Just In
- 41 min ago প্রচণ্ড গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে খান সুপারফুড চিয়া সিড!
- 2 hrs ago কাঠফাটা গরমে শরীরে জলের ঘাটতি পূরণ করবে এই ফলগুলি!
- 4 hrs ago নতুন কাজে সাফল্য বৃষ ও কর্কটের, ৫ রাশির জন্য শুভ আজকের দিন, জানতে দেখুন রাশিফল
- 20 hrs ago অতিরিক্ত দই, বিস্কুট খাচ্ছেন? আপনার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, সতর্ক থাকুন
টিচার্স ডে: গুরুদের মহৌষধি!
লম্বা পিরিয়োডের আগে অল্প করে গরম জল খেতে ভুলবেন না। সেই সঙ্গে অল্প বিস্তর ভোকাল ওয়ার্ম আপও করে নিতে পারেন।
আজকের দিনটা কারও পক্ষেই ভোলা হয়তো সম্ভব নয়। কেলেন্ডারের পাতা উল্টে গেলেও, সময় ঘোড়ার দৌড় লাগালেও সেই মানুষগুলোর কথা কিভাবে ভোলা যায়, যাদের সাহায্য ছাড়া আমি আজ আমি হয়ে উঠতে পারতাম না। তুমি হতে না বিজ্ঞানী, আর কালাম হতো না রাষ্ট্রপতি!
কথায় আছে না,"একজন ভাল শিক্ষক অনেকটা মোমবাতির মতো, যিনি নিজেকে পুড়িয়ে আশেপাশের সবাইকে আলোকিত করেন।" সত্যিই তো দিবা-রাত্র গলা ফাটিয়ে ছাত্র নামক গাধাটিকে ঘোড়া বানানোর চেষ্টায় আমাদের শিক্ষকেরা যেভাবে প্রাণপাত করে থাকেন, তা হয়তো আমাদের মা-বাবা করেন না। আপনি হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন যে সেদিন আর নেই। এখনকার শিক্ষকরা সেই আগের মতো আর বাবা-বাছা করে ভালবাসার পরশ মাখিয়ে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করেন না। হয়তো ঠিক বলেছেন। কিন্তু বিশ্বাস করুন এখনও খারাপের মাঝেও ভালর মশাল জ্বলছে। আর এই এই মশলা আগামী দিনেও ব্যাটনের মতো এক হাত থেকে আরেক হাতে পৌঁছে যাবে। কিন্তু কোনও দিন অন্ধকার হতে দেবে না আমাদের চারিপাশকে। তাই তো টিচার্স ডে উপলক্ষে এই প্রবন্ধটি লেখা সেই সব মহান মানুষদের উদ্দেশ্যে যারা এক সময় আমার কান মুলেছিল বলে হয়তো আকাঠ গাধাটা আজ করে কম্মে খেতে পারছে।
শিক্ষকরা আমাদের কথা সারাক্ষণ ভেবে চলেন। আর এমনটা করতে গিয়ে নিজের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়ার সময়ই করে উঠতে পারেন না। তাই তো এই প্রবন্ধে এমন একটি গাইড লাইন পরিবেশন করা হল, যা মেনে চললে একজন শিক্ষকও অসুস্থ হবেন না। তাই বন্ধুরা ঝটপট এই প্রবন্ধটি পড়ে ফেলে শ্রদ্ধার সেই মানুষটিকে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলি হোয়াটসঅ্যাপ করে দিতে ভুলবেন না। জানবেন মেসেজটা পাওয়ার পর নিঃশব্দে অনেক আশীর্বাদ আপনার ভাগ্যে জুটে যাবে।
প্রিয় স্যার এবং ম্যাডাম শরীরকে সুস্থ রাখতে এক্ষেত্রে এই বিষয়গুলির উপর নজর রাখতে ভুলবেন না যেন!
গলার যত্ন নেবেন কিভাবে:
সারা দিন পড়াতে পড়াতে টিচারদের গলার আর কিছু থাকে না। মাঝে মধ্যে এতটাই খারাপ অবস্থা হয়ে যায় যে গলার আওয়াজ পর্যন্ত বিদ্রোহ করে বসে। এমন পরিস্থিতির সম্মুখিন যাতে আর না হতে হয়, তার জন্য এই নিয়মগুলি মানা জরুরি। যেমন-
১. লম্বা পিরিয়োডের আগে অল্প করে গরম জল খেতে ভুলবেন না। সেই সঙ্গে অল্প বিস্তর ভোকাল ওয়ার্ম আপও করে নিতে পারেন। প্রসঙ্গত, ভোকাল ওয়ার্ম আপ হল বিশেষ কিছু এক্সারসাইজ, যা ভোকাল কর্ডের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ পড়ানোর কারণে ভোকল কর্ডে চোট পাওয়ার আশঙ্কাও কমে।
২. পর্যাপ্ত পরিমাণ জল পান জরুরি। এমনটা করলে একদিকে যেমন শরীর চাঙ্গা হয়ে উঠবে, তেমনি ভোকাল কর্ড শুকিয়ে গিয়ে চোট-আঘাত লাগার আশঙ্কাও হ্রাস পাবে।
৩. পড়াতে পড়াতে গলায় অস্বস্তি হলে ভুলেও গার্গেল করবেন না যেন। তাতে ভাল হওয়ার থেকে খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বেশি। এক্ষেত্রে অল্প করে জল খেয়ে নেবেন। দেখবেন উপকার মিলবে।
৪. বেশি চিৎকার করে কথা বলবেন না। এমনটা করলে কিন্তু ভোকাল কর্ডে আঘাত লাগার সম্ভাবনা বাড়বে।
৫. টানা ক্লাস নেওয়ার প্রয়োজন যেদিন পরবে, সেদিন দিনের মাঝে কিছুটা সময় গলাকে আরাম দেবেন। টানা কোনও অঙ্গকে কাজে লাগালে কিন্তু তার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়, তা সে ভোকাল কর্ড হোক, কী অন্য অর্গ্যান। এই কথাটা কখনও ভুলে যাবেন না যেন!
