Just In
রোদ গায়ে মেখে হাঁটেন তো?
খেয়াল করে দেখুন আজকাল আমরা কেমন যেন ঠান্ডার ঘেরাটোপে চলে গেছি। বাড়িতে এসি। বাড়ির বাইরে বেরলেই এসি ক্যাব, না তো বাস। আর অফিসে তো রয়েছেই সেন্ট্রল এসি। ফলে শরীর যেন সারাক্ষণ হীম ঘরে রয়েছে।
খেয়াল করে দেখুন আজকাল আমরা কেমন যেন ঠান্ডার ঘেরাটোপে চলে গেছি। বাড়িতে এসি। বাড়ির বাইরে বেরলেই এসি ক্যাব, না তো বাস। আর অফিসে তো রয়েছেই সেন্ট্রল এসি। ফলে শরীর যেন সারাক্ষণ হীম ঘরে রয়েছে। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে!
কী হচ্ছে সারাক্ষণ এসিতে থাকার কারণে? এমনটা হওয়ার কারণে শরীর যাচ্ছে ভেঙে। কারণ আমাদের দেহকে চালানোর জন্য বেশ কিছু উপাদানের প্রয়োজন পরে। যার মধ্যে অন্যতম হল ভিটামিন ডি, যার প্রধান সোর্স হল সূর্যালোক। আর এখন তো আমাদের গায়ে রোদ লাগার কোনও সুযোগই নেই। কারণ সারাক্ষণ তো আমার এসির অন্দরে ঢুকে রয়েছি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি হচ্ছে। আর এমনটা হওয়ার কারণে ধীরে ধীরে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। যেমন...
১. কথায় কথায় অসুস্থ হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে:
আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা কতটা শক্তিশালী হবে, তা অনেকাংশেই নির্ভর করে ভিটামিন ডি-এর উপর। তাই তো শরীরে এই ভিটামিনটির ঘাটতি দেখা দিলে স্বাভাবিকভাবেই ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে পরতে থাকে। ফলে ছোট-বড় সব ধরনের রোগই ঘিরে ধরে।
২. ক্লান্তি বোধ বেড়ে যায়:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ক্লান্তির সঙ্গে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতির সরাসরি যোগ রয়েছে। সেই কারণেই তো এমন লক্ষণ দেখা গেলে চিকিৎসকেরা প্রথমেই জানার চেষ্টা করেন শরীরে এই বিশেষ ভিটামিনটির ঘাটতি হয়েছে কিনা। তাই যদি দেখেন রাত্রে ঠিক মতো ঘুম হওয়ার পরেও অসম্ভব ক্লান্ত লাগছে, তাহলে একবার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করতে ভুলবেন না যেন!
৩. হাড়ের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে:
আমাদের শরীরের অন্দরে থাকা ২০৬ টি হাড় কতটা শক্তপোক্ত থাকবে তা নির্ভর করে শরীরে ভিটামিন ডি-এর যোগান ঠিক আছে কিনা তার উপর। কারণ হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য প্রয়োজনে আসা ক্যালসিয়ামের শোষণ বাড়াতে ভিটামিন ডি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এই কারণেই তো এই ভিটামিনটির ঘাটতি দেখা দিলে নানাবিধ হাড়ের রোগ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে পিঠে, পায়ে এবং পাঁজরে যন্ত্রণা হওয়ার মতো লক্ষণ দেখা যায়।
৪. মানসিক অবসাদে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে:
মন খারাপের ফাঁদে পরতে চান কি? নিশ্চয় না! তাহলে দিনের কিছুটা সময় গায়ে একটু রোদ লাগানোর চেষ্টা করবেন অথবা যেসব খাবারে ভিটামিন ডি মজুত রয়েছে, এমন খাবার খাবেন। এমনটা করলে শরীরে এই ভিটামিনটির ঘাটতি দূর হবে। সেই সঙ্গে কমবে মানসিক অবসাদ বা ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও। কারণ একথা প্রমাণিত হয়েছে গেছে যে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতির সঙ্গে মানসিক অবসাদের যোগ বেশ নিবিড়।
৫. ক্ষত শুকতে সময় লাগবে:
শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি হতে থাকলে ধীরে ধীরে দেহের ক্ষত সারানোর প্রক্রিয়াটি দুর্বল হয়ে পরতে থাকে। ফলে অনেক বেশি দিন ধরে ক্ষতস্থান খোলা থাকার কারণে সেখান থেকে নানাবিধ জীবাণু শরীরে প্রবেশ করার সুযোগ পেয়ে যায়। আর এমনটা হলে সংক্রমণে আক্রান্ত হওযার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাই তো যদি খেয়াল করে দেখেন যে আগের থেকে অনেক বেশ সময় নিয়ে ক্ষত সারছে। তাহলে সময় নষ্ট না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন এবং সেই সঙ্গে ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া শুরু করবেন। এমনটা না করলেই কিন্তু বিপদ!
৬. চুল পরার হার বেড়ে যাবে:
কয়েক দিন ধরে কি চুল পরার হার খুব বেড়ে গেছে? তাহলে যে বন্ধু সাবধান হওয়ার সময় এসে গেছে। কারণ অনেক সময় শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি দেখা দিলেও এমন ধরনের লক্ষণ মাথা চাড়া দিয়ে ওটে। তাই তো মাথা খালি হয়ে যাওয়ার আগে প্রয়োজনীয় ব্য়বস্থা নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। এক্ষেত্রে পরীক্ষা করে যদি দেখা যায় ভিটামিন ডি-এর ঘাটতির কারণেই এমনটা হচ্ছে, তাহলে ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া শুরু করতে হবে। না হলে কিন্তু বেজায় বিপদ!
এখন প্রশ্ন হল শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি মেটানো যায় কিভাবে? নানাভাবে এই ঘাটতি মেটানো সম্ভব। যেমন ধরুন খাবারের মাধ্যমে ভিটামিন ডি-এর যোগান ঠিক রাখতে পারেন। অনেক খাবারেই এই ভিটামিনটি মজুত রয়েছে। যেমন- মাছ, দুধ, ডিম, মাশরুম প্রভৃতি। আর যদি এই খাবারগুলি খেতে ইচ্ছা না করে, তাহলে সকাল বেলা কিছুটা সময় রোদ গায়ে মেখে হাঁটতে পারেন। আর যদি এটাও করতে ইচ্ছা না করে, তাহলে সাপ্লিমেন্টর সাহায্য নেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায়া নেই।