ফলে কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষার সাহস পায় না।