পিঠের খেয়াল রাখার সহজ টিপস:
টিচার মানেই টানা ১ ঘন্টার ক্লাস। আর সেই কারণে দীর্ঘক্ষণ চেয়ারে বসে থাকতেই হয়। এমনটা দিনের পর দিন করার কারণে শিরদাঁড়ার মারাত্মক ক্ষতি হয়। শুধু তাই নয়, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নানা রোগও শরীরে এসে বাসা বাঁধে। এমনটা যাতে স্যার-ম্যাডাম আপনাদের সঙ্গে না ঘটে ,তার জন্য কতগুলি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। যেমন-
১. দীর্ঘক্ষণ বসা বা দাঁড়িয়ে থাকার কারণে যাতে স্পাইনাল কর্ডের কোনও ক্ষতি না হয় তার জন্য নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। বিশেষ করে এমন এক্সারসাইজ করতে হবে, যাতে ঘার এবং স্পাইনাল কর্ডের কর্মক্ষমতা বাড়ে। এক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় মনে রাখা জরুরি। তা হল, চেয়ার কিভাবে বসছেন তার উপর শিরদাঁড়ার ভাল-মন্দ অনেকাংশেই নির্ভর করে। তাই চেয়ারে বসাকালীন বডি পসচার যাতে ঠিক থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখা একান্ত প্রয়োজন।
২. চেয়ারে বসে থাকার সময় পা যখন টানটান করবেন তখন চেয়ারটা একটু পিছনের দিকে হেলিয়ে নেবেন। এমনটা করলে লোয়ার ব্যাক শরীরের নিজের অংশকে সাপোর্ট করবে। তাতে শিরদাঁড়া বা কোমরের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পাবে।
৩. সোজা হয়ে দাড়ানোর সময় কুঁজো হয়ে যাবেন না। সে সময় পেট থাকবে ভিতরের দিকে। এমমনটা করলে শিরদাঁড়া সঠিক পসচারে থাকবে। ফলে স্পাইনাল কর্ডের কিছুটা এক্সারসাইজ হয়ে যাবে।
৪. ভারি কিছু তোলার সময় হাঁটুটা একটু ভেঙে নিয়ে পায়ের পেশির উপর ভর দিয়ে সেই বস্তুটিকে তুলবেন। ভুলেও কিন্তু শিরদাঁড়ার উপর চাপ দিয়ে তুলবেন না। এমনটা করলে যে কোনও সময় স্পাইনাস কর্ডে মারাত্মক আঘাত লাগতে পারে।
৫. টানা কয়েক ঘন্টা পড়াবেন না। এক ঘন্টা অন্তর অন্তর অল্প সময়ের জন্য হলেও ব্রেক নিয়ে নেবেন। এই নিয়মটি মানলে দেখবেন শরীরের কোনও ক্ষতি হবে না।
চোখের যত্নে মানতে হবে ২০-২০-২০ ভিসন রুল:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে দীর্ঘ সময় ধরে বই পড়া, লেখা এবং কম্পিউটারের সামনে কাজ করার কারণে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রতি মিনিটে চোখ বন্ধ করার রেট কমতে থাকে। ফলে চোখের অন্দরে মারাত্মক চাপ পরে। সেই কারণেই আপনাদের ২০-২০-২০ রুলটি মেনে চলতে হবে। কী এই নিয়ম? প্রতি ২০ মিনিট অন্তর ২০ ফুট দূরে তাকিয়ে থাকতে হবে ২০ সেকেন্ডের জন্য। এমনটা করলে চোখের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পাবে। সেই সঙ্গে দৃষ্টিশক্তিরও উন্নতি ঘটবে।
ভাল ভাবে হাত ধুতে ভুলবেন না যেন:
ক্লাস রুমে অনেকের ব্যবহৃত চেয়ার, টেবিল এবং ডাস্টার ব্যবহারের কারণে হাতে জীবাণুর মাত্রা স্বাভাবিকভাবেই বাড়তে থাকে। ফলে খাওয়ার সময় বা ক্লাস শেষ করার পর যদি ভাল করে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে না নেন, তাহলে সেই জীবাণু হাত মারফত মুখে, তারপর শরীরে অন্দরে প্রবেশ করতে একেবারেই সময় নেয় না। আর আজকাল যেভাবে এইচ১ এন১ ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে, তাতে অতিরিক্ত সাবধান হওয়ার প্রয়োজন বেড়েছে।
নিজেকে ভুলে যাবেন না:
পড়ানোর ব্যস্ততায় যদি নিজেকে ভুলে যান, তাহলে কিন্তু বিপদ! কারণ জানবেন, শরীর শুধু ক্লান্ত হয় না, অতি ব্যবহারে মস্তিষ্কও কিন্তু ক্লান্ত হয়ে পরে। সে সময় যদি পছন্দের কোনও কাজ না করেন, তাহলে কিন্তু ধীরে ধীরে ব্রেন পাওয়ার কমতে শুরু করে। তাই সময় পেলেই নিজের পছন্দের কোনও কাজে হারিয়ে যান। সময় কাটান পরিবারের সঙ্গে। প্রয়োজনে প্রতিদিন কিছুটা সময় প্রাণায়মও করতে পারেন। এমনটা করলে দেখবেন শরীর এবং মনের ক্লান্তি দূর হবে। সেই সঙ্গে ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেসার এবং অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়ার মতো সমস্যাও দূরে থাকবে।