Just In
"সোয়েট টেস্ট" কি জানা আছে?
সম্প্রতি একদল বিজ্ঞানি অভিনব একটি পরীক্ষার জন্ম দিয়েছেন। যে পরীক্ষায় ঘামকে বিশ্লেষণ করে বলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে শরীরে অন্দরে কোনও রোগ বাসা বেঁধেছে কিনা।
বোতলে রাখা জল ফুরিয়ে গেলে কী করেন? কী আবার! ভরে রাখি। আমাদের শরীরটাও তো একটা বোতলেরই মতো। সেই বোতলে রাখা জল কখনও ঘামের মাধ্যমে, তো কখনও ইউরিনের সঙ্গে বেরিয়ে যেতে থাকে। আর সেই জলের সঙ্গে শরীরের অন্দরে থাকা একাধিক খনিজ, লবন এবং নানাবিধ পুষ্টিকর উপাদানও বেরিয়ে যায়। সেই কারণেই না বেশি মাত্রায় ঘামলে ক্লান্ত লাগে। তাহলে বলতে হয় ঘামের সঙ্গে শরীরের ভাল-মন্দের একটা যোগ রয়েছে। অবশ্যই! আর তাই তো এই প্রবন্ধটি লেখা।
সম্প্রতি একদল বিজ্ঞানি অভিনব একটি পরীক্ষার জন্ম দিয়েছেন। যে পরীক্ষায় ঘামকে বিশ্লেষণ করে বলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে শরীরে অন্দরে কোনও রোগ বাসা বেঁধেছে কিনা। এই পরীক্ষার নাম দেওয়া হয়েছে "সোয়েট টেস্ট"। কীভাবে করা হয় এই পরীক্ষাটি? কী কী বিষয়েই বা লক্ষ করা হয় এই টেস্টটি করার সময়? চলুন এইসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা চালানো যাক।
কী এই পরীক্ষা?
ঘামের মধ্যে কত পরিমাণে নুন বা সোডিয়াম ক্লোরাইড আছে তা পরীক্ষা করে দেখা হয়। আর তার জন্য বিশেষ এক ধরনের কেমিকেল শরীরের বিশেষ কিছু অংশে লাগাতে হয়, যাতে ঘামের পরিমাণ বেড়ে যায়। তারপর ঘামের সঙ্গে শরীরের বাইরে বেরিয়ে আসা নুনকে সংগ্রহ করে বিশেষ পদ্ধতিতে পরীক্ষা করে দেখা হয়।
কী কী ভাবে সাহায্য করে এই পরীক্ষাটি:
মূলত কোনও ব্য়ক্তির শরীরে সিস্টিক ফাইব্রোসিস নামক রোগটি বাসা বেঁধেছে কিনা তা জানতেই অভিনব এই পরিক্ষাটি করা হয়ে থাকে। তবে আরও আনেক রোগের উপস্থিতি জানতে এই পরীক্ষাটি করা যেতে পারে। যেমন, চেস্ট ইনফেকশন কী কারণে হয়েছে, এমনকি ওজন বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা করতেও সোয়েট টেস্ট বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, সিস্টিক ফাইব্রোসিস একটি জিন ঘটিত রোগ। বংশ পরম্পরায় এই রোগটি এক জেনারেশ থেকে আরেক জেনারেশনে ছড়িয়ে যেতে থাকে। এক্ষেত্রে ফুসফুসের অন্দরে মিউকাসের পরিমাণ খুব বেড়ে যায়। ফলে রেসপিরেটারি ইনফকশেন আশঙ্কা বাড়ে।
কীভাবে করা হয় এই সোয়েট টেস্ট?
পরীক্ষাটি চলাকালীন বগলে এবং পায়ে একটি প্যাড লাগানো হয়। তারপর সেই প্যাড অল্প পরিমাণে ইলেকট্রিকাল কারেন্ট পাঠানা হয়। এমনটা করা মাত্র ঘাম হতে শুরু করে। এই সময় নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করে ঘামটা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠান হয়। পরীক্ষার রিপোর্ট দেখলে বুঝতে সমস্যা হয় না যে ঘামে কী পরিমাণ নুন ছিল। সেই মতো পরবর্তি চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।
এই পরীক্ষাটির কী কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে?
একেবারেই না। তাই তো সারা বিশ্বজুড়ে এই পরীক্ষাটি করা হচ্ছে। যদিও আমাদের দেশে কতজন সোয়েট টেস্ট সম্পর্তে জেনে উঠতে পরেছেন তা জানা নেই। তবে যত তাড়াতাড়ি এই পরীক্ষা এদেশে শুরু হয় ততই মঙ্গল। কারণ পরিসংখ্যান বলছে পরিবেশ দূষণ সহ আরও নানা কারণে সিস্টিক ফাইব্রোসিস সহ লাং ইনফেকশনে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে আমাদের দেশে। তাই তো সোয়েট টেস্টের মতো আধুনিক পরীক্ষার প্রয়োজন বাড়ছে ভারতেও।