Just In
- 15 hrs ago এপ্রিল মাসে ৪ গ্রহের স্থান পরিবর্তন, রাজযোগ ও সৌভাগ্যে ফুলে ফেঁপে উঠবে এই রাশির জাতকরা, দেখুন
- 16 hrs ago আপনার কি ক্রমাগত কান চুলকাচ্ছেন? অজান্তেই ডেকে আনচ্ছেন বড় বিপদ
- 19 hrs ago মসুর ডাল খেতে ভালোবাসেন? কিন্তু অতিরিক্ত খেলে হতে পারে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া!
- 21 hrs ago অনলাইন গেমে বাচ্চারা ঘরকুঁনো! জানেন কি স্বাস্থ্যের জন্য় কতটা উপকারি আউটডোর গেম?
দিনের মধ্যে ২ ঘন্টা চুপ থাকতেই হবে! না হলে কিন্তু...!
প্রতিদিন ২ ঘন্টা নিরিবিলি পরিবেশে মুখ কুলুপ এঁটে কাটালে মস্তিষ্ক ধীরে ধীরে নিজের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার সুযোগ পায়। ফলে স্ট্রেস লেভেল কমতে শুরু করে।
খেয়াল করে দেখবেন আজকাল আর কেউ মোবাইল ফোন সুইচ অফ করে না। টানা ২৪ ঘন্টা অন! মাঝে যখন আয়ু ফুরিয়ে আসে, তখন শুধু এনার্জি ডিঙ্কের মতো চার্জারের মুখটা মোবাইলে শরীরে ঢুকিয়ে দেয়। কয়েক মিনিটের বিরতি। তারপর আবার শুরু হয় যন্ত্র দুনিয়ায় লাফালাফি! এই কারণেই তো স্মার্ট ফানগুলোও কথায় কথায় হ্যাং হয়ে। কেন হবে নাই বা বলুন! যন্ত্র হলেও তো আরাম দরকার পরে। কিন্তু সেই আরাম যে এখন হারামে পরিণত হয়েছে। তাই অগত্য ফোনের "সুইচ অফ" বাটানের প্রয়োজন ফুরিয়েছে।
মজার বিষয় হল একই হাল আমাদের মস্তিষ্কেরও। সারা দিন-রাত এটা নয় ওঠা, কাজে-অকাজে যেন সদা ব্যস্ত। ফলে আরামের সময় নেই। তাই তো মাঝে মধ্যেই ব্রেন যাচ্ছে হ্যাং হয়ে, সঙ্গে কমছে ব্রেন পাওয়ারও। একথাই প্রমাণিত করেছে সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণায়। তাতে গবেষকরা উল্লেখ করেছেন, গত কয়েক শতাব্দিতে মানুষের গড় বুদ্ধি চোখে পরার মতো কমেছে। আর এর পিছনে মূল কারণ হল মস্তিষ্কের অতি সক্রিয়তা।
এখন প্রশ্ন একটাই। আপনি কি বোকা হয়েই থাকতে চান, নাকি বাকিদের তুলনায় ব্রেন পাওয়ার কিছুটা বাড়িয়ে জীবনের প্রতিটি রেসে ফার্স্ট হতে চান? যদি সফল হওয়ার একান্তই ইচ্ছা থাকে তাহলে দিনে কম করে ২ ঘন্টা চুপ থাকুন। তাহলেই দেখবেন কেল্লাফতে! প্রসঙ্গত, একেবারে শান্ত জায়গায়, যেখানে কোনও আওয়াজ নেই, সেখানে এই ২ ঘন্টার মৌনব্রত পালন করলে দেখবেন কতটা উপকার পান!
আসলে অতিরিক্ত আওয়াজ, সেই সঙ্গে অনবরত কথা বলে যাওয়ার কারণে আমাদের মস্তিষ্কে মারাত্মক চাপ পরে। ফলে ধীরে ধীরে ব্রেন সেলের ক্ষয় ঘটতে থাকে। এমনটা হওয়ার কারণে প্রথম দিকে মনোযোগ কমে যাওয়া এবং স্ট্রেস বাড়তে থাকার মতো সমস্যাগুলি হয়ে থাকে। আর পরের দিকে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা একেবারে কমে যায়।
এক্ষেত্রে ২ ঘন্টার এই মৌনতা কতটা উপকারে লাগতে পারে জানেন। এমনটা করলে...
১. মন ও মস্তিষ্কে শান্তি ফিরে আসে:
প্রতিদিন ২ ঘন্টা নিরিবিলি পরিবেশে মুখ কুলুপ এঁটে কাটালে মস্তিষ্ক ধীরে ধীরে নিজের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার সুযোগ পায়। ফলে স্ট্রেস লেভেল কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে শরীরও হারিয়ে যাওয়া শক্তি ফিরে পায়। ফলে মস্তিষ্ক এবং শরীর, উভয়ই চাঙ্গা হয়ে ওঠে।
২. ব্রন সেলের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়:
সভ্য সমাজের ব্যস্ততা থেকে নিজেকে কিছুটা সময় সরিয়ে আনলে হাঁপিয়ে যাওয়া মস্তিষ্কের একটু আরাম মেলে। সেই সঙ্গে ব্রেন নিজের একাধিক ক্ষতকে সারিয়ে তোলার সুযোগ পায়। ফলে ব্রেন সেল তরতাজা হয়ে উঠে পুনরায় কাজে লেগে পরার জন্য তৈরি হয়ে যায়। প্রসঙ্গত, মস্তিষ্ক নিজের ক্ষত সারানোর যত সুযোগ পায়, তত ব্রেন পাওয়ার বাড়ে। বাড়ে শরীরের সচলতাও। এবার নিশ্চয় বুঝতে পরেছেন চুপ থাকাটা শরীরের জন্য কতটা জরুরি।
৩. পঞ্চইন্দ্রিয়ের ক্ষমতা বাড়ে:
শব্দের দুনিয়াকে পিছনে ফেলে কিছুটা সময় শান্তভাবে কাটালে আমাদের আশেপাশের জগৎ সম্পর্কে সচেতনতা আনেক বেড়ে যায়। খেয়াল করে দেখবেন চুপ করে বসে থাকার সময় কত ধরনের শব্দ আমাদের কানে আসতে থাকে, যা আর পাঁচটা কাজ করার সময় কান পর্যন্ত পৌঁছায়ই না। প্রকৃতির এই সুক্ষ চলন অনুভব করতে করতে একটা সময় পাঁচটা ইন্দ্রিয় এতটাই শক্তিশালী হয়ে যায় যে কোনও কিছুই আমাদের নজর এড়িয়ে যেতে পারে না। সহজ কথায় নিঃশব্দতা মস্তিষ্কের ক্ষমতা মারাতত্মক বাড়িয়ে দেয়।
৪. মনোযোগ বৃদ্ধি পায়:
প্রাণায়ম করলে কী হয়? যোগ গুরুরা বলে মনোযোগ বাড়ে। কীভাবে? আসলে সে সময় মস্তিষ্ক আবার দ্রুত গতিতে কাজ করতে শুরু করে দেয়। যে কারণে মনোযোগ বাড়ে। যদি বলি নিঃশব্দতারও একই ক্ষমতা আছে। তাহলে কী বলবেন? মানে! একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ঘন্টা দুই চুপচাপ থাকলে মস্তিষ্ক, এক স্মৃতি থেকে আরেক স্মৃতিতে লাফাতে যখন ক্লান্ত হয়ে যায়, তখন নিজে থেকেই সবশক্তিতে একটা বিন্দুতে এনে ফেলে। ফলে মনোযোগ লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে স্মৃতিশক্তিরও উন্নতি ঘটে। তবে ভাববেন না, একদিন চুপ থাকলেই এমন সুফল পাওয়া সম্ভব। এটা একটা লম্বা জার্নি। শুরু তো করুন। দেখবেন একদিন ঠিক লক্ষে পৌঁছে গেছেন।
৫. সততা বৃদ্ধি পায়:
শুনতে একটি আজব লাগছে, তাই তো! কিন্তু বাস্তবিকই কিন্তু এমনটা হয়ে থাকে। একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে টানা কিছুটা সময় চুপচাপ বসে থাকলে নানা ধরনের চিন্তা মাথায় আসতে থাকে। তার মধ্যে নিজের ভাল এবং খারাপ কাজ সম্পর্কিত চিন্তাও থাকে। ফলে চুপ থাকাকীন কী কী ভুল আমরা করেছি সে সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা হয়ে যায়। আর একবার নিজের ভুলটা ধরতে পারলে মানুষ আর খারাপ দিকে যায় না, ফিরে যায় আলোর দিকে!
৬. দৌড়াতে দৌড়াতে একটি দাঁড়াতে হয় বন্ধু!
অফিস-বাড়ি, মাঝে পরিবারের হাজারো ঝামেলা। একটু...একটু শান্তি পাই কোথায়! এমন ভবনায় জর্জরিত মানুষের সংখ্যা নেহাতিই কম নয়। তাই তো বলি বন্ধুরা, অনেক তো হল লড়াই। এবার রণক্লান্ত মস্তিষ্কটাকে না হয় একটু আরাম দেওয়া যাক! দৌড়াতে দৌড়াতে হাঁপিয়ে পরেন না আপনারা? আমি তো পরি। তাই এই ২ ঘন্টা আমার। আমার মস্তিষ্কের এবং আমার জীবনের। এবার থেকে নিজের জন্য এমন একটু সময় বার করে নিন। দেখবেন শুধু কর্মক্ষেত্র নয়, জীবনের প্রতিটা লড়াইয়ের শেষে বিজয় পতাকা আপনার হাতেই থাকবে